{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":["local"],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":false,"containsFTESticker":false}

সৃষ্টির আদিযুগ থেকেই মানুষ সৌন্দর্যের পূজারী। পৃথিবীর কৃত্তিম বস্তু থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সব ই মানুষ কে আকৃষ্ট করে এসেছে এবং করছে।তবে প্রকৃতি ই মানুষ কে সবচেয়ে বেশি মোহিত করেছে।কখনো পাহাড়, কখনো সমুদ্র আবার কখনো নানা রকম, নানা রঙের গাছ গাছালি দিয়ে।

পৃথিবীর বস্তুগত মূল্যবান কিছু জিনিসপত্রের মধ্যে রয়েছে সোনা,রূপা কিংবা হীরা।এসব তাদের উজ্জ্বলতা দ্বারা মানুষ কে আকৃষ্ট করেছে।

কিন্তু পৃথিবী তে এমন একটি আকর্ষণীয় এবং রহস্যজনক গাছ রয়েছে যেটি তার পাতা,আকৃতি কিংবা কোনো ঘ্রাণ দ্বারা নয় বরং রঙ দ্বারা মানুষ কে করেছে মোহিত।এবং এটি হলো ‘লাল চন্দন’ গাছ।

 

লাল চন্দন গাছের পরিচয় এবং উৎপত্তিস্থল :

লাল চন্দন, রক্ত চন্দন নামেও পরিচিত। আবার উইকিপিডিয়ায় এই  লাল চন্দন কে বলা হয়েছে রঞ্জনা’ নামে। রক্ত চন্দনের বৈজ্ঞানিক নাম Adenanthera pavonina।

লাল চন্দন পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান কাঠ এর মধ্যে একটি।

চন্দন সাধারনত  বাংলাদেশ, ভারত সহ ব্রাজিলে উৎপন্ন হলেও সেটি লাল চন্দন নয়।এসব দেশে উৎপন্ন চন্দন সাদা চন্দন বা শ্বেত চন্দন নামে পরিচিত।লাল চন্দন পৃথিবী সব জায়গায় হয় না।এটি মূলত ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ এর চিত্তুর জেলার চেষাচলম জঙ্গলে পাওয়া যায়।

তামিল নাড়ু,কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ এই তিন রাজ্যের সীমান্ত ঘিরে এই জঙ্গল।

সাদা বা শ্বেত চন্দনের সুন্দর ঘ্রাণ থাকলেওলাল চন্দনের কোনো ঘ্রাণ নেই।এটি মুলত লাল রঙের কাঠ।

২০২১ সালে ভারতে মুক্তি পায় পুষ্পা- দি রাইজ’ নামে একটি মুভি।এই মুভিটি তে মূলত লাল চন্দনের পাচার এবং এটি ঘিরে সিন্ডিকেট কে দেখানো হয়েছে।

সিনেমা টি রিলিজ এর পরপর ই মানুষের মনে  লাল চন্দন নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা রকম কৌতূহল। 

 

লাল চন্দনের ব্যবহার: 

লাল চন্দন বা রক্ত চন্দন একটি ঔষধি গাছ হিসেবে পরিচিত থাকলেও এটির রয়েছে নানাবিধ ব্যবহার।

 

  • লাল চন্দন ডায়রিয়া, মূত্র নালীতে সমস্যা,জ্বর,মাথাব্যথা, ফোড়া,দৃষ্টিশক্তি কম, কাশী সমস্যা সমাধান এবং ত্বকের জন্য খুব উপকারি।
  • নারীদের পার্লার কিংবা ঘরোয়া ভাবে ফ্যাসিয়াল এর জন্যে যে লাল চন্দন ব্যবহার করা হয় এটি মূলত লাল চন্দন কাঠের গুড়ো।

এই কাঠের গুড়ো ব্যবহারের ফলে ত্বকে ব্রণ,র‍্যাশ, ইত্যাদি দূর করতে যেমন সাহায্য করে তেমনি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতেও সাহায্য করে।

  • ধারনা করা হয় লাল চন্দন বহু আগে থেকেই সামর্থ্যবান ব্যাক্তিদের ঘরের নারীরদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি তে ব্যবহৃত হতো।
  • এছাড়াও হিন্দুদের পূজায় লাল চন্দন ব্যবহৃত হয়।হিন্দু ধর্মাবলম্বী রা বিশ্বাস করেন ঘরে লাল চন্দন মঙ্গল বয়ে আনে।

হিন্দু ধর্মগ্রন্থ পুরাণ এবং মহাভারতেও লাল চন্দনের কথা বলা হয়েছে।

  • এছাড়াও লাল চন্দন বিভিন্ন আসবাবপত্র, ভাস্কর্য এবং বাদ্যযন্ত্র বানানোর কাজে ও ব্যবহৃত হয়।

হাতের কাজেই লাল চন্দন কে বেশি ব্যবহার করতে দেখা যায়।

 

কেন লাল চন্দন এতো দুর্লভ? 

লাল চন্দন বা রক্ত চন্দন এর দুর্লভতার পিছনে প্রথম কারন হচ্ছে এটি হিম বা ঠান্ডা অঞ্চলে উৎপাদিত হয় না।

মূলত এই গাছের যোগান কম।এটি খুব কম সময়ে বেড়ে উঠতে পারে না। রক্ত চন্দন গাছ বেড়ে উঠতে এবং এর থেকে বীজ বা অন্য গাছ তৈরি ও অনেক সোজা নয়।

একটি পরিপক্ব গাছ বেড়ে উঠতে এক দশকের বেশি সময় লাগে। তাই বাজারে এটির দাম অনেক বেশি।

আন্তর্জাতিক বাজারে এই কাঠের দাম টন প্রতি ৮০ লাখ থেকে ১ কোটিও হয়ে থাকে।

লাল চন্দনের বেশি চাহিদা জাপান এবং চীন দেশে।এছাড়াও জাপান এবং চীনে লাল চন্দনের কাঠ থেকে বানানো হয় বিশেষ বাদ্যযন্ত্র। যেটি হাতে তৈরি করা হয়।এই বাদ্যযন্ত্র এর অনেক মূল্য হয়ে থাকে।

২০০০ সালে ভারত সরকার লাল চন্দন গাছের বিলুপ্ততা বাতিল এর জন্যে এটি কাটা,বিক্রি করা, রপ্তানি করা সহ সকল প্রকার কাজ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এরপর থেকেই শুরু হয় এই গাছ পাচার। এই গাছ গুলো এখনো বেশিরভাগ চীন এবং জাপানে পাচার করা হয়।

তবে ভারত সরকার এই লাল চন্দন গাছের রক্ষার্থে নানা রকম পদক্ষেপ গ্রহন করছে।

গাছের পাচার এতো বেশি যে ২০১৮ সালের একটি বিবৃতি তে দেখা যায় লাল চন্দন বিলুপ্তির পথে এবং এটি শতকরা ৫ ভাগ এর কম অবশিষ্ট রয়েছে।

ভারতের গর্ব এই লাল চন্দন।সরকার নানা রকম পদক্ষেপ গ্রহন করলেও যতক্ষন না মানুষের বিবেক উন্নত হবে ততক্ষন প্রকৃতির এই সম্পদ রক্ষা করা সহজ হবে না।

 

আসুন সচেতন হই,প্রকৃতি বাঁচাই,নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাই।

to read more blogs,click here

Writer,

Marjahan Akter

Intern,

Content Writing Department (Batch 8)

YSSE