বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আমানুল্লাহ বাংলাদেশের একজন সত্যিকারের নায়ক যিনি জীবন বাজি রেখে পাকিস্তানি স্বৈরাচারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তিনি জ্ন্মগ্রহন করেছেন ১৯৪৩ সালে (বাংলা ১৩৫০ সনে) যখন কঠিন দুর্ভিক্ষ চলছিলো এই বাংলায়।

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে এদেশের তরুণদের রক্তে যখন ঢাকা মেডিকেল সামনের রাজপথ রঞ্জিত হয়েছিলো তখন আমানুল্লাহ সাহেবের বয়স ছিলো ৯ বছর এবং পিতার কাছে সেই ঘটনা শুনে প্রচন্ড মর্মাহত হয়েছিলেন তিনি। যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিলো তখন তিনি সরকারি তোলারাম কলেজে বি.কম. ফাইনাল পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। নিজ দেশের করুণ পরিস্থিতি তাকে যুদ্ধে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দিয়েছিলো এবং তার ভাষ্যমতে তিনি ১৯৭১ সালের বৈশাখ মাসে ভারত গিয়েছিলেন এবং শ্রাবণ মাসে বাংলাদেশে ফেরত এসেছিলেন।

তিনি যখন ভারতে ছিলেন, তখন তার প্রশিক্ষক ছিলেন মেজর হায়দার এবং খালেদ মোশাররফ। দেশে আসার পর আমানুল্লাহ সাহেবকে রূপগঞ্জ থানায় পোস্টিং দেয়া হয়। সেসময় রূপগঞ্জ থানার কমান্ডার ছিলেন পিনু সাহেব, পিনু সাহেবের অপরিবর্তে আমানুল্লাহ ছিলেন কমান্ডার ইন চার্জ।

YSSE: পাকিস্তান থেকে আমাদের দেশ আলাদা হওয়া কেন প্রয়োজন ছিলো?

পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে বাংলাদেশ হিসেবে স্বাধীন রাষ্ট্র কেন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন ছিলো সেসম্পর্কে জানতে চাইলে আমানুল্লাহ সাহেব বলেন, “পাকিস্তানীরা সবসময় বাঙালিদেরকে দমন করার একটা প্রবণতা নিয়ে দেশ চালাতো। তারা অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক এই সব দিক থেকে এদেশের উপর প্রভাব ফেলার চেষ্টা করতো।”

অর্থনৈতিক দমনঃ কমান্ডার আমানুল্লাহ সাহেবের ভাষ্যমতে, “পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনীতি পুরোপুরি ভঙ্গুর করে রাখার সব ধরনের চেষ্টা পশ্চিমারা করেছে। পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান উৎপাদিত পণ্য ছিলো ‘পাট’। এই পাট খুবই কম দামে পশ্চিম পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা পূর্ব পাকিস্তান থেকে কিনে নিতো এবং বিদেশে সেগুলো অনেক বেশী দামে বিক্রি করতো।

এদিকে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষদের দেশের বাইরের কারো সাথে আমদানি বা রপ্তানি করার অনুমতি ছিলো না। তাই বাধ্য হয়ে মাত্র ১৫-১৮ টাকায় ১ মন পাট পশ্চিম পাকিস্তানীদের কাছে বিক্রি করতো। এছাড়া চাল, ডাল, সহ যা কিছু পূর্ব পাকিস্তানে উৎপাদন হতো, সব পশ্চিম পাকিস্তানীদের কাছে বিক্রি করতে হতো। এদিকে কোন ধরনের মিল-কারখানা করার অনুমতিও পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ছিলো না। সব মিল কারখানা ছিলো পশ্চিম পাকিস্তানের মালিকানায়। তাই পূর্ব পাকিস্তান যা যা কাঁচামাল উৎপাদিত হতো সবকিছু অল্প দামে পশ্চিম পাকিস্তানীদের কাছে বিক্রি করতে হতো। এদিকে এসব মিল কারখানার শ্রমিক ছিলো পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ যাদের চরম মাত্রায় শোষণ করতো পাকিস্তানীরা। তাদের ঠিকমতো বেতন দিতো না, কঠিন পরিশ্রম করাতো। এই শ্রমিকরা পরিশ্রম করতে করতে প্রায় মরেই যেতো।”

রাজনৈতিকঃ রাজনৈতিক শোষন টা কেমন ছিলো সেটা উত্তরে আমানুল্লাহ সাহেব বলেন, ” পশ্চিম পাকিস্তানীরা পূর্ব পাকিস্তানীদের পার্লামেন্টে ভালো পজিশন দিতো না এবং তাদেরকে ছোট করে দেখতো। বাঙালিরা বারবার নির্বাচনে জেতার পরও তাদেরকে সরকার গঠণ করতে দেয়নি। সবশেষে শেখ সাহেব(জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) ৭০ এর(১৯৭০ সালের) নির্বাচনে এতো আসন পেয়ে জেতার পরও তাঁর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনাই। এরপরও কি আমরা ঘরে বসে থাকবো?”

সাংস্কৃতিকঃ পশ্চিম পাকিস্তানীদের সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “পশ্চিম পাকিস্তানীরা তাদের সংস্কৃতি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ভিতরে প্রবেশ করানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। তারা পাকিস্তানি ছেলেদের সাথে বাঙালি মেয়েদের বিয়ের একটা রীতি প্রবর্তনের চেষ্টা করে। এরপর তারা হাত দেয় আমাদের বাংলা ভাষার উপর। উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার সর্বোচ্চ চেষ্টা ওরা করেছে।এছাড়া বাঙালীদের অর্থাৎ যারা বাংলা ভাষায় কথা বলে তাদেরকে সরকারি চাকরি সহ সব জায়গায় নিচু পজিশনে রাখা হয়।”

YSSE: মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হওয়া ও দেশ স্বাধীন হওয়ার ক্ষেত্রে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর অবদান কেমন ছিলো?

জাতি জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর অবদান সম্পর্কে জানতে চাইলে কমান্ডার আমানুল্লাহ সাহেব বলেন, “এদেশের মানুষ তখন ছিলো সব শ্রমিক, মজদুর, চাষা, অশিক্ষিত। দেশে কী হচ্ছে না হচ্ছে সেসব সম্পর্কে এরা কিছুই জানতো না। কেন ওরা কষ্ট করছে, কেন ওরা বেতন কম পাচ্ছে, কেন ওদের পাটের দাম এতো কম পাচ্ছে এসব তারা জানতো না। এই সব সম্পর্কে এই অসহায় মানুষগুলোকে জানিয়েছিলো শেখ সাহেব। এই সকল পেশার মানুষদের একত্রিত করেছিলো শেষ সাহেব। তিনি না থাকলে এই দেশ কোনদিন স্বাধীন হওয়ার স্বপ্ন দেখতো না। ৭ ই মার্চের সেদিনের ভাষণের পরই এদেশের মানুষ স্বাধীন হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলো।”

অপারেশন সার্চলাইটঃ আমানুল্লাহ সাহেবকে ২৫ শে মার্চের কালোরাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, “সেই রাত ছিলো একটা ভয়ংকর রাত, পুরো দেশের বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা গনহত্যা, গণধর্ষণ চালায় সারাদেশে। সেই রাতে হাজার হাজার মানুষ ঢাকা থেকে পায়ে হেটে নিজ নিজ এলাকায় পালায়। পরিস্থিতি টা এমন হয় যে ঢাকার হাসপাতালে যেতে না পেরে আমাদের রূপগঞ্জ (নারায়নগঞ্জের একটা থানা) এর গাউসিয়া থেকে মুড়াপাড়া এই সড়কের মধ্যে অসুস্থ নারীদের বাচ্চা প্রসব পর্যন্ত করা লাগে। এটা দেখার পর নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি। সেদিন মনে হয়েছিলো যে, এই দেশ স্বাধীন না করলে একটা মানুষও বাঁচবে না। তাই সেদিনই ঠিক করেছিলাম যুদ্ধে যাবো”

ভারতে ট্রেইনিং ও দেশে ফিরে এসে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেয়াঃ

ভারতে ট্রেইনিং এর দিনগুলো কেমন গিয়েছিলো জানতে চাইলে তিনি যা বলেন সেটার সারসংক্ষেপ হলো,

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে লাখ লাখ বাঙালি ভারতে পালিয়ে যায়। আমানুল্লাহ সাহেব তাদের সাথে যোগ দিলেন। ভারত সরকার বাঙালিদের থাকার জন্য স্কুল, কলেজ, ডাকঘর, সরকারি ভবন খুলে দেয়। জনাব আমানুল্লাহ মনে করেন, ভারতের সাহায্য ছাড়া এ দেশ স্বাধীন হতে পারত না। আমানুল্লাহ সাহেব আগরতলা কলেজ টিলা হোস্টেলে থাকতেন। তিনি সেখানে সাত দিন অবস্থান করেন এবং তারপর তাকে প্রশিক্ষণে নেওয়া হয়। প্রশিক্ষণে সবাইকে অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এমনকি কোনো কোনো দিন মাত্র ১টা পুরি/সিঙারা খেয়ে সারাদিন থাকতে হতো। প্রশিক্ষণের সময় তাদের পাহাড়ের চূড়ায় থাকতে হতো যেখানে পানি ছিল না। তাই বাঁশের নল দিয়ে নীচ থেকে পাহাড়ে পানি আনতে হতো। প্রশিক্ষণের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং কিছুদিন পর ভারত থেকে তার নামে অস্ত্র পাঠানো হয়।

তার দায়িত্ব ছিল রূপগঞ্জ থানা এলাকায়। সেই সময় পাকিস্তান শান্তি কমিটি (রাজাকার) গঠন করে। রূপগঞ্জের বলাই নগর এলাকায় আবদুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে শান্তি কমিটির সদস্য করা হয়েছিলো। তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য দিতেন। তিনি পাকিস্তানিদের জনাব আমানুল্লাহ সম্পর্কে তথ্য ও দিয়েছিলেন। মুক্তিযোদ্ধারা রূপগঞ্জে প্রবেশ করলে আশেপাশের সব চোর-ডাকাত, দুর্ধর্ষ লোকজন এলাকা ছেড়ে চলে যায়। রূপগঞ্জে বিপজ্জনক ডাকাত ছিল। তার ভয়ে স্থানীয় লোকজন রাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি। ডাকাতি ছাড়াও সে সুন্দরী যুবতী বিশেষ করে হিন্দু যুবতী নারীদের নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করত। রূপগঞ্জে ক্যাম্প করার পর জনাব আমানুল্লাহ ও তার দল প্রথমে ডাকাতটাকে ধরে এবং তাকে হত্যা করে বালু নদীতে ভাসিয়ে দেয়।

YSSE: পাকিস্তানী বাহিনীর সাথে আপনার মুক্তিবাহিনীর কি কোন কোন গেরিলা যুদ্ধ হয়েছিলো?

এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন “এই পুরো এলাকার সুরক্ষা আমি ও আমার দল করেছিলাম ৬/৭ মাস যাবৎ। দুইটা অপারেশন এর কথা আমার মনে আছে যেগুলোর একটি ইসাপুর ও দ্বিতীয়টি এলাই জুট মিলে হয়েছিলো”

ইসাপুরের যুদ্ধঃ ইসাপুরে কী ঘটেছিল জানতে চাইলে আমানুল্লাহ সাহেব বলেন যে, “আমি ও আমার সহযোগী মুক্তিযোদ্ধাদের ইছাপুরে একটি ক্যাম্প ছিল। ঢাকায় পাকিস্তান ক্যাম্পের পাশে আমাদের দুজন গুপ্তচর ছিল। তারা জানায় যে ১৯শে নভেম্বর পাকসেনারা ডেমরা সড়ক দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদী পার হয়ে ইছাপুর আক্রমণ করবে। খবর পেয়ে আমি ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর ডেমড়া এলাকায় যাই। আমাদের পরিকল্পনা ছিলো ইসাপুরে প্রবেশের আগে পাকসেনাদের ওপর গেরিলা হামলা চালানোর। কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে আমাদের সতর্ক অবস্থানেট কথা কীভাবে যেন পৌঁছে গিয়েছিল এবং সেজন্য তারা বাড্ডা সড়কের বালু নদী পার হয়ে ইসাপুর আক্রমণ করে।(বিঃদ্রঃ ডেমড়ার প্রায় উল্টোদিকে বালু নদী, ওইদিক থেকে পাকিস্তানীরা আসার মানে হলো ওরা পিছনের রাস্তা দিয়ে এসেছিলো) পাকবাহিনী ইসাপুর ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে সেখানে সর্বনাশ করতে থাকে। স্থানীয় লোকজন পাকসেনাদের হাত থেকে বাঁচার জন্য এদিক সেদিক ছুটতে থাকে। এ খবর শুনে আমি বাকি মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে দ্রুত ইসাপুরের দিকে রওয়ানা হই। আমাদেরকে মোকাবেলা করার জন্য পাকসেনারা পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল। কিন্তু আমরা তখন তেমন প্রস্তুত ছিলাম না। আমরা ইসাপুর পৌঁছানোরসাথে সাথে পাকসেনারা আমাদের অবস্থান লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে। তাদের থেকে তখন আমাদের দূরত্ব ছিল মাত্র 200 ফুট। একটা গুলি আমার ঠিক মাথার উপর দিয়ে গিয়েছিল এবং আমার চুল ছিঁড়ে গিয়েছিল কিন্তু মাথার চামড়া স্পর্শ করেনি। এরপর আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ওপর প্রচণ্ড আক্রমণ শুরু করে এবং পাকসেনারা তার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে না পেরে পিছু হটতে থাকে। পাকসেনাদের অবস্থানের ঠিক পিছনে ছিল গজারি বন। পাকিস্তানি বাহিনী সেই গজারি বনের মধ্য দিয়ে পালিয়ে যায় এবং পালানোর মুহুর্তে সেসব এলাকায় বহু মানুষকে হত্যা করে”

এলাই জুট মিল: এলাই জুট মিলে কী ঘটেছিলো জানতে চাইলে কমান্ডার আমানুল্লাহ সাহেব বলেন, “তখন যুদ্ধ প্রায় শেষ। ভারতীয় মিত্রবাহিনী তখন সিলেটের রাস্তা দিয়ে নরসিংদীতে প্রবেশ করে। পাকসেনাদের ক্যাম্প ছিল বনিয়াদীর(রূপগঞ্জের একটি গ্রাম) এলাই জুট মিলে। সেখানে তাদের প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র ও অস্ত্র ছিল। “

“১৩ই ডিসেম্বর রাত ১০টায়, পাকবাহিনীর সাথে আলোচনার জন্য মাত্র ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে মিলের ভেতরে প্রবেশ করি। আতঙ্কিত হয়ে আমাদের মধ্য থেকে ২ জন পালিয়ে যায়। তখন মিলের ভেতরে প্রায় ৪০ জন পাকিস্তানি ছিল। তাদের সাথে আলোচনায় বসি এবং তাদের অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করতে বলি। কিন্তু মৃত্যুর বা বেঈমানীর ভয়ে প্রথমে তারা আমার সাথে একমত হতে চায়নি।আমি তাদেরকে আশ্বস্ত করি যে তারা আত্মসমর্পণ করলে তিনি তাদের জীবন আমি রক্ষা করবো। তারা মূলত ভয় পেয়েছিলো যে তারা যদি অস্ত্র সহ আত্মতমর্পন করে তাহলে যদি গ্রামের লোকজন তাদেরকে হত্যা করে।সেজন্য আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে আমি যদি বেঁচে থাকি তাহলে তারা সবাই ও বেঁচে থাকবে। তখন পাকসেনারা রাজি হয় এবং আমাদের হাতে ২৬টি বিশাল আগ্নেয়াস্ত্র হস্তান্তর করে। এরপর আমি তাদেরকে সেই কারখানার ভেতরে তালা দিয়ে রাখি। “

“পরদিন সকালে আশেপাশের এলাকা থেকে লোকজন এলাই জুট মিলের কাছে জড়ো হতে থাকে এবং সবাই কারখানাটির দরজা ভেঙ্গে পাকিস্তানিদের নিয়ে গিয়ে হত্যা করবে সেজন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে। তখন আমি একা ওই লোকদের সামলে পাকসেনাদের রক্ষা করি। তখন মেজর হায়দার সেখানে আসেন এবং তাদের হেফাজতের দায়িত্ব দেন আমার উপর। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তানে বন্দী বাঙালিদের সঙ্গে ওই ৪০ জন পাকসেনা বিনিময় হয়।”

কমান্ডার আমানুল্লাহ পাকিস্তানিদের বর্বরতার আরো একটা প্রমাণ হিসেবে বলেন যে ” পাকিস্তানিরা যখন বুঝতে পারে বাংলাদেশ স্বাধীন হচ্ছে, তখন তারা বাঙালিদের সঙ্গে অনেক জঘন্য ও বর্বর কাজ করেছে, যাতে তারা সোজা হয়ে দাঁড়াতে না পারে। যার অন্যতম একটা হলো ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ডেমরা শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর সঙ্গমস্থলে হাজার হাজার লাশ ভেসে ওঠে। এসব লাশ পচে না যাওয়া পর্যন্ত সেখানে ভেসে থাকে।”

আমাদের “Heroes by our side” ক্যাম্পেইনের  সাফল্যের গল্প এর পরবর্তী ব্লগ পড়তে, YSSE website এবং Facebook blog page এর সাথেই থাকুন। 

 

আমাদের আরো ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন

 

Writer 

Naeem Hasan

Intern

Content Writing Department, YSSE

 

 

Leave a Reply