অধিকাংশ মানুষের খাবার হিসেবে নিত্যদিনের সঙ্গী ফাস্টফুড। প্রায় সকলেই পছন্দ করে সুস্বাদু ফাস্টফুড খেতে। বার্গার, পিজ্জা, পোড়া তেলে ভাজা সিঙ্গারা, সমুচা প্রায় সবাই খেতে চাই। তবে এসব খেয়ে আপনি নিজের স্বাস্থ্যর ক্ষতি করছেন না তো? আপনি কী জানেন ফাস্ট ফুড ওজন বৃদ্ধির কারণ? শুধু তাই নয়, এছাড়া ফাস্টফুডের কারণে হতে পারে ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের মতো মারাত্মক রোগ। ফাস্টফুড খেতে মজা লাগলেও এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এবং ফাইবারের ঘাটতি। তো ফাস্টফুডের বদলে আমরা কী খেতে পারি যা আমাদের স্বাস্থ্যর জন্য ক্ষতিকর হবে না? ফাস্টফুডের স্বাস্থ্যকর বিকল্প সম্পর্কে ভাবার পালা আজকেই। চলুন তাহলে জেনে নিই ফাস্টফুডের স্বাস্থ্যকর বিকল্পগুলো সম্পর্কে:

শাকসবজি: শাকসবজি ফাস্টফুডের বিকল্প হতে পারে। আর শাকসবজি প্রাকৃতিক হওয়ায় এতে প্রোটিনের পরিমাণও হয় অধিক। শাকসবজিতে থাকা ভিটামিনসমূহ আমাদের রোগ প্রতিরোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হজম শক্তি বৃদ্ধিতেও শাকসবজির ভূমিকা লক্ষণীয়। এছাড়া শাকসবজি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। শাকসবজিতে চর্বি না থাকায় এটি হার্টের জন্যও উপকারি। সুস্বাস্থ্যে গঠনে শাকসবজির বিকল্প কিছু হতেই পারে না। আপনি ভাবতে পারেন হয়তো শাকসবজি ফাস্টফুডের মতো সুস্বাদু নয়। তবে তাতে কী হয়েছে! শাকসবজিকে সুস্বাদু করে পরিবেশনের উপায়ও রয়েছে। শাকসবজি দিয়ে বানানো সম্ভব ভেজিটেবল সেন্ডিউইচ, শাকসবজির বার্গার, স্প্রাউট সালাদসহ আরো অনেক কিছু। এসকল খাবার পুষ্টিকর তার সাথে সুস্বাদুও বটে।

ফল: ফলে রয়েছে অধিক পরিমাণে ভিটামিন এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট। এছাড়া আম, জাম, কাঁঠাল, খেজুর এসকল ফল খেতেও অনেক সুস্বাদু। ফাস্টফুডের বিকল্প হিসেবে আপনার সঠিক সিদ্ধান্ত ফল খাওয়া হতে পারে। এছাড়া সকল ফলসমূহ খুবই সহজলভ্য।

ডিম দিয়ে পরটা বা ডিম পাউরুটি: অল্প তেলে ভাজা ডিম দিয়ে পরটা কিংবা ডিম দিয়ে পাউরুটি ফাস্টফুডের বিকল্প হতে পারে। কারণ এতে ফ্যাটের পরিমাণ খুবই কম হয়। তবে এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে ডিম যাতে পোড়া তেলে ভাজা না হয় এবং যতটুকু সম্ভব তেল কম ব্যবহার কর।

স্যান্ডউইচ: স্যান্ডউইচ তৈরি হয় পাউরুটি দিয়ে। স্যান্ডউইচের মধ্যে পনির, ডিম বা শাকসবজি দিয়ে তৈরি করা যায় স্বাস্থ্যকর স্যান্ডউইচ। বার্গারের পরিবর্তে ঘরে তৈরি করে এসকল স্যান্ডউইচ খাওয়া যায়।  স্যান্ডউইচ খেতেও অধিক সুস্বাদু। তাই আপনি এটি বাছায় করতেই পারেন।

বাদাম: বাদামে উচ্চ প্রোটিন থাকে। বলা হয়, বাদাম মানুষের বুদ্ধি বাড়াতে সহয়তা করে। এছাড়া বাদাম ক্ষুদা মিটাতেও সাহায্য করে। তাই ফাস্টফুডের বিকল্প হিসেবে বাদাম হতে পারে স্বাস্থ্যকর খাবার।

ওটস: ওটস উচ্চ প্রোটিন এবং ফাইবারযুক্ত। বিশেষ করে যাদের ডায়বেটিসের সমস্যা আছে তাদের জন্য ওটস হতে পারে উপকারি খাদ্য। ওটস হজমকে ধীর করে, ক্ষুদ্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহয়তা করে। এছাড়া এটি কোলেস্টেরল কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ফাস্টফুডের পরিবর্তে ওটস হতে পারে সবথেকে বিকল্প উপায়।

স্যুপ: স্যুপ একটি সুস্বাদু খাবার। এটির বিভিন্ন ফ্লেভার একে করে তুলে আরো সুস্বাদু। রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা যায় ডাক্তাররা বেশিরভাগ স্যুপ খাওয়ার পরামর্শ দেয়। কারণ স্যুপে রয়েছে প্রোটিন। তাই ফাস্টফুডের মতো ক্ষতিকর খাওয়ার না খেয়ে স্যুপ খাওয়া অনেক ভালো।

বাড়িতে বানানো খাবার: আপনি রেস্টুরেন্টের যে খাবারগুলো খান তার বেশিরভাগই অস্বাস্থ্যকর। অধিকাংশ রেস্টুরেন্টে খাবার ভাজা হয় পোড়া তেলে। তাছাড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি করায় খাবারগুলো শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

তাই এই সমস্যা এড়াতে আমরা ঘরের বানানো খাবার খেতে পারি। কারণ ঘরের খাবার সবসময় স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বানানো হয়। ঘরে বানানো খাবারে তেলের পরিমাণও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ফাস্টফুডের পরিবর্তে ঘরের খাবার খাওয়া অবশ্যই উচিত।

আমাদের দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় ফাস্টফুড একটি অংশ বলা চলে। আমরা সবাই রাস্তায় বের হলে রাস্তা থেকে কিছু না কিছু ভাজা পোড়া খেয়ে থাকি। এসব খাদ্য হয়তো খেতে অনেক সুস্বাদু কিন্তু অস্বাস্থ্যকর। তাই ফাস্টফুডের পরিবর্তে অন্যান্য বিকল্প খাদ্য গ্রহণ করে আমাদের খাদ্যভ্যাসে পরিবর্তন আনাটা খুবই জরুরি। এখনই সময় নিজেদের খাদ্য তালিকায় ফাস্টফুডের পরিবর্তে অন্যান্য বিকল্প খাদ্যগুলো রাখা। আমাদের খাদ্যভ্যাসে ছোট পরিবর্তন আমাদের সুস্বাস্থ্য এবং রোগমুক্ত শরীর গঠনে সাহায্য করবে।

এই রকম আরো ব্লগ পড়তে, ক্লিক করুন 

লেখক,

প্রত্যয় কান্তি দাশ,

ইন্টার্ন,

কনটেন্ট রাইটিং ডিপার্টমেন্ট,

YSSE