চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে মর্যদাপূর্ণ পুরস্কার বলা হয় একাডেমি অ্যাওয়ার্ড কে। যা সাধারণ মানুষের কাছে অস্কার পুরস্কার নামে বেশি পরিচিত। সারা বিশ্বের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে এই সম্মানজনক পুরস্কারটি। প্রতিবছর হাজার হাজার দেশি -বিদেশি চলচ্চিত্র অস্কারের জন্য আবেদন করে থাকে। সেখান থেকে কয়েক ধাপ যাচাই-বাছাই করে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে  চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয়। 

৯৫ তম আসর

 এবার ১৩ই মার্চ ২০২৩ সালে অস্কারের ৯৫ তম জমকালো  আসর বসেছিল লস অ্যাঞ্জেলসের ডালবি থিয়েটার। এই দিনে বিদেশি ভাষা ছবি ক্যাটাগরিতে সেরা ডকুমেন্টারির পরস্কার জিতে নেয় ভারতীয় স্বল্পদৈর্ঘ্যের প্রামাণ্যচিত্র ” দ্য এলিফ্যান্ট হুইসপারার্স।  

তাহলে চলুন বিস্তারিত  জেনে নেয়া যাক এই প্রামাণ্যচিত্র সম্পর্কে –

এক নজরে “দ্য  এলিফ্যান্ট হুইসপারার্স

“দ্য এলিফ্যান্ট  হুইসপারার “ ২০২৩ সালে অস্কারজয়ী একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের সিনেমা।   

ধরণ: ডকুমেন্টারি ফিল্ম। 

পরিচালক : কার্তিক গন্জালভেস। 

প্রযোজক : গুনীত মোঙ্গা। 

ভাষা : তামিল 

দৈর্ঘ্য : ৪০ মিনিট। 

প্রধান চরিত্র : বোম্মান ও বেইলি,রঘু ও আম্মু (হাতি)। 

নেটফ্লিক্সে মুক্তি পায় : ৮ ডিসেম্বর ২০২২।

 

এবার আলোচনা করা যাক ডকুমেন্টারির পটভূমি নিয়ে। 

৪০ মিনিটের সাউথ ইন্ডিয়ান এই প্রামাণ্যচিত্রে উঠে আসে মানুষ ও একটি পশুর মধ্যে  আত্মিক বন্দন, ভাবের আদান – প্রদান ও জঙ্গলের প্রাকৃতিক পরিবেশ ।

এর চিত্র ধারণ করা হয়েছে দক্ষিণ ভারতের তামিলনাডু ও কর্ণাটকের বর্ডারের পাশে মুডু মালাই ন্যাশনাল পার্কে। যেটি কিনা এশিয়ার সবচেয়ে পুরনো এলিফ্যান্ট ক্যাম্প।

 এখানেই বাস করে হাতির মাহুত বোম্মান নামের এক লোক ও তার স্ত্রী বেইলি।  তারা মূলত জঙ্গলের পশু পাখির দেখাশোনা করতো। একদিন তাদের কাছে বন বিভাগ থেকে দায়িত্ব আসে একটি অসুস্থ হাতির বাচ্চার দেখাশোনা করার জন্য। হাতির বাচ্চাটি ছিল অনাথ। সেই সাথে তার অবস্থাও ছিল নাজুক। এই দম্পতি হাতির বাচ্চাটিকে পরম মমতায় গ্রহণ করে নেয় এবং তার নাম দেয় রঘু। 

সেই থেকে সেই ছোট্ট রঘু এই বোম্মান ও বেইলির পরিবারে একজন হয়ে যায়। ছবিটি তে ন্যাশনাল পার্কের বন্য পরিবেশ সবার আলাদা নজর কারে। একটা ছোট বাচ্চার মতো মানুষ করতে থাকে। ফলে এই দম্পতির হাসি -কান্না, সুখ, দুঃখ সবই এই হাতিটির বুঝতে অসুবিধা হতো না ।

 

 পাশাপাশি মানুষ ও পশুর মধ্যে একটা গভীর ভাবের আদান-প্রদান তারা উভয়ই বুঝতো। হঠাৎই বন বিভাগ থেকে অন্য হাতির বাচ্চার দেখভালের দায়িত্ব দেয়া হয়। বোম্মান সেটিকেও নিজের সন্তানের মতো করে লালন পালন করতে থাকে। যার নাম দেয়া হয় আম্মু। আশ্চর্যজনক ভাবে রঘু নামের হাতিটিও সেই অনাথ হাতিকে স্বগত জানায়। খুব অল্প দিনে তারাও একে অন্যের ভালো বন্ধু হয়ে যায়। যা হাতির মাহুত বোম্মান ও বেইলি কে অভাগ করে দেয়। পরবর্তীতে তারা এই দুই হাতি বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। খুব জাঁকজমক ভাবে তাদের বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।  যাতে তারা সারা জীবন এক সাথে কাটাতে পারে। 

অতঃপর নানা নাটকীয়তায় এই ডকুমেন্টারিটি শেষ হয়।  এই দুই অনাথ হাতির কল্যাণে বোম্মান ও বেইলি তাদের বাকি জীবন উৎসর্গ করেন। 

সার্থকতা 

স্বল্পদৈর্ঘ্যর ছবি হিসেবে পরিচালক খুবই দক্ষতার সাথে সম্পূর্ণ কাহিনী চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করেন। মানুষের সাহচর্যে যেকোন বন্য পশু তাদের প্রতি মানুষের ভালোবাসা বুঝতে পারে, তা এই প্রামাণ্যচিত্র না দেখলে বুঝা যাবে না। এখন পর্যন্ত এই প্রামাণ্যচিত্রটি দর্শকমহলে ব্যাপক প্রশংসা কুঁড়িয়েছে । ক্যামেরার কাজ, চমৎকার দৃশ্যায়ন ও অনবদ্য অভিনয় শৈলী এই প্রামাণ্যচিত্রটিকে অস্কার পাইয়ে দিতে সহায্য করে।  

 

আরোও ব্লগ পরতে এখানে #ক্লিক করুন। 

 

Writer 

Baitul Hikma.

Intern, Content writing Department. YSSE.