সফলতা একটি বিমূর্ত ধারণা। এটি কোন পরিমাপক দিয়ে পরিমাপ করা যায় না বরং সাফল্য লাভের পর মনের মধ্যে যে সুখানুভূতি সৃষ্টি হয় বা আত্মতৃপ্তি অনুভব হয় সেটাই মূলত সফলতার মাপকাঠি। পৃথিবীতে সকল মানুষ চায় তাদের ক্ষুদ্র জীবনে সফলতা নামের সোনার হরিণ ধরা দিক। 

তাই হয়ত সফলতা একেক জনের কাছে একেক রকম। যেমনটা এক জন চোরের কাছে সফলতা মানে অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণের জন্য যথাযথ ভাবে চুরিকার্য সম্পন্ন করা অথবা একজন বেক বেঞ্চারের ক্ষেত্রে সফলতা মানে ক্লাসের প্রথম স্থান অর্জন করা। 

মূলত অধিকাংশ মানুষের মতে বর্তমান অবস্থা থেকে অপেক্ষাকৃত উন্নত অবস্থায় নিজেকে নিয়ে যাওয়াটাই সফলতা। আমরা আমাদের যোগ্যতা, দক্ষতা, মেধা শক্তি ও সামথ্যের কতোটা ব্যবহার করেছি আর তার ফলে কি পেয়েছি সেটাই মূলত সফলতা নির্ধারণ করে । 

সফলতা আপনার দোয়ারে কড়া নাড়বে সে আপনি যে অবস্থানেই থাকুন না কেন। আসুন জেনে নেয়া যাক কি সেসব সূত্র যা পৃথিবীর সকল সফল মানুষের সাফল্যের গোপন রহস্য। 

সফলতা ৭ সূত্র 

  •  লক্ষ্য নিদিষ্টকরণ:

আমরা সকলেই জানি, লক্ষ্যহীন জীবন মাঝি বিহীন নৌকার মতো। কেবলই নিরন্তর ছুটে চলা কিন্তু উদ্দেশ্যহীন অনিশ্চিত জীবন। ছাত্র জীবন থেকে একটা লক্ষ্য স্থীর করুন। আজকাল প্রায় দেখা যায় সন্তানের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হয় বাবা-মার ইচ্ছার উপর। তবে এক্ষেত্রে পিতামাতার উচিত সন্তানের ইচ্ছার প্রতি যত্নবান হওয়া কেননা সবার রুচিবোধ আলাদা। সুতরাং লক্ষ্য স্থীর করা সাফল্য লাভের প্রথম পর্যায় বলা যায়। 

  •  অদম্য মনোবল:

জীবনে কঠিন পরিস্থিতিতে লড়াই করে যাওয়ার মানসিকতা খুব কম মানুষের থাকে। আর যারা এটা করতে পারে কেবলমাত্র তারাই জয়যুক্ত হয়। দৃঢ় মনোবল একটা শক্ত খুঁটির ন্যায় যা আপনার আমার মধ্যে বিরাজ করে। যা আপনাকে শত বন্ধুর পথ পাড়ি দিতে রসদ জোগাবে। কঠিন পথ সহজ করতে হলে অবশ্যই আপনাকে অদম্য মানসিকতা নিয়ে লড়তে হবে।

 

  • কঠোর পরিশ্রম:

আমরা প্রায়ই সবাই যোগ্যতা প্রমান করতে চাই কিন্তু কেন জানিনা পরিশ্রম করার বেলায় সৎ থাকতে পারি না। সৃষ্টিকর্তা সফলতা তাদেরই দিয়ে থাকেন যারা নিজেকে সাহায্য করেন। এটা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফাস্টলেডি মিশেল ওবামা একটি চমৎকার  কথা বলেছেন, 

প্রাপ্তির মধ্যে কোন প্রকার যাদু নেই। যা আছে তা হলো পরিশ্রম, পছন্দ এবং লেগে থাকা “

এতএব, পরিশ্রম সাফল্যের মূলমন্ত্র বলা যায়। 

 

  • সময়ের সদ্ব্যবহার:

ক্ষুদ্র জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো সময়। জীবন থেকে ৫ টি মিনিট চলে যাওয়া মানে অনেক কিছু। সময়ের যথাযথ ব্যবহার তারাই করে যারা নিজের ব্যাপারে আশাবাদী। প্রতিনিয়ত আমরা  অনেক কিছু নষ্ট করে ফলি, অপচয় করে ফেলি তার মধ্যে সবচেয়ে মূল্যবান যা অপচয় করি তা হলো আমাদের সময়। সুতরাং এর প্রতি যত্নবান হই।

  •  ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা:

আমরা অনেকেই মনে করি কোন কাজে ব্যর্থ হলাম মানেই আমার ক্যারিয়ার শেষ। অথচ কখনো কি চিন্তা করেছি ব্যর্থতা মানে সফলতার প্রথম সিঁড়ি। অনবরত ব্যর্থতার  ফলে মানুষের মনোবল তলানিতে পৌঁছে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের উচিত এর কারণ অনুসন্ধান করে এর উপর কাজ করা। সফল মানুষের জীবনে বিশ্লেষণ করলে এরকম হাজারটা নজির দৃশ্যমান। চলুন আশা নিয়ে বাঁচি।

  • কৌশলী হওয়া:

কর্মজীবনে আমাদের কৌশলী হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ কেননা কর্মক্ষেত্র একটি বিশাল জায়গা। যে যত সফল সে তত কৌশলী।

একই কাজ ভিন্ন ভাবে সম্পন্ন করাটা একটা আর্ট। এতে সময় ও শক্তি দুটোই বাঁচে একইসাথে দক্ষতা অর্জিত হয়। ধারাবাহিক ভাবে কাজ  করার  অভ্যাস গড়ে তুলুন।

  • ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি:

সফল হওয়ার পিছনে যেমন অনেক মানুষের অফুরন্ত ভালোবাসা ও সাহায্য রয়েছে তেমনি কিছু নেতিবাচক মন্তব্যও থাকে। তাই নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন। সকল নেতিবাচক সমালোচনা পাশকাটিয়ে যাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা  বুদ্ধিমানের কাজ যা আপনাকে সাফল্য লাভে শক্তি যোগাবে। 

উপরিউক্ত বিষয়গুলো যদি আপনার মধ্যে বিদ্যমান থাকে তাহলে আপনি  সফলতার দারপ্রান্তে কেননা এর কোন সংক্ষিপ্ত পথ নেই প্রয়োগ করার মতো।

পরিশেষে বলতে পারি, আরো একটি বিষয় তা হলো পরিবারে পিতামাতার অনুগত হোন , তাদের প্রতি যত্নবান হোন আর নিজের সুখ সাচ্ছন্দ্য  তাদের নিয়ে উৎযাপন করুন। আর যায় হোক মা-বাবার দোয়া জীবনে চলার পথে আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নিয়ামত।

 

আরো ব্লগ পরতে #এখানে ক্লিক করুন।

 

Writer 

Baitul Hikma 

Intern,content writing Department. 

YSSE.