আপনি কি অবসর সময়ে গুনগুন করে গান গাইতে কিংবা ছবি আঁকতে পছন্দ করেন? এমনই আরো অনেক শখের কথা বলবো যা অবসর সময়ে করতে পারেন।

শখ হল একটি উত্তেজনা বা আগ্রহ যা সাধারণত  অবসর সময়ে আনন্দ এবং সময় কাটানোর জন্য করা হয়ে থাকে।  সাধারণত শখের কোন কাজ কোন লাভ-ক্ষতি বিচার করে  কিংবা কোনো  উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে করা হয় না তবে সেগুলি নিজের আনন্দ, সন্তুষ্ট, এবং অনুভূতি দিয়ে থাকে। 

শখ যেকোনো ধরনের হতে পারে, স্ট্যাম্প সংগ্রহ করা বা বাদ্যযন্ত্র বাজানো থেকে শুরু করে বাগান করা, ছবি আঁকা এমনকি খেলাধুলা পর্যন্ত। এগুলি মানুষকে সৃজনশীলতা প্রকাশ করার, নতুন দক্ষতা শিখতে এবং সমমনা ব্যক্তিদের সাথে সংযুক্ত হওয়ার একটি উপায় প্রদান করে। 

শখ একটি সৃজনশীল সাধনা, এই সাধনাগুলো প্রতেকের জীবনে বড় ভূমিকা রাখে। 

সৃজনশীল সাধনার সুবিধাগুলো হলো: 

  • মানসিক চাপ হ্রাস পায়।
  • সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
  • মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
  • বিষণ্নতা কমায়।
  • নতুন দক্ষতা অর্জন করা যায়।
  • আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।
  • শারীরিক স্বাস্থ্য যেমন খেলাধুলা করা, শারীরিক কার্যকলাপ প্রদান করে, সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।  
  • আত্ম-প্রকাশের অনুমতি দেয় যা আবেগ অনুভূতি প্রকাশের জন্য একটি থেরাপিউটিক আউটলেট হতে পারে। 

সৃজনশীল সাধনাগুলি শেখার প্রতি ভালবাসাকে উৎসাহিত করে, যা আরও পরিপূর্ণ জীবনের দিকে পরিচালিত করে। সামগ্রিকভাবে, শখ এবং সৃজনশীল সাধনা সু-বৃত্তাকার ব্যক্তিগত বিকাশ এবং সুখ প্রচার করে আমাদের জীবনকে সমৃদ্ধ করে।

কিছু শখ এর কথা বলা হলো যা নিজের সৃজনশীল সাধনার জন্য ভূমিকা রাখতে পারে: 

  • অরিগামি : কাগজ ভাঁজ করার শিল্প, কাগজের একটি পাতা থেকে জটিল এবং সুন্দর ডিজাইন তৈরি করা। ইউটিউবে এ ধরনের অনেক ভিডিও পাওয়া যায়। যা অবসর সময়ে করা যায়। এমনকি আপনি নিজেও আপনার বানানো অরিগামি যা হতে পারে ফুল, প্রজাপতি বা ভিন্ন কিছু এসবের টিউটোরিয়াল শেয়ার করতে পারেন।
  • পেইন্টিং বা অঙ্কন : জলরঙ, অ্যাক্রিলিক্স বা পেন্সিল দিয়ে স্কেচিংয়ের মতো বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে পেইন্টিং করে ভিজ্যুয়াল আর্টের মাধ্যমে আপনার সৃজনশীলতা প্রকাশ করতে পারেন। কিংবা চাইলে নিজের ফেসবুক পেজ খুলে সেখানে আপনার পেইন্টিং শেয়ার করতে পারেন।
  • ফটোগ্রাফি : একটি মোবাইল বা ক্যামেরা দিয়ে সুন্দর মুহূর্ত এবং দৃশ্য ক্যাপচার করতে পারেন। পাখি বা প্রকৃতির সৌন্দর্য বা কর্মব্যাস্ত জীবনের দৃশ্য ক্যাপচার করতে পারেন। 
  • জার্নালিং : নিজের চিন্তাভাবনা, অভিজ্ঞতা এবং ধারণাগুলি প্রকাশ করার জন্য একটি ব্যক্তিগত জার্নাল রাখতে পারেন। যা নিজের  মনের মতো করে সাজাতে পারেন। প্রতিদিনের ঘটনা বা ভবিষ্যৎ চিন্তা-ভাবনাও লিখতে পারেন।
  • বই পড়া : মনের প্রশান্তির জন্য অবসর সময়ে বই পড়তে পারেন। গল্পের বই যেমন ফেলুদা, কাকাবাবু, শার্লক হোমস কিংবা নিজের পছন্দের বই। এর মাধ্যমে আপনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে আপনার বই পড়ার অভিজ্ঞতা কিংবা আপনি যে বইগুলো পড়েছেন সেগুলোর রিভিও অন্যদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।
  • লেখালেখি : গল্প, কবিতা বা প্রবন্ধের মতো সৃজনশীল লেখা লিখতে পারেন। লেখালেখি একটি বড় গুণ। প্রতিদিনের ঘটনাকে কিংবা নিজের কাল্পনিক চিন্তা সাজিয়ে লিখতে পারেন।
  • খেলাধুলা : শারীরিক কার্যকলাপ শরীরের পক্ষে ভালো। যা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। নিজের পছন্দের খেলা যেমন ব্যাডমিন্টন, ফুটবল, বাস্কেটবল কিংবা অন্যান্য ইন্ডোর অথবা আউটডোর গেমস বন্ধুদের সাথে খেলতে পারেন।
  • ক্রসওয়ার্ড পাজল এবং সুডোকু : চ্যালেঞ্জিং শব্দ ধাঁধা এবং নম্বর গেমগুলো সময় কাটানোর জন্য উপযুক্ত। এতে করে ব্রেনের ডেভেলপমেন্ট, চিন্তাশক্তি বৃদ্ধি পায়। 
  • নতুন কোন ভাষা শেখা : একটি নতুন ভাষা শিখে বা একটি বিদেশী ভাষায় নিজেকে দক্ষ করতে পারেন। নিজে কিংবা বন্ধুদের সাথে মজার ছলে ভাষা শিখতে পারেন। অথবা বিভিন্ন অ্যাপস যেমন ; Duolingo, Memrise,Udemy কিংবা বিভিন্ন ধরনের ইউটিউব চ্যানেলের সাহায্য নিতে পারেন।
  • ব্লগিং : একটি ব্লগের মাধ্যমে নিজের চিন্তাভাবনা, এবং লেখার দক্ষতা মানুষদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। যা হতে পারে নিজের অভিজ্ঞতা বা মজার কোন কিছু যা মানুষকে সাহায্য করবে।
  • বাদ্যযন্ত্র বাজানো : গিটার, পিয়ানো, বেহালা বা নিজের আগ্রহের অন্য কোনো যন্ত্র বাজানো শিখতে পারেন। 
  • দাবা : কৌশলের একটি খেলা হলো দাবা। নিজের চিন্তাশক্তি বাড়াতে দাবা খেলতে পারেন। 
  • রান্না বা বেকিং : সুস্বাদু খাবার বা পেস্ট্রি তৈরি করা শিখতে পারেন। এই সৃজনশীল সাধনাকে কাজে লাগিয়ে চাইলে অনলাইন ব্যাবসাও করতে পারেন।
  • বাগান করা : গাছপালা, ফুল বা এমনকি একটি উদ্ভিজ্জ বাগানের চাষ এবং যত্ন নিতে পারেন। নিজের ঘরে ছোট বা মাঝারি ইনডোর প্লান্ট রাখতে পারেন যা মনকে সতেজ রাখবে।
  • এমব্রয়ডারি : এমব্রয়ডারি একটি সৃজনশীলতা প্রকাশের মাধ্যম। ব্যক্তিগত উপহার তৈরি করা থেকে বাড়ির সাজসজ্জায় এটি অনন্য স্পর্শ যোগ করে।
  • ভ্রমণ করা : অবসরে নিজের পছন্দের জায়গায় ভ্রমণ করতে পারেন। কিংবা বন্ধুদের নিয়ে টুর দিতে পারেন।

এই শখগুলি নিজের অন্বেষণ বৃদ্ধি করে এবং নিজের  আগ্রহ এবং দক্ষতা বাড়ায়, তাই নিজের পছন্দ অনুসারে যেকোনো শখকে খুঁজে নিতে পারেন৷ 

সৃজনশীল ক্রিয়াকলাপগুলি প্রতিদিনের চাপ থেকে একটি থেরাপিউটিক পরিত্রাণ প্রদান করে। শেষ পর্যন্ত, সৃজনশীল সাধনাগুলি আরও ভারসাম্যপূর্ণ এবং পরিপূর্ণ জীবনে অবদান রাখে, ক্রমাগত আত্ম-উন্নতি এবং আত্ম-প্রকাশকে উদ্দীপিত করার সাথে সাথে মানসিক সুস্থতার প্রচার করে।

আরোও ব্লগ পড়তে এখানে click করুন। 

 

লেখিকা 

তৌহিদা

ইন্টার্ন, কনটেন্ট রাইটিং ডিপার্টমেন্ট

YSSE