আপনি কি অল্প পুঁজি দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চান অথবা ব্যবসায় অল্প পুঁজি দিয়ে অধিক লাভবান হতে চান ? যদি উত্তর হ্যাঁ হয় , তবেই আমার এই ব্লগ টি আপনার জন্য ।
অনেকের মতে বেশি পুঁজি/বিনিয়োগ মানেই বেশী লাভ এবং অল্প পুঁজিতে ব্যবসা সম্ভব নয় । আমার মতে এ ধরণা ভুল । আমার মনে হয় যত বেশি বিনিয়োগ তত বেশি ক্ষতির ও ঝুঁকির সম্ভবনা । একজন নতুন ব্যবসায়ী যদি সল্প বিনিয়োগ এর মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করতে পারে এবং ধৈর্যের সাথে তা চালিয়ে নিতে পারে। তাহলে , একটা সময় ক্ষতির কমিয়ে ছোট ব্যবসা কে বড় ব্যবসায় রূপান্তর করা সম্ভব । যার জন্য প্রয়োজন প্রবল ইচ্ছা শক্তি এবং পরিশ্রম ।
পৃথিবীতে এমন অনেক উদাহরণ আছে যারা অল্প বিনিয়োগ করেই ব্যবসা শুরু করেছেন এবং বর্তমানে তারা পৃথীবির সেরা ধনীদের তালিকায় নাম লেখেছেন। তাদেরই একজন পিটার থেইল। বিখ্যাত অনলাইন আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান PayPal এর পাঁচ প্রতিষ্ঠাতার অন্যতম একজন তিনি। আয়নম্যান খ্যাত ইলন মাস্ক এবং আরও তিনজনের সঙ্গে মিলে ১৯৯৮ সালে পিটার থেইল প্রতিষ্ঠা করেন পে-পাল। অনেকটাই শূন্য অবস্থা থেকে PayPal কে একটি মাল্টি বিলিয়ন ডলার কোম্পানিতে পরিণত করেন তারা। আজ আর তার কথায় নাই আসলাম । মূল কথায় আসি ।
ব্যবসা মানেই ঝুঁকি । তবে এ ঝুঁকি কে অধিক ক্ষতির দিকে অগ্ৰসর হতে দেওয়া যাবে না। সঠিক ব্যবসায়ীক জ্ঞান ও সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই বব্যসায়ীক ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব বলে আমি মনে করি । ব্যবসা ছোট অথবা বড় যাই হোক না কেন প্রথমত একজন সফল ব্যবসায়ী হয়ে উঠতে হলে , আগে থেকে ব্যবসায়ীক সকল খুঁটি নাটি বিষয় গুলো রপ্ত করে নিতে হবে । যেমন :-
১. ব্যবসা কি :- ব্যক্তির মুনাফা অর্জন এর উদ্দেশ্যে দ্রব্য ও সেবার উৎপাদনের মাধ্যমে উপযোগ সৃষ্টি এবং মানুষের বস্তুগত ও অবস্তুগত অভাব পূরণের লক্ষ্যে সেগুলো বণ্টন এবং এর সহায়ক সবরকম বৈধ, ঝুঁকিবহুল ও ধারাবাহিক কার্যকে ব্যবসা বলে।
২. ব্যবসা শুরুর আগে যে ব্যপার গুলো যাচাই করতে হবে :- ব্যবসা শুরু করার আগে দেখতে হবে আপনি ব্যবসা এর ব্যপারে কতটুকু আগ্ৰহী । ঝুঁকি বহন ,ক্ষতি সাধন তাছাড়াও শারিরীক ও মানসিক চাপ নিতে কত টা প্রস্তুত আপনি ? এছাড়াও আপনি আপনার ব্যবসায় সাধারণ কর্মীদের প্রতি সহনশীল হতে পারবেন কিনা ? ব্যবসায়র কাজে সর্বস্তরের লোকেদের সাথে উঠাবসা করতে কতটুকু প্রস্তুত আপনি ? ইত্যাদি । এ গুনাবলি গুলো যদি আপনার কাছে প্রবহমান থাকে । তবে ব্যবসা এর ব্যপারে অগ্ৰসর হতে পারেন।
৩. বিনিয়োগ এর জন্য অর্থ কিভাবে সংগ্ৰহ করবো :- ব্যবসা শুরুর পূর্ব শর্ত হলো বিনিয়োগ এর জন্য অর্থ সংগ্ৰহ । যা হতে পারে নিজের জমাকৃত অর্থ, ধার অথবা ব্যাংক লোন । আমি যেহেতু ব্লগ এর প্রথমেই বলেছি সল্প পুজির কথা – তাই আমি বলবো ব্যাংক ঋণ কে যত টা সম্ভব এড়িয়ে চলা । কারণ বর্তমান বিশ্বে প্রায় সব ব্যাংক ই সুদের বিপরিতে ঋণ দিয়ে থাকে । যেখানে সুদ এর পরিমান – এক সময় ঋণ করা অর্থের উচ্চে পোচায় । অনেক ক্ষেত্রে ধার এও তাই । এ ক্ষেত্রে যদি নিজের জমানো অর্থ অথবা সুদ বিহিন ধার নেওয়া সম্ভব হয় তবে তা দিয়ে ব্যবসা শুরু করা উচিত। আর যদি সেটা সম্ভব না হয় , অল্প সুদ এ ঋণ দেয় এমন ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান অথবা ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া যুক্তিযুক্ত।
৪. কোন খাত গুলোতে বিনিয়োগ করলে সহজে লাভ উঠে আসবে :- বিনিয়োগ করার পূর্বে দেখতে হবে ঐ সময়ে কোন দ্রব্য গুলোর বাজার চাহিদা বেশি । সেটা হতে পারে স্থান অনুসারে , বার্ষিক অথবা ঋতুবর্তী সময়ে । যেমন : যদি এমন স্থান হয়ে থাকে তা পর্যটন এলাকা । এটা জানি যে আমার সে স্থান গুলোতে ভ্রাম্যমান দোকান গুলো ভালোই চলে। খাবার এর দোকান , পোশাক , জুয়েলারি ইত্যাদি । যে গুলোর খরচ কম পড়ে।
৫. লভ্যাংশের পরবর্তী ব্যবহার কি :- বিনিয়োগ এরপর মাসিক যে লাংভ্যাংশ পাবো , তার কিছু অংশ ব্যক্তিগত খরচ এর জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে । আর কিছুটা অংশ জমা করে রাখা উচিত । এখানে লভ্যাংশ মূল বিনিয়োগ কৃত অর্থের সাথে মিক্স করা যাবে না । পরবর্তিতে জমাকৃত অর্থ বেশি হলে পূণরায় বিনিয়োগ কাজে ব্যবহার করা যাবে।
আশা করছি ব্যবসা এর এই ছোট ও বিশেষ দিক গুলো খেয়াল রেখে ব্যবসা শুরু করলে ব্যবসায় সফল হওয়া সম্ভব ।
এমন আরো ব্লগ পড়তে এখানে ক্লিক করুন ।
লেখিকা
নওরোজ জাহান নাজিয়া
ইন্টার্ন, কন্টেন্ট রাইটিং ডিপার্টমেন্ট
YSSE~2023