ফুলব্রাইট স্কলারশীপ, ১৯৪৬ সাল থেকে চালু হয়ে আসা আমেরিকার সবচেয়ে সম্মানজনক একটি প্রোগ্রাম। এটির নাম ফুলব্রাইট হওয়ার কারণ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জেমস উইলিয়াম ফুলব্রাইট এই স্কলারশিপ প্রোগ্রামটি চালু করেন। তাঁর নামানুসারে এখনো প্রতি বছর সারা বিশ্বজুড়ে এই অত্যন্ত সম্মানজনক বৃত্তিটি প্রদান করা হয়।
ফুলব্রাইট স্কলারশিপের দুটি স্কিম রয়েছে। একটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য আর অপরটি হচ্ছে যারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন তাদের জন্য। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর এই স্কিমের আওতায় শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে পড়ার সুযোগ পেয়ে থাকে।
এই স্কলারশিপ প্রোগ্রামের আওতায় যে সুযোগ সুবিধা সমুহ পাওয়া যাবে:
- টিউশন ফি সহ যাবতীয় একাডেমিক ফি
- আসা যাওয়ার বিমান ভাড়া
- হেলথ ইন্সুরেন্স
- থাকা খাওয়ার খরচসহ অন্যান্য খরচের জন্য মাসিক স্টাইপেন্ড
- ট্রাভেল এলাউয়েন্স
- বই ভাতা
- ব্যাগেজ এলাউয়েন্স
অধ্যায়নের বিষয়সমূহ
এই স্কলারশিপের আওতায় যাওয়া শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রি লাভের সুযোগ পাবে।
সেখানে যে বিষয়ে অধ্যায়ন করা যাবে তা হলো:
- বিজনেস: এমবিএ ইন হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট/ ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস/ অপারেশনাল ম্যানেজমেন্ট/ হেলথ কেয়ার অ্যাডমিনিস্ট্রেশন
- ইকোনমিক্স: ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক্স/ ট্রেড অ্যান্ড ফিনান্স/ ইকোনমিক্স পলিসি/ এনভাইরনমেন্টাল ইকোনমিক্স/ ন্যাচারাল রির্সোসেস ইকনোমিক্স
- এডুকেশন: হায়ার অ্যাডুকেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন/ অ্যাডুকেশন পলিসি, প্ল্যানিং এবং ম্যানেজমেন্ট/ কারিকুলাম অ্যান্ড ইনস্ট্রাকশন্স
- সাইন্স: বায়োলজি/ কেমিস্ট্রি/ ফিজিক্স/ ফার্মাসি
- আরবান প্ল্যানিং: জেনারেল প্ল্যানিং/ল্যান্ড ইউজ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল প্ল্যানিং/ ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেম/ আরবান/ কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট
- এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট
- সাইকোলজি
- সিকিউরিটি স্টাডিজ
- পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন/ পাবলিক পলিসি
- হেলথ অ্যান্ড মেডিক্যাল সাইন্স: মেডিক্যাল সাইন্সেস/ পাবলিক হেলথ
কি কি যোগ্যতা থাকা চাই
যেহেতু ফুলব্রাইট একটি সম্মানজনক স্কলারশিপ, তাই এর জন্য আপনার ভালো একাডেমিক প্রোফাইলের পাশাপাশি নিমোক্ত যোগ্যতা গুলো থাকতে হবে।
- মাস্টার্সের জন্য আবেদন করতে হলে আপনার থাকতে হবে কমপক্ষে ৮ বছরের ব্যাচেলর ডিগ্রি।
- যুক্তরাষ্ট্র থেকে পূর্বে অর্জন করা কোনো ডিগ্রি থাকলে আবেদন করা যাবে না। তবে যাদের বাংলাদেশ থেকে অর্জন করা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে তারা আবেদন করতে পারবেন।
- যে বিষয়ে পড়তে আগ্রহী সেই বিষয়ে কিংবা তার সাথে প্রাসঙ্গিক কোনো বিষয়ে কমপক্ষে ২ বছরের ফুল টাইম কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
- ইংরেজি ভাষায় পারদর্শী হতে হবে।
- স্কলারশিপের জন্য TOEFL (ibt) স্কোর কমপক্ষে ৯০ বা IELTS স্কর নুন্যতম ৭.০ থাকতে হবে।
- আবেদনকারিকে আবেদনের সময় বাংলাদেশে বসবাসকারী নাগরিক হতে হবে।
- আবেদন কালে প্রার্থীর বয়স ২৪ থেকে ৩০ বছর হতে হবে।
- সুস্বাস্থের অধিকারী হতে হবে।
আবেদনের সময়সীমা
ফুলব্রাইট স্কলারশিপ প্রোগ্রামের জন্য সাধারণত এপ্রিল-মে-জুন এই সময়ে আবেদন গ্রহন করা হয়। তবে বিশেষ প্রয়োজনে ঢাকায় অবস্থিত আমেরিকান সেন্টারে যোগাযোগ করার সুযোগ রয়েছে।
ফুলব্রাইট স্কলারশিপে আবেদন প্রক্রিয়া
- এটি একটি সম্পূর্ণ অনলাইন ভিত্তিক আবেদন প্রক্রিয়া তাই একজন আবেদনকারীকে অনলাইলে আবেদন সম্পন্ন করতে হবে।
- প্রথমেই অনলাইন আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে।উচ্চমাধ্যমিকের পর অর্জন করা সকল একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট ও সনদ পত্র জমা দিতে হবে।
- তিনজন সুপারিশকারী তিনটি লেটার অফ রিকোমেন্ডেশন অনলাইনে আপলোড করতে হবে।
- টোফেল/আইইএলটিএস স্কোর জমা দিতে হবে। যদি কারও জিআরই কিংবা জিম্যাট পরীক্ষা আগে থেকেই দেওয়া থাকে তাহলে সেই স্কোর জমা দিতে হবে কেননা এটি যুক্তরাষ্ট্রের স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য আবশ্যক।
যেহেতু ফুলব্রাইট একটি অতি সম্মানীয় স্কলারশিপ প্রোগ্রাম এবং সারা বিশ্বের প্রায় প্রতিটা দেশের যোগ্য নাগরিক এই স্কলারশিপের আওতায় এসে পড়াশুনা করেন তাই এটি বেশ প্রতিদন্ধীতাপূর্ণ। অনেক পরীক্ষা, যাচাই-বাছাই শেষে তবেই একজন প্রার্থীকে নির্বাচিত করা হয়। তাই নিজেকে প্রস্তুত করুন সেভাবেই। আপনার জন্য শুভ কামনা।
আরও পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
লেখিকা,
রুবাইয়া বেগম,
ইন্টার্ন, কন্টেন্ট রাইটিং ডিপার্টমেন্ট
YSSE