আমরা কম বেশি খবরে শুনে থাকি টেলিভিশনে বা পএ–পএিকায় পড়ে থাকি যে আজকে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা বা ঝড় হতে পারে দুইদিন পর,এরকম হরেক রকম খবর।এই খবর গুলো সাধারণত আবহাওয়া অফিস থেকে খবর চ্যানেলগুলি সংগ্রহ করে থাকে এবং সেই খবর গুলো আমরা জানতে পারি।
কিন্তু আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি যে খবরগুলো কিভাবে আবহাওয়া অফিস পায়?কিভাবে বুঝতে পারে ঝড় হবে না বৃষ্টি, মেঘলা আকাশ নাকি রোদ্রজ্জ্বল আকাশ?
ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনার আগে একটি কথা বলা দরকার যে আমাদের বিভিন্ন নদী নালা থেকে জল বাস্প হয়ে জলকণা আকাশে চলে যায় এবং তা মেঘের আকার ধারণ করে ক্রমান্বয়ে।এই মেঘের সাথেই আবহাওয়া বিষয়টি অধিক মাএায় সম্পৃক্ত।
এখন আবহাওয়া পরিমাপের বিষয়টিতে আলোকপাত করা যাক।
আবহাওয়া অফিস দুইভাবে আবহাওয়া পরিমাপ করে থাকে সাধারণত।
দুইটি পদ্ধতি হলো:
১.রাডার যন্ত্রের সাহায্যে
২.স্যাটেলাইটের সাহায্য নিয়ে
রাডার যন্ত্রের সাহায্যে
রাডার যন্ত্র একটি গোলাকৃতি যন্ত্র। পানির ট্যাঙ্কের মতো কোনো এক দুইতলা মতো ছাদের উপরে থাকে এই যন্ত্র।
রাডার যন্ত্র কাজ করে ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক ওয়েভ বা বাংলায় তড়িৎ চৌম্বকীয় রশ্মির সাহায্যে। রাডার যন্ত্র আকাশের দিকে, মেঘের দিকে এই রশ্মি নির্গত করলে যদি জলকণা অতি মাএায় বেশি থাকে আকাশে তাহলে রশ্মি জলকণার সাথে বাড়ি খেয়ে রাডার ফিরে আসলে বোঝা যায় অতি মাএায় জলকণা বৃষ্টির সম্ভাবরা প্রবলভাবে নির্দেশ করে।
কিন্তু যদি রশ্মি অর্ধ ফিরে আসে বা ফিরে না আসে তাহলে বুঝতে হবে যে আকাশে জলকণার উপস্থিতি কম এবং আকাশ রোদ্রজ্জ্বল বা পরিষ্কার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
আবার রাডার বায়ু চাপ কোথায় কম বা বেশি এটাও বুঝতে পারে,এবং নিম্ন বায়ুচাপ ঝড়ের সম্ভাবনাকে প্রবল মাএায় বাড়িয়ে দেয়।এ থেকে আলোকপাত করা যায় রাডার যন্ত্র কিভাবে আবহাওয়া বিষয়ক তথ্যাদি আবহাওয়া অফিসকে পৌছে দেয়।
স্যাটেলাইটের সাহায্যে
স্যাটেলাইট আরেকটি ভালো মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।পৃথিবীর হাজার হাজার কিলোমিটার উপরে থাকা স্যাটেলাইট ইলেকট্রম্যাগনেটিক রশ্মি নির্গত করে।এই রশ্মি বায়ুমন্ডলের মেঘের সাথে বারি লেগে আলো প্রতিস্মরণ করে।
জলকণায় পূর্ণ মেঘগুলো পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি অবস্থান করে।এবং এগুলো থেকে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল থাকে।আর হালকা মেঘগুলো অনেক উচুতে অবস্থান করে।
স্যাটেলাইট থেকে নির্গত রশ্মি নিচু মেঘ থেকে কম উজ্জ্বল প্রতিবিম্ব পায় ফলে স্যাটেলাইট বুঝতে পারে বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি। অন্যদিকে উচু মেঘগুলো কম উজ্জ্বলতা প্রতিবিম্ব তৈরি করে।ফলে স্যাটেলাইট গুলো বুঝতে পারে পরিষ্কার আকাশের আভাস।
রাডার থেকে স্যাটেলাইট ভালো!!
রাডারের চেয়ে স্যাটেলাইট অনেক ভালো কাজ করে এবং নিঁখুত তথ্য দেয়।তাছাড়া স্যাটেলাইট রাডারের থেকে বড় জায়গানজুড়ে কাজ করতে পারে।অনেক বেশি তথ্য সরবরাহ করে স্যাটেলাইট।তাছাড়া স্যাটেলাইট প্রতিদিনের আবহাওয়া আবহাওয়া অফিসের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যাপী ছড়িয়ে দেয় এবং আমরা সহজেই আবহাওয়ার খবর জানতে পারি।সবমিলিয়ে তথ্যগুলো যা পাওয়া যায়,তাই কাজে লাগিয়ে সুন্দরভাবে খবরে, ইন্টারনেটে উপস্থাপন করে আবহাওয়া অফিস।
এছাড়া দিনের দৈর্ঘ্য সম্পর্কে আন্দাজ করা,রাতের দৈর্ঘ্য সম্পর্কিত বিষয়দি আন্দাজ করাও আবহাওয়া অফিসের কাজের মধ্যে পড়ে।
আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পরিমাপের গুরুত্ব!!
১.ঝড়ের সম্ভাবনা নির্ণয় করে,ঝড় কবলিত এলাকার লোকজনকে নিরাপদ বাসস্থানে সরিয়ে আনা।
২.ঝড় বা বন্যার সম্ভাবনা আন্দাজ করে চাষী বিপদ সময়ের আগেই ফসল তুলতে পারে,এখানে ব্যাপক কাজে লাগে।
৩.বৃষ্টি সম্পর্কে বা ঝড় সম্পর্কে জেনে বিমান আকাশে চালানোর ব্যাপারে পাইলটরা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে বা জাহাজের নাবিক বা ক্যাপ্টেন জাহাজ ছাড়ার সঠিক সময় বিষয়ে আন্দাজ করতে পারে।
তাই বলা যায় আবহাওয়া অফিসের গুরুত্ব আমাদের জীবনে অপরিসীম এবং এটি আমাদের জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থাকে।
আরো ব্লগ পড়ার জন্য ক্লিক করুন এখানে
লেখক,
আমির উদ্দিন আহমেদ
ইন্টার্ন কনটেন্ট রাইটিং ডিপার্টমেন্ট
ওয়াইএসএসই(YSSE)