বইয়ের নাম: আদর্শ হিন্দু হোটেল

লেখক: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় 

প্রকাশকাল: ১৯৪০

 

রিভিউ

কলকাতার এক ভাতের হোটেলের রাধুনী হাজারী ঠাকুর সে খুব ভালো রান্না করে তার হাতের রান্না খেয়ে সবাই মুগ্ধ কিন্তু পদ্মঝি কিছুতেই তা স্বীকার করবে না সে সারাক্ষণ হাজারী ঠাকুর এর ভুল খুঁজতে ব্যস্ত 

হাজারী ঠাকুর এর গ্রামের মেয়ে কুসুম তার বিয়ে হয়েছে এই শহরেই একদিন কুসুমের সাথে হাজারী ঠাকুর এর দেখা সেই থেকে হাজারী তার নিজের খাবার এর অংশ  লুকিয়ে কুসুম কে দিতে আসতো কুসুম কে সে খুবই স্নেহ করতো কুসুম বিধবা, তিন সন্তান আর শাশুড়ি নিয়ে বাস করে সে গোয়ালার মেয়ে তাই সে দুধ বিক্রি করতো

কুসুম হাজারী কে বাবা বলে জ্ঞান করে হাজারীও কুসুম কে মেয়ে মনে করে 

এভাবেই চলছিলো একদিন পদ্মঝি হাজারীকে খাবার চুরির অপবাদ দেয় এতে হাজারীর খুব মন খারাপ হয় 

হাজারীর খুব স্বপ্ন সে একটা হিন্দু ভাতের হোটেল খুলবে এতদিনে সে হোটেলের বাজার করা, কিভাবে পরিচালনা করতে হয় তা সব শিখে গেছে কিন্তু তার সমস্যা হলো তার কোনো পুঁজি নেই  তার বেতন মাত্র সাত টাকা মাসেসে তার স্বপ্নের কথা কুসুম কে বলে কুসুম তাকে তার হাতের সোনার বালা দিতে চায় কিন্তু হাজারী না করে বলে পরে নিবে 

একবার পদ্মঝির চক্রান্তে সময় মতো খাবারের অর্ডার প্রস্তুত করে দিতে না পারায় পদ্মঝি তাকে সম্পূর্ণ খাবারের বিল দিতে বলে এতে হাজারী অনেক কষ্ট পায় সে লুচি যা ছিলো সব নিয়ে বেরিয়ে পরে কিছু লুচি কুসুম কে দেয় তারপর সে রাতের ট্রেনে গ্রামে চলে যায় যেখানে তার স্ত্রী সন্তান রা আছে তার মেয়ে টেঁপি তাকে জোর করে অতসীদের বাড়ি তে নিয়ে যায়

অতসী বড় ঘরের মেয়ে তার বাবার অনেক সম্পদ সম্প্রতি তার ভাই মারা যাওয়ায় বাবা খুব হতাশায় ভুগছেন হাজারী ঠিক করে অতসীর বাবার কাছে টাকা চাইবে হোটেল খুলার জন্য এবং সে কথাটা বলেও অতসীর বাবা বলে যে সাহায্য করবে 

তারপর আবার সে হোটেলে ফিরে যায় পদ্মঝি হোটেলের সকল থালাবাসন চুরি করে দোষ দেয় হাজারী ঠাকুর আর মতি চাকর এর  ওপর। আর হাজারী কে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়

প্রমাণ না পেয়ে পুলিশ হাজারী কে ছেড়েদেয় 

সে ঠিক করে অন্য কোথাও চলে যাবে কাজ খুঁজতে সেখানে  কিছু ব্যবসায়ীর সঙ্গে তার দেখা হয় তাদের রাধুনী হয়ে এক মেলায় যায় সেখানে নিজেও কিছু বিক্রি করে লাভবান হয় তারপর পথ চলতে চলতে এক বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হয় একটা বৌ তাকে খুব খাতির যত্ন করে তার পিসির বাড়ি হাজারীদের গ্রামে বৌটি হাজারীর স্বপ্নের কথা শুনে টাকা সুদে দিতে চায় হাজারী বলে দরকার পড়লে নিবে আরো পথ চলার পর এক কাপড় ব্যবসায়ীর বাড়িতে রাধুনি হিসেবে চাকরী নেয় কিছুদিন থাকার পর আবার ঘুরে ফিরে সেই তার আগের হোটেলে আসে হোটেল এর মালিক আবার তাকে কাজে নিতে চায় হাজারী বুঝে সে আসলে হোটেলেই কাজ করতে চায় কারো বাড়িতে না তারপর সে হোটেলেই আবার কাজ করা শুরু করে যদিও পদ্মঝি তাকে বারবার অপমান করে এমন একবার অপমানিত হয়ে সে অতসী আর কুসুম এর টাকায় নিজের হোটেল খুলবে বলে ঠিক করে 

হোটেলের নাম দেয়আদর্শ হিন্দু হোটেল  ক্যাশিয়ার নিয়োগ করে তার আগের হোটেলের বংশী ঠাকুর এর ভাগিনা কে যাকে হাজারী আগে থেকেই  তার মেয়ে টেঁপির সাথে বিয়ে দেবে ভেবে এসেছিলো 

হাজারীর হোটেল উত্তরোত্তর সাফল্য পেতে থাকে তার রান্নার গুণে, সততায় মানুষ তার হোটেলে খেতে আসতো হোটেলের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে একসময় রেল স্টেশনে সে হোটেল খোলার অনুমতি পায় এদিকে টেঁপিকেও পছন্দ মতো সেই ক্যাশিয়ার ছেলেটির কাছে বিয়ে দেয় টেঁপির বিয়ের দাওয়াতে অতসীর বৈধব্য দেখে হাজারীর কষ্ট হয়

অবশেষে হাজারী ঠাকুর মুম্বাই তে খুব ভালো একটা চাকরী পায় 

নিজের গুণে, কর্মদক্ষতায়, সততায় হাজারী সাফল্য লাভ করে এভাবেই শেষ হয় হাজারী ঠাকুর এর শিকড় থেকে শেখরে উঠার গল্প। 

 

Nishat Jahan Haque 

Intern, Content Writing Department

YSSE