রতন টাটা,  যার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য যেন অসম্ভব কে সম্ভবে রূপান্তর করা।  এই কাজটিই তাকে আনন্দ দেয় সবচেয়ে বেশি । বলছি ভারতের “TATA SONS” এর প্রাক্তন চেয়ারপার্সন রতন টাটার কথা। 

 

ভারতীয় এই শিল্পপতি নিজের পূর্বসূরি জামশেদজি টাটার প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করে উজ্জ্বল করেছেন টাটা গ্রুপের মশাল। এই পথ ধরে এগিয়ে যেতে মেনে চলেছেন নিজের আদর্শকে, যা তাকে নিয়ে গিয়েছে সফলতার অতি নিকটে। 

 

সফল ব্যবসায়ী হিসেবে রতন টাটার আদর্শে রয়েছে বেশকিছু নিয়ম। জেনে নেওয়া যাক সাফল্যের চূড়ায়  পৌঁছাতে কোন ৫টি নিয়মকে নিয়মিত অনুসরণ করেছেন রতন টাটা।

 

১. অসম্ভবকে ‘সম্ভব’ করতে হবে: রতন টাটার বিশ্বাস, যা কিছু জীবনে অর্জন করা উচিত তার কোনোটিই অসম্ভব নয়। তার ভাষ্যমতে, “সাধারণ মানুষ যে কাজকে অসম্ভব বলে মনে করেন, তা করতেই আমি সবচেয়ে বেশি আনন্দ পাই।” 

 

রতন টাটার এ ধরনের মনোভাবই তার সবচেয়ে বড় শক্তি। অসম্ভবকে সম্ভব করার দৃঢ় সংকল্পই তাকে প্রেরণা যুগিয়েছে প্রতিনিয়ত সামনের দিকে এগিয়ে যেতে।

 

২. জোর দিতে হবে টিমওয়ার্কে: “আপনি যদি দ্রুত এগোতে চান, তাহলে একা চলুন। কিন্তু যদি অনেক দূরে যেতে চান, সেক্ষেত্রে একসঙ্গে এগোতে হবে,” রতন টাটার সোজাসাপ্টা মতামত। টিমওয়ার্ককে সব সময়ই গুরুত্বের চোখে দেখে এসেছেন এই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ব্যক্তি। টাটা গ্রুপের দুর্দান্ত সাফল্যের পেছনে সহযোগিতা এবং দলগত কাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

 

৩. সমালোচনাকে বানান শক্তি: সফলতা আর সমালোচনা দুটো একটির পেছনে আরেকটি চলতে থাকা গাড়ির মতো। সফলতা সামনে এগিয়ে চলতে থাকলে পেছন থেকে সমালোচনাও সমান তালে এগিয়ে আসতে থাকে। আর এই সমালোচনাকেই বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলেন রতন টাটা। সবসময় তিনি নিজের লক্ষ্যে অটুট থাকার পক্ষে। তার মতে “মানুষ যদি আপনার দিকে পাথর ছোঁড়ে, তা হলে সেগুলি সংগ্রহ করুন। এবং একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরিতে ব্যবহার করুন।”

 

৪. মৌলিক কাজ সাফল্যের চাবিকাঠি: সাফল্য কী ভাবে মিলবে, তা নিয়ে সকলেই থাকেন দুশ্চিন্তায়। আমরা সকলেই নিজের মতো করে সাফল্যের পথ খুঁজে ফিরি। রতন টাটা বিশ্বাস করেন, সৃজনশীলতাই সাফল্যের চাবিকাঠি। অন্যদের অনুকরণের মাধ্যমে, সাময়িকভাবে সফলতা অর্জন করা সম্ভব । তবে এর মেয়াদ কখনো দীর্ঘস্থায়ী হয় না।” মৌলিকতার মাধ্যমে কাজে নতুনত্ব এবং উৎসাহ দুটিই পাওয়া সম্ভব। 

 

৫. ইতিবাচক মানসিকতা সম্পন্ন হওয়া: এই শিল্পপতির মতে, একজন মানুষের চিন্তাধারা বা মানসিকতা নির্ধারণ করে দেয়, তিনি সাফল্য লাভে কতটুকু এগিয়ে যেতে পারবেন। মানসিকতা যদি ইতিবাচক হয় তাহলে ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তীতে শুধরে নেওয়া যায়। 

 

আবার একজন ব্যক্তির নেতিবাচক মানসিকতা ধ্বংস করতে পারে তার সামনে এগোনোর পথকে। রতন টাটার ইতিবাচক মানসিকতাই তাকে টাটা ন্যানো গাড়ির নিষ্ফলতাকে মেনে নিতে শিখিয়েছে।

 

ভারতে যে সকল শিল্পপতিরা রয়েছেন তাদের সম্পত্তির তুলনায় রতন টাটার সম্পদ অনেক কমই রয়েছে। তবুও তার দীর্ঘ নান্দনিক কর্মজীবনে যেই সকল মাইলফলকগুলো তিনি স্পর্শ করেছেন তা যেকোনো কারো কাছেই ঈর্ষণীয়। রতন টাটার সফলতার এই চাবিকাঠিগুলো প্রত্যেক পেশাদার ব্যাক্তির উচিত গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করে অনুসরণের চেষ্টা করা।

 

আরোও ব্লগ পড়তে এখানে ক্লিক করুন। 

 

Writer

Muhammed Mahadi Hasan 

Intern,

Content Writing Department, YSSE