যুগ যুগ ধরে সৌন্দর্য ও আভিজাত্যে প্রসাধনীর ব্যবহার হয়ে আসছে। আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। মাথার চুল থেকে পায়ের নখ, কোন কিছুই যেন বাদ যায় না প্রযুক্তির নিত্য নতুন ছোঁয়ায়। তাইতো প্রাকৃতিক প্রসাধনীর পাশাপাশি কৃত্রিম সাজসজ্জায় নিজেকে আকর্ষনীয় করে তুলতে ব্যস্ত সব বয়সী নারী পুরুষ। তেমনি একটি কৃত্রিম প্রযুক্তি হলো কন্টাক্ট লেন্স। চোখের সৌন্দর্য বর্ধনে আজকাল কৃত্রিম এই অনুষঙ্গটির ব্যবহার দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এর ব্যবহারের পাশাপাশি হয়েছে বহুমাত্রিক ক্ষতিকর দিক।
চলুন তবে জেনে নেয়া যাক কন্টাক্ট লেন্সের ব্যবহার ও সতর্কতা সম্পর্কে।
কন্টাক্ট লেন্স :
কন্টাক্ট লেন্স মূলত কৃত্রিম ভাবে তৈরি এক ধরনের স্বচ্ছ লেন্স। যেটি চোখের মনি উপর সহজেই আটকে থাকতে পারে । এ ধরণের কৃত্রিম লেন্স সাধারণ হাইড্রোজেল, সিলিকন হাইড্রোজেল এবং হাইপারজেল দিয়ে তৈরি এক প্রকার নমনীয় পদার্থ। এগুলো শতভাগ ডিসপোজাবল। চোখের আকার, আকৃতি গঠন ও বৈশিষ্ট্য ও রং অনুযায়ী লেন্সগুলোর ভিন্নতা দেখা যায়। ।
কন্টাক্ট লেন্সের ব্যবহার
এবার আসি বর্তমান প্রেক্ষাপটে এর ব্যবহার সম্পর্কে।
চোখ একটি অতি সংবেদনশীল ইন্দ্রীয়। সৌন্দর্য কিংবা চোখের সমস্যা, লেন্স পরার প্রবনতা বেড়েই চলেছে। তবে হাল ফ্যাশনের উঠতি বয়সী তরুণদের থেকে একধাপ এগিয়ে আছে তরুনীরা। বিয়ে, পার্টি, রিসেপশন, কিংবা ফটোশুটে, চোখের একটা আলাদা মোহনীয় ভাব আনতে এটি বেশ জনপ্রিয়। পোশাকের সাথে মানানসই নানা রংবেরঙের লেন্সের ব্যবহার আজকাল চোখে পরার মতো । বর্তমানে নামি দামি ব্রান্ডের পাশাপাশি সস্তা লেন্সে বাজার ছেয়ে গেছে। যা ব্যবহারে স্বাস্থ্যঝুঁকি সর্বাধিক।
এখন আসা যাক কৃত্রিম লেন্স ব্যবহারে ক্ষতিকর দিক গুলো নিয়ে
সঠিক লেন্স বাছাই ও লেন্স স্থাপনের নিয়ম ও পরিচর্যা সম্পর্কে অনেকেরই অজানা। নিম্নমানের সস্তা লেন্স এবং একটানা ব্যবহার, দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার কারণ। ফলে অনেকেই আবার অন্ধত্ব বরণ করে নিচ্ছে। এছাড়াও আরোও যে সকল সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন :
# চোখ লাল হয়ে যাওয়া ফোলে ওঠা ।
#চোখ দিয়ে পানি পড়া ও চুলকানো।
# ইনফেকশন হওয়া।
# চোখে জালা পোড়া ভাব হওয়া ।
# এলার্জির সমস্যা দেখা দেয়া।
# দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাও।
# দীর্ঘমেয়াদী ঘা বা ক্ষত সৃষ্টি হওয়া ।
# চোখে ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা বৃদ্ধি ।
চোখে লেন্স ব্যবহারের পূর্ব ও পরবর্তী সতর্কতা কেমন হওয়া উচিত।
আজকাল প্রায়ই পত্র পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়াগুলোতে এমন অনেক ভুক্তভোগীদের দেখা মেলে। যারা একটানা লেন্স ব্যবহারের ফলে দৃষ্টি শক্তি হারিয়েছেন। তাই অধিকাংশ বিশেষজ্ঞরা চোখের কৃত্রিম লেন্স ব্যবহারে সতর্কতার অবলম্বনে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
তাই লেন্স ব্যবহারে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সতর্কতা হিসেবে যে বিষয়গুলো মনে রাখা জরুরি –
★ অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে লেন্স বাছাই করা।
★ কৃত্রিম লেন্স চোখে পড়ার আগে জীবাণু মুক্ত করে নেয়া। ময়লা হাতে চোখে স্পর্শ না করা।
★ লেন্স ব্যবহারের পর আগুন কিংবা দাহ্য পদার্থ থেকে দূরে থাকা।
★ ৬/৭ ঘন্টার বেশি ব্যবহার না করা।
★ চোখে অস্বস্তিবোধ করলে সাথে সাথে লেন্স খুলে ফেলা।
★ মেকাপ নেওয়ার পূর্বে লেন্স পড়া এবং মেকাপ তোলার আগেই লেন্স খুলে ফেলা।
★ ভালো ব্র্যান্ড এবং মানসম্পন্ন লেন্স ব্যবহার করা।
★ লেন্স পড়ে ঘুমাতে না যাওয়া।
★ এক জনের লেন্স অন্য জন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা।
পরিশেষে, উপরিউক্ত সতর্কতা অবলম্বন করে কন্টাক্ট লেন্সের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অনেকাংশেই রোধ করা যায়। তবে অবশ্যই, চোখে কোন ধরনের লেন্স প্রতিস্থাপনের আগে পেশাদার ও দক্ষ লোকের সহায়তা নেয়া।
Writer
Baitul Hikma.
Intern, Content Writing Department.
YSSE.