বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তকমা বেশ লম্বা সময় ধরে রেখেছিলেন মাইক্রোসফট এর প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। কিন্তু সময় পাল্টেছে, যুগ পাল্টেছে, এসেছে নতুন শীর্ষ ধনী। যার নাম ইলন মাস্ক । যিনি একাধারে স্পেস এক্স, টেসলা, টুইটার সহ বিভিন্ন নামিদামী প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও। 

বিশ্বের সুপরিচিত মহাকাশ সংস্থা নাসার মতোই বড় মহাকাশ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন ইলন মাস্ক। যার নাম স্পেস এক্স। ইলন মাস্কের দূরদর্শী পরিকল্পনা, কৌশল এবং পরিশ্রমের ফলশ্রুতিতে স্পেস এক্স একের পর এক মহাকাশ যান মহাকাশে সফলভাবে উৎক্ষেপণ করতে সক্ষম হয়েছে। এতে সফলভাবে কাজ করছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের অভিজ্ঞ এবং দক্ষ প্রকৌশলীরা। বাংলাদেশীরা ও তার থেকে পিছিয়ে নেই। 

সম্প্রতি সবাইকে চমকে দিয়ে এক বাংলাদেশীকে স্পেস এক্সে নিয়োগ দিয়েছেন ইলোন মাস্ক। ১৪ বছর বয়সী এই বিস্ময় বালকের নাম কাইরান কাজী। তিনি স্পেস এক্সের একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। উল্লেখ্য, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত একজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত। বর্তমানে তিনি সান্তা ক্লারা ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এ অধ্যয়নরত আছেন। গ্রাজুয়েশন শেষে তিনি স্পেস এক্সে যোগদান করবেন

২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়াতে জন্ম নেন কাইরানবাংলাদেশি পিতা-মাতা মুস্তাহিদ এবং জুলিয়া কাজীর ঘরে জন্ম এই বিস্ময় বালকের। কাইরানের মা জুলিয়া চৌধুরী কাজী ওয়াল স্ট্রিটের একজন এক্সিকিউটিভ। তিনি তার ছেলে কাইরানের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো বে এলাকায় থাকেন। কাইরানের বাবা মুস্তাহিদ কাজী মূলত মানিকগঞ্জের বাসিন্দা এবং বর্তমানে একজন প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত। কাইরান বর্তমানে স্পেস এক্সের সবচেয়ে কমবয়সী হিসেবে অত্যাধুনিক স্টারলিংক প্রজেক্টে কাজ করার জন্য উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। 

কাইরানের প্রত্যাশা, মঙ্গল অভিযানে অবদান রাখতে পারবেন। কাইরানের বাবা-মা জানিয়েছেন, ছোট থেকেই বিশ্বের নানা বিষয়ে কৌতূহল ছিল কাইরানের। দু’বছর বয়সের মধ্যেই পুরো বাক্যে কথা বলতে পারত সে। সে যখন থার্ড গ্রেডে পড়ে তখন সে বাড়িতে জানায় স্কুলের পাঠ্যক্রম তার খুব সহজ লাগছে। তারপরই তাকে কমিউনিটি কলেজে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেন তার বাবা-মা। যুক্তরাষ্ট্রে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর স্নাতক শেষ হয় ২২ বা তারও বেশি বয়সে।

কিন্তু অভাবনীয় আইকিউর অধিকারী কাইরান কাজীর ক্ষেত্রে তা কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারেনি। কলেজের অভিজ্ঞতাও কখনও অদ্ভুত লাগেনি তার। কাইরানের বয়স যখন ৯ বছর, তখন আইকিউ পরীক্ষায় দেখা যায়, তার আইকিউ ৯৯.৯ শতাংশেরও বেশি। বিরল মেধাবী এই বালক গত বছর সাইবার ইন্টেলিজেন্সে প্রতিষ্ঠান ব্লাকবার্ড ডট এআইয়ে মেশিন লার্নিং বিষয়ে চার মাস ইন্টার্নশীপ করেছেন। তিনি সেখানে, ‘অ্যানোমালি ডিটেকশন স্ট্যাটিসটিকাল লার্নিং পাইপলাইন’ নকশা করেন। যেটি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন কন্টেন্ট ম্যানিপুলেশনের ঘটনাগুলোকে শনাক্ত করতে সক্ষম।

এরই মধ্যে বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানে যোগদানের চিঠি হাতে পেলেও, কাইরানের এখনো কিছু কিছু বিষয়ে কমতি রয়েছে। যেমন, হাতের লেখা, বানান এবং নোট নেওয়ার মতো কাজগুলো। বিদেশি ভাষা শেখাও তার কাছে একটি চ্যালেঞ্জ। সে তার মা-বাবার কাছ থেকে বাংলা ভাষা এবং শিক্ষক মিস ভিয়েনার নির্দেশনা অনুযায়ী মান্দারিন ভাষা শিখছেন।

অবসর সময়ে ঐতিহাসিক ঘটনা অবলম্বনে তৈরি কম্পিউটার গেম খেলতে ভালবাসেন। বই পড়ার ক্ষেত্রে তিনি কল্পবিজ্ঞানের পোকা। তার প্রিয় লেখক ফিলিপ কে ডিক। সাংবাদিকদের মধ্যে তার প্রিয় অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ মাইকেল লুইস।

প্রফেশনাল মিডিয়া লিংকডইনে তিনি তার অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা এবং দক্ষতার কথা সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন। কিন্তু লিংকডইন এর নিয়মানুসারে তিনি নিদিষ্ট বয়সসীমার নিচে অবস্থান করছেন। সে কারনে তার একাউন্ট আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে লিংকডইন কতৃপক্ষ। তবে ১৬ বছর বয়স হলে তিনি পুনরায় সেটি ফেরত পাবেন বলে জানা গেছে। পরিশেষে বলতে হয় তিনি বাংলাদেশের গর্ব। বাংলাদেশের মানুষ এভাবেই তাদের যোগ্যতা, দক্ষতার বলে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সফলতার শিখরে আরোহন করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। 

 

To read more blogs click here.

Writer,

Maharab Hossain

Intern,  Content Writing Department,

YSSE