part -1
একটা মানুষ ২৪ ঘন্টার মধ্যে মাত্র এক ঘন্টা জেগে থাকে।তাও রাতের ৩ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত।রাত ৩ টার আগে না জেগে এবং রাত ৪ টার পরে না জেগে থাকে।কাটায় কাটায় ৬০ মিনিট।
জি হ্যাঁ এরকম ই একজন ব্যাক্তির বসবাস আলেক্সান্দ্রিয়ায়।তবে তিনি একা নন।পৃথিবী তে এরকম মেডিকেল কন্ডিশন এর রোগী রয়েছে আরো তিন জন।
এদের একজন তাইওয়ানের একটি মেয়ে আরেক জন হচ্ছে আইসল্যান্ড এর একটি ছেলে।
আলেক্সান্দ্রিয়ায় বসবাসরত রোগির ই প্রথম ধরা পড়ে এই রোগ।আর তার নামানুসারেই করা হয় রোগের নাম। ‘হেনরি বিনস’এই রোগ কে বলা হয় হেনরি বিনস রোগ।আর আজকে আমাদের গল্পটাই হচ্ছে হেনরি বিনস রোগ এ আক্রান্ত ‘হেনরি বিনস’ কে নিয়ে।
হেনরি বিনস রক্তে মাংসে অন্য সবার মতই একজন মানুষ।ছত্রিশ বয়সী এক যুবক।হেনরির সাথে তার বাবার খুবই ভালো সম্পর্ক যদিও তারা এক সাথে থাকেন না।তার যখন ৬ বছর বয়স তখন ই তার মা তার রোগ টি সহ্য করতে না পেরে তাদের কে ছেড়ে চলে যায়।
হেনরি ছোটোবেলায় তেইশ ঘন্টা ধরে ঘুমিয়ে যখন রাতে জাগতো সেই এক ঘন্টাতেই তার বাবা তাকে পড়াশুনার সব শেখাতেন।বর্তমানের ডেইলি রুটিনে দেখা যায় হেনরি রাত ৩ টায় উঠেই তার বাবার সাথে কথা বলা সহ খাওয়া,গোসল করা এমন কি ওয়ার্ক আউট এর জন্যেও বের হয়।
একদিন হেনরি যখন ওয়ার্কআউট এর জন্যে বের হয় তখন সে একটি গাড়ি কে দেখতে পায় তার বাসার পাশেই।পরে যখন বাসায় চলে আসে তখন আর সে গাড়িটিকে দেখতে পায় না।কিন্তু একটা আশ্চর্য জনক ব্যাপার ঘটে।হেনরি একটা মেয়ের চিৎকার শুনতে পায়। যখন জানালার পাশে এসে দাঁড়ায় সে দেখতে পায় তার প্রতিবেশির বাড়ি থেকে আমেরিকার ৪৪ তম প্রেসিডেন্ট ‘কনর সুলিভান’ বের হচ্ছে এবং তাদের চোখাচোখি ও হয়।কিন্তু ততক্ষণে ৪ টা বেজে যাওয়ায় হেনরি জানালার পাশেই ঘুমে লুটিয়ে পড়ে।
পরেরদিন আবার রাত ৩ টায় জেগে হেনরি আগের রাতের কথা ভাবতে থাকে।সে ভাবে প্রেসিডেন্ট তার প্রতিবেশী কে খুন করেছে আর এই ব্যাপার টা তার বাবাকে জানানো উচিত।কিন্তু পরেই সে অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে ভেবে আর জানায় না।এরপরে সে যথারীতি ওয়ার্ক আউট করতে বের হলে সে প্রতিবেশীর বাড়িতে ঢুকলে সব ঠিকঠাক দেখতে পায়।
কিন্তু বের হয়ে আসতেই সে দেখতে পায় সেখানে এক সুন্দরি মেয়ের লাশ পড়ে আছে।কিন্তু ততক্ষণে ৩:৫৯ বাজে।হেনরি তড়িঘড়ি করে নিজের ঘুমানোর জন্যে সেখানেই একটা জায়গা খুজে নেয়।
পরেরদিন সে জেগেই সব কিছু খুজতে থাকে মেয়েটার বাসায়।কিন্তু কিছুই সে খুঁজে পায় না।এরপরে সে নিজের বাসায় চলে আসে।সাথে মেয়েটার পোষা বিড়াল টাও আসে।আর হেনরি ওর নাম দেয় ল্যাসি।পরেরদিন হেনরি ঘুম থেকে উঠেই ইন্টারনেট এ দেখতে পায় মেয়েটির মারা যাওয়ার খবর রীতিমত জানাজানি হয়ে গেছে তবে খুনের সাথে জড়িত কাউকে এখনো পাওয়া যায় নি।
হেনরি ভাবে সে একটা অজ্ঞাত ইমেইল পাঠাবে হোয়াইট হাউসে।কিন্তু পরক্ষণেই সে ভাবে তার আগে ঘটনাটা তার বাবাকে জানানো উচিত।এর মধ্যে সে একটা কার্ড দেখতে পায় যেখানে পুলিশ তার সাথে যোগাযোগ করে এবং দেখা করতে আসে।
পুলিশ মেয়েটি হেনরি কে জিজ্ঞাসা করে মেয়েটির ব্যাপারে কিন্তু হেনরি কিছু বলে না।পুলিশ যাওয়ার সময় হেনরির পকেটে ফোন বেজে উঠে।তবে ফোন টা মারা যাওয়া মেয়েটির।সেদিন রাতে মেয়েটির ফোন রেখে আসতে ভুলে যায় হেনরি এরপর পুলিশের কাছে ফোনটির সম্পর্কে মিথ্যা বল্লেও হেনরি ধরা খেয়ে যায় যে এটা হেনরির ফোন না।
পরেরদিন আবার হেনরি ঘুম থেকে উঠে নিজের বোকামির কথা ভাবে এবং ভাবে যে সে ফোন টা পুলিশ কে দিয়ে দিবে।সেদিন রাতে হেনরি বাসায় ফিরে দেখে সেই ডিটেক্টিভ ‘রে’ কে। তার একজন পার্টনার এর সাথে।তারা হেনরির সাথে কথা বলতে চাইলে হেনরি পরের দিন আসতে বলে।
কিন্তু তারা বলে ক্যালি ফ্রেইগ।এইটা শুনে হেনরি অবাক হয়ে যায় এবং এর মধ্যে রে তার পার্টনার সহ বাসায় ঢুকে পড়ে।হেনরি লক্ষ্য করে খুন হওয়া মেয়েটির ফোন তার ল্যাপটপ এর পাশে।সে কোনোভাবে সেটা তার হুডি দিয়ে লুকিয়ে ফেলে।
ক্যালি ফ্রেইগ হচ্ছে খুন হওয়া মেয়েটির নাম।এরপরে আবার তারা হেনরি কে মেয়েটার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে এবং তারা গতকালের ফোনের ঘটনার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে হেনরি তাদের কোনোভাবে প্রমান করিয়ে দেয় সেটা তার এলার্ম বেজেছিলো এবং সে মেয়েটিকে খুন করে নি।
এর পরের রাতে হেনরি গত কয়েক দিনে ঘটে যাওয়া সবকিছু রে এর পার্টনার ক্যাল কে খুলে বলে এবং তারা অবাক হয় প্রেসিডেন্ট এর নাম শুনে।
এক পর্যায়ে হেনরি তার রোগের ব্যাপারে বললে তারা বিশ্বাস না করে হাসাহাসি করতে থাকে।তারা হেনরি কে বলে তারা ডাস্টবিন থেকে ক্যালির ফোন উদ্ধার করেছে এবং হেনরি ক্যালি কে খুন করেছে।এর মধ্যেই হেনরি ঘুমে লুটিয়ে পড়ে। পরের দিন হেনরি নিজেকে হাসপাতালে হাতে হাতকড়া অবস্থায় আবিষ্কার করে এবং তার বাবা সেখানে তার নির্দোষ এর প্রমাণ হিসেবে সেই ফোন টা নিয়ে আসে যেটা হেনরি মেয়েটার বাসা থেকে নিয়েছিলো।
কিন্তু পরক্ষনেই রে বলে উঠে ফোনটি ক্যালি ফ্র্যাগের নয় বরং….
চমৎকার এই থ্রীলার সিরিজ এর বই পড়তে আপনার একটুও বোরিং লাগবে না।
নিক পিরোগের লেখা এবং সালমান হকের অনুবাদ কেও বাহবাহ দিতেই হয়।
এই 3 A.M বইটির বাকি পার্ট গুলো যদি পড়তে চান তাহলে আমাদের জানাতে পারেন।
To read more blogs click here.
Writer,
Marjahan Akter
Intern,Content Writing Department
YSSE