বর্তমান যুগে গদ বাঁধা পড়াশোনা ছাড়াও, সবার থেকে নিজেকে আলাদা এবং দক্ষতা সম্পন্ন একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সবচেয়ে চমৎকার উপায়টি হচ্ছে গ্রাফিক ডিজাইনিং শেখা। গ্রাফিক ডিজাইনিং মূলত কোন ছবি অথবা টেক্সটের সমন্বয় একটি ভিজুয়াল তৈরি করা কে বোঝানো হয় ।
গ্রাফিক ডিজাইন করার মাধ্যমে আমরা আমাদের সৃজনশীল সত্তাকে জাগিয়ে তুলতে পারি। এছাড়াও এই সৃজনশীলতা কে কাজে লাগিয়ে আমরা আয় উপার্জন ও করতে পারি এবং একটি আলাদা ক্যারিয়ারও গড়ে তুলতে পারি। বর্তমানে তরুণদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং তাদের চাহিদা সম্পন্ন ক্যারিয়ার চয়েস হচ্ছে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং। শুধুমাত্র তরুণরাই নয় বিভিন্ন বয়সের মানুষের মধ্যে রয়েছে গ্রাফিক ডিজাইনিং শেখার তাগিদ।
হোক সেটা কোন পণ্যের মার্কেটিং, কোন ওয়েবসাইটের জন্য অথবা কোন অ্যাপ এর ইউজার ইন্টারফেস তৈরি করার জন্য গ্রাফিক ডিজাইনিং ব্যবহার করা হয়ে থাকে। গ্রাফিক ডিজাইনের মাধ্যমে আপনি সহজেই প্রত্যেকটা কাজে নিজের সৃজনশীল কাজের অবদান রাখতে পারবেন।
গ্রাফিক ডিজাইনে নিজের ক্যারিয়ার করা নিয়ে ভাবার আগে বেশ কিছু জিনিস আমাদের অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে, যাতে আমরা একটি সফল ক্যারিয়ার গড়তে পারি।
শখের বশে গ্রাফিক ডিজাইনে ক্যারিয়ার গড়ার আগে গ্রাফিক ডিজাইনিং সম্পর্কে মৌলিক ধারণা যেমন, ডিজাইনিং সফটওয়্যার এবং বেশ কিছু জিনিস যেমন কালার থিওরি টাইপোগ্রাফি এবং লেআউট এর মত বিষয়গুলো সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই জানা জরুরি।
কালার থিওরি ব্যবহার করে কিভাবে কোন একটি পণ্যের জন্য রং নির্বাচন করা হবে কোন রঙের সাথে কোন রং ব্যবহার করতে হবে। এছাড়াও রংয়ের সামঞ্জস্যতা রক্ষা করার জন্য কালার থিওরি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কালার থিওরি মেনে গ্রাফিক ডিজাইন করে থাকলে তৈরিকৃত কনটেন্ট দেখতে কেবল সুন্দর-ই হবে না, হবে আকর্ষণীয়।
যেহেতু গ্রাফিক্স ডিজাইন ছবি এবং টেক্সট এর সমন্বয়ে গঠিত, সেহেতু অবশ্যই আমাদের টাইপোগ্রাফি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। কিভাবে কোন ফন্ট ব্যবহার করলে আপনার তৈরিকৃত কন্টেন্ট হবে আরো মার্জিত এবং রুচিশীল হবে তা জানার প্রয়োজন। এর ফলে ক্লাইন্টের কাছে তার গ্রহণ যোগ্যতার হার বৃদ্ধি পাবে বেশ কয়েক গুণ।
একটি গ্রাফিক্স ডিজাইন কনটেন্টের মধ্যে আমাদের অনেক ধরনের এলিমেন্ট বসানোর প্রয়োজন হয়ে থাকে একটি এলিমেন্ট কোন জায়গায় বসালে এবং কিভাবে বসালে সেটি একটি মার্জিত এবং রুচিশীল কনটেন্ট হিসেবে তৈরি হবে তাই বোঝানো হয় লেআউট এর মাধ্যমে। এজন্যই লেআউট সম্পর্কে আমাদের ভালোভাবে ধারণা নেওয়া থাকতে হবে।
আপনার সৃজনশীল কর্ম করতে ভালো লাগে, রং-তুলি-বর্নমালা এসব নিয়ে নতুন নতুন কর্ম সৃষ্টি করতে ভালো লাগে কিন্তু আপনার পূর্ববর্তী কোন হাতে খড়ি নেই তাহলে অবশ্যই গ্রাফিক ডিজাইনিং এর ওপর হাতেখড়ি না থাকলে একটি গ্রাফিক ডিজাইনিং কোর্সে ভর্তি হয়ে প্রশিক্ষণ নিবেন। এর ফলে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এর সাথে জড়িত যে কোন ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করাও আপনার জন্য সবচেয়ে সহজ হয়ে যাবে।
ফটোশপ, ইলাস্ট্রেটর, ইন ডিজাইন, স্কেচ, ফিগমা এগুলো হচ্ছে অতি পরিচিত সফটওয়্যার ডিজাইন সফটওয়্যার। অবশ্যই গ্রাফিক ডিজাইন ডিজাইনিং শিখে ক্যারিয়ার করতে হলে এই ধরনের সফটওয়্যার ডিজাইন টুলের সাথে আমাদের পরিচিত হতে হবে এবং এগুলোর ব্যবহার সঠিকভাবে জানতে হবে। সময়ের সাথে সাথে এসব সফটওয়্যার ব্যবহারে পারদর্শী হতে হবে।
গ্রাফিক ডিজাইনিং এ ক্যারিয়ার গড়তে হলে অবশ্যই আমাদের কাজের স্যাম্পল গড়ে তুলতে হবে। সবচেয়ে সহজ উপায়ে কাজের স্যাম্পল তৈরি করার উপায় হচ্ছে অনেক বেশি প্র্যাকটিস করা। লোগো তৈরি করা, ওয়েবসাইট ডিজাইন ইত্যাদি। বিভিন্ন ধরনের প্রজেক্ট করার মাধ্যমে শুধুমাত্র আপনার দক্ষতাই বৃদ্ধি পাবে না বৃদ্ধি পাবে আপনার পোর্টফোলিও।
গ্রাফিক ডিজাইনের যেকোনো ধরনের জবের ক্ষেত্রে এপ্লাই করার জন্য অবশ্যই আপনার পোর্টফলিও থাকতে হবে। আপনার পোর্টফোলিতে থাকবে হচ্ছে :আপনার কাজের স্যাম্পল যেখানে আপনার গ্রাফিক ডিজাইনের দক্ষতা সম্পর্কে আপনি ভালোভাবে আপনার ক্লায়েন্টদের বোঝাতে পারবেন, দেখাতে পারবেন এবং আপনার দক্ষতা সম্পর্কে তাদের জানাতে পারবেন।
এছাড়াও প্রতিটা জবের ক্ষেত্রে সফল হওয়ার জন্য নেটওয়ার্কিং করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার আশেপাশের অথবা অনলাইনে এমন অনেক আছে যারা শখের বশে কিংবা প্রফেশনাল ভাবে গ্রাফিক ডিজাইনিং করে থাকে। তাদের সাথে নিজেকে যুক্ত করুন তাদের কাজ সম্পর্কে জানুন এবং নিজের কোন প্রশ্ন থাকলে তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করুন। ছোট হোক বড় হোক প্রতিটি কাজে কোন কাজে তুচ্ছ নয়। চেষ্টা করবেন আপনার কাজের এক্সপেরিয়েন্স বাড়ানোর এবং একজন উঠতি সফল গ্রাফিক ডিজাইনের হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা।
কেবলমাত্র চর্চা করার মাধ্যমেই নয়, রাখতে হবে ধৈর্য এবং অধ্যাবসায়। তাহলেই আপনি হতে পারবেন একজন সফল গ্রাফিক ডিজাইনার।
আরও ব্লগ পরতে এখানে ক্লিক করুন
লেখিকা
জান্নাতুল আফিয়া প্রিয়া
ইন্টার্ন, কনটেন্ট রাইটিং বিভাগ
YSSE