মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, বাংলা সাহিত্যে নতুন বৈপ্লবিক ধারার প্রারম্ভ এর কথা উল্লেখ করলে যে কয়েকজন লেখক এর কথা স্বরণীয় তার মধৌ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন অন্যতম। তার অন্যতম সৃষ্টি পুতুল নাচের ইতিকথা, পদ্মানদীর মাঝি, প্রাগৈতিহাসিক বাংলা সাহিত্য অনন্য সম্পদ। ১৯৩৭ সালে প্রকাশ পায় এই গল্পগ্রন্থ, যা বাংলা সাহিত্য এর এক অন্যতম অলংকরণ। আজ তার ই রচিত প্রাগৈতিহাসিক নিয়ে কিছু কথা বলবো। তো চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।
আচ্ছা প্রাগৈতিহাসিক এই কথাটা শুনলে কি মনে হয় অবশ্যই সেই আদিকাল এর ঐতিহাসিক সৃষ্টি । মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তার রচিত গল্পগ্রন্থ অতীত, আদিম ধ্যানধারণা, আবার কিছু ইতিহাস যেগুলো মানুষ এর মনে রয়েই গিয়েছে এমনই কিছু ছোটগল্প।
প্রাগৈতিহাসিক, চোর, যাত্রা , ফাঁসি এরকম ছোট গল্প এর সমাহার ছিল মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এর প্রাগৈতিহাসিক বই এ। খুবই সহজ সাবলীল ভাষায় গল্পগুলো তুলে ধরা। ঐ যে আগেই বললাম সৃষ্টিলগ্ন থেকে মানুষ এর অভ্যাস, ধ্যান ধারনা এইসব তুলে ধরা হয়েসে তার গল্পে প্রতিটা সৃষ্টি কে দিয়ে।
প্রাগৈতিহাসিক, প্রথম গল্প এ ছিলো এক ভিখু যে নিজের ক্ষুধার তাড়নায় তান অমানবিক আচরণ, ভাবার বিষয়টা কি জানেন এখনো এমন কবিতার আশেপাশে দেখাই যায়। ঐ যে বলেছিলাম না সহজ ভাষায় মানুষ এর আদিকাল এর কৃত্তিকালাপ তুলে ধরেছেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এটাই তার উদাহরণ। এখন প্রশ্ন এইসব অমানবিক আচরণ মানুষ এর মধৌ কি এখন বন্ধ হয়েসে বলে মনে হয় ?
পরবর্তী ছিল চোর, পৃথিবীর সৃষ্টিকাল থেকেই এই অপরাধ গুলো মনে হয় চলেই আসছে। কখনো এটা অভ্যাস এর দোষ আবার বলা যায় পর্যাপ্ত সাহস এর অভাব এ কারোর কারোর তাদের কুচিন্তার প্রতিফলন ঘটে না। তারপর এর গল্প এর নাম যাত্রা , এই যাত্রা আর শেষ হলো না সেই আদিকাল এর কিছু কুৎসিত অন্যায় অত্যাচার এর প্রথা গুলো নিয়ে লেখা।
প্রকৃতি ও ভূমিকম্প খুব সাধারণ ভাষায় অসাধারন কিছু গল্প। এক শিক্ষিত গণপতির মানসিক বিপর্যয় এর স্তরগুলি তুলে ধরা হয়েসে ফাঁসি গল্পে । কি মনে হয় আপনাদের বলুন তো ফাঁসির আসামি এর বিচার হলেও তার ভেতর এর আন্দোলন কে কি থামানো যায়? অন্যভাবে বলতে গেলে তার আত্নপরিশুদ্ধি টা কি সত্যি হয়?
এক বেচারি অন্ধ কে নিয়ে ছিলো অন্ধ গল্প। আহারে ! কিন্তু সেটাকেই হাতিয়ার বানায়ে যেভাবে বেয়াইনের হাঁটুতে আঘাত, বিড়াল তাড়ানোর ছলে মাথায় আঘাত এইসব কিন্তু বেশ লেগেসে, বলুন।
বেকারত্ব এই কথাটা তখন ও ছিলো এখনও আছে আর নির্দ্বিধায় বলা যায় যে ভবিষ্যতেও থাকবে কিন্তু এই গল্পটা পড়ে এখনও ভাবি গল্পটা কিসের গল্প প্রতারণার গল্প না বেকারত্ব এর গল্প? বেকার আর বেকার এর দুর্ভাগ্য হলো এ গল্পের গঠন।
২০০০ টাকাটা কোথায় গেলো? ভাবছেন হঠাৎ কিসের টাকার কথা বলছি? আরে “মাথার রহস্য” গল্পের কথা। এখন ও তো সেই টাকার হদিস মিললো না। প্রচুর মাথা খাটিয়ে এই ২০০০ টাকার খবর বের না করতে পারলেও বই টা ঠিক শেষ করতে পারলাম।
বিভিন্ন আশ্চর্য আর চরিত্র এর মৌলিকতাই মূলত মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় কে আধুনিক ঔপন্যাসিকদের মধ্যে অন্যতম করে রেখেছে। ঠিক যেভাবে এ গল্পগুলোতে খুব সহজ সাবলীল ভাষায় তুলে ধরেছেন অতিত, অভ্যাস আর পাঠক এর মনে প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে এসব অতিত তো এর রীতি পরিবর্তন হলেও মানুষ এর সমসাময়িক আচরন এর বিশেষ কোনো পরিবর্তন হয় নাই। “হয়তো এই চাঁদ আর পৃথিবীর আরো রহস্য রয়েছে” উপন্যাস এর একদম শেষ এই কথাটা বলেছিলেন লেখক। ঠিকই তো, কতোই না রহস্য এখনো লুকিয়ে রয়েছে।
To read more blogs click here.
Writer
Atika Afia Broty
Intern, Content Writing Department
YSSE.