প্রথমেই জেনে নেয়া যাক মুদ্রারস্ফীতি কি?

একই পরিমান পন্য ক্রয়ে পূর্বের চেয়ে অধিক মূল্য দিতে হলে বা, একই মূল্যে পরিমাণে কম পাওয়া গেলে সেটা মুদ্রাস্ফীতি।
যদি এবং কেবল যদি জনগণের বেতন মূল্যের সাধারণ বৃদ্ধি থেকে পিছিয়ে না থাকে, তখনই মুদ্রাস্ফীতি একটি ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির প্রতীক হিসেবে কাজ করে।

যখন কোন সিস্টেমের মধ্যে পণ্যের তুলনায় মুদ্রার পরিমাণ বেশি হয়ে যায় তখন মুদ্রাস্ফীতি ঘটে।

বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতি, ২০২৪ সালের জুন মাসে ৯.৭২ থেকে জুলাই মাসেই ১১.৬৬ হারে দাঁড়ায়। যা ২০১১ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ। বিবিএসের তথ্য বলছে, বিদায়ী অর্থবছরের শেষ দুই মাসে (মে-জুন) বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি ছিল ভারত ও নেপালের চেয়ে দ্বিগুণ।

এখন আসি, ব্লক চেইন কি?

ব্লকচেইন হল এক ধরনের বিকেন্দ্রীক ডাটাবেস যেটি ব্লকে তথ্য সঞ্চয় করে যা একটি চেইনে একসাথে সংযুক্ত থাকে। ব্লকগুলি ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবহার করে সংযুক্ত থাকে এবং একটি অপরিবর্তনীয় হিসাব তৈরি করে যা নেটওয়ার্কের সম্মতি ছাড়া পরিবর্তন করা অসম্ভব। এটি ব্লকচেইনগুলিকে অপরিবর্তনীয় করে তোলে, বা হস্তক্ষেপ প্রতিরোধ করে এবং তাদের নিরাপদে তথ্য শেয়ার করার এবং লেনদেনের একটি অপরিবর্তনীয় রেকর্ড তৈরি করার ক্ষমতা দেয়।

অর্থাৎ ব্লকচেইন এমন একটি তথ্য ব্যবস্থা যার মধ্যে সম্পূর্ণ নেটওয়ার্কের সম্মতি ছাড়া কোন হস্তক্ষেপ করা সম্ভব নয় ।


বর্তমানে ব্লকচেইনের ব্যবহার বেড়েই চলেছে নতুন নতুন ব্যবহার আবির্ভূত হচ্ছে।যার মধ্যে অন্যতম হলো,


স্মার্ট চুক্তি : এই চুক্তি ব্যবস্থার মধ্যে অটোমেটিক প্রসেসিং ও করা সম্ভব।


আর্থিক বাজার:আর্থিক বাজারের বিভিন্ন হিসাব নাগাদ রাখার জন্য ব্লকচেন ব্যবহার করা হচ্ছে।


শিক্ষা:বিভিন্ন শিক্ষাগত সনদ সমূহ ব্লক চেইন ব্যবহার করে প্রত্যয়ন করা হচ্ছে যাতে করে তা সন্ধান করা সহজ হয়।


বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি: কোন কনটেন্ট বা পণ্যের নির্দিষ্ট ব্যক্তির মালিকানা নিশ্চিত করা এবং একটি ওই পণ্যের সঠিক মূল্য পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্লক চেইন ব্যবহার করা হচ্ছে। যার উদাহরণ হলো NFT.


ডেটা লগ:বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের হিসাব রাখার জন্য ব্লক ব্যবহার করা হচ্ছে।


কম জালিয়াতি,সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন এবং অর্থ পাচার : যেহেতু ব্লক চেইনের প্রতিটি লেনদেনকে অনুসন্ধান করা যায় এবং পেছন-অনুসন্ধান করা যায় তাই এতে জালিয়াতি কম হয় এবং সন্ত্রাসবাদের ক্ষেত্রে অতি সহজেই সন্ত্রাসকে শনাক্ত করা যায়। চাইনালাইসিস এর মতে ব্লক চেইনে ০.১৫% সন্ত্রাসবাদী লেনদেন হয়।


অর্থপ্রদান:অর্থ প্রদান করা সহজতর।

মুদ্রাস্স্ফীতি মোকাবিলায় ব্লক চেইনে কি কি উপায় ব্যবহৃত হয়?

বিকেন্দ্রীকিকরন: ব্লক এর মধ্যে বিকেন্দ্রীকিকরণ করার ফলে কোন নির্দিষ্ট কম্পিউটার বা গোষ্ঠীর মধ্যে সম্পূর্ণ তথ্য না রেখে নেটওয়ার্কের সকল কম্পিউটারের মধ্যে বিতরণ করে ফেলা হয়। এতে করে হস্তক্ষেপ করা বা কোন ক্ষতি সাধন করা কঠিন হয়ে পড়ে।

মুদ্রার সংখ্যা নির্দিষ্ট একটি ব্লগ চেইন এর মধ্যে নির্দিষ্ট সংখ্যক মুদ্রা থাকে। যেমন, বিটকয়েন এর ক্ষেত্রে ২১ মিলিয়ন বিটকয়েন মাইন হওয়ার পরে আর কোন নতুন বিটকয়েন সংযোজন হওয়া সম্ভব নয়। এতে করে সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে মুদ্রাস্ফীতি ঘটা সম্ভব নয়।

নেটওয়ার্কের সম্মতি ছাড়া হস্তক্ষেপ সম্ভব নয়,একটি ব্লক চেইনের বিকেন্দ্রীকৃত সিস্টেম এর মধ্যে কোন পরিবর্তন আনতে হলে সম্পূর্ণ নেটওয়ার্কের সম্মতি প্রয়োজন এ ছাড়া কোন পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়।

মুদ্রা গুলো তৈরি করা অনেক কঠিন, নতুন কোন মুদ্রা তৈরি করে নেটওয়ার্কে সংযোজন করার জন্য একটি কম্পিউটার বা সুপার কম্পিউটারের অত্যাধিক পরিমাণ গণনা এবং শক্তি খরচ করতে হয় যা ব্যাপক হারে করা সম্ভব নয়। যেহেতু মুদ্রা তৈরি করা কঠিন তাই মূল্য কম হওয়ার সম্ভাবনা কম।

সময়ের সাথে সাথে পৃথিবীতে মুদ্রা এবং লেনদেনের বিভিন্ন পরিবর্তন এসেছে বর্তমানেও পরিবর্তন আসছে, ব্লকচেইন শুধুমাত্র শত শতর মধ্যে একটি। এরও কিছু সমস্যা অসুবিধা রয়েছে। ভবিষ্যতে আরো এরকম নতুন নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে।

এমন আরো ব্লগ পড়তে ক্লিক করুন এখানে। 

 

লেখক,

মো: সাখাওয়াত উল্লাহ কৌশিক

Intern,Content Writing Department 

YSSE.