“বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি 

চির-কল্যাণকর 

অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।” 

কবি নজরুলের রচিত এই পঙক্তিগুলোর মধ্য দিয়ে বুঝা যায় নারীরা হচ্ছে সমাজের অন্যতম পরাশক্তি।  সুস্থ, সুনির্ভর সমাজ গঠনে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও কাজ করছে। একজন নারীর মনোবলই পারে সমাজকে উত্তরণের পথে এগিয়ে নিতে। 

নিজস্ব স্বাধীনতা, সমান অধিকার, সাহস, সামর্থ্য, সামাজিক কাজে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, আত্মনির্ভরশীলতা তাদের মনোবল বৃদ্ধি করে সামাজিক উন্নতির মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনে অবদান রাখতে পারে।  

একজন নারীর জীবনে নানারকমের প্রতিবন্ধকতা থাকে, এই প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠার জন্য প্রয়োজন সঠিক শিক্ষা, সুযোগ যা নারীদের মনোবল তৈরিতে সাহায্য করবে। 

ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বলেছিলেন, “তোমরা আমাকে শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের শিক্ষিত জাতি উপহার দিব”— কারণ একজন নারীই পারেন সঠিক কর্মদক্ষতা, যত্ন দ্বারা একটি জাতিকে সুদক্ষ এবং সুশীল করে গড়ে তুলতে। 

একটি পরিবারকে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেশ গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। 

বর্তমানে এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে নারীরা কাজ করছে না, ঘর সামলানো থেকে শুরু করে অফিস আদালত থেকে দেশ পরিচালনার মত কঠিন কাজেও নারীরা পিছিয়ে নেই। 

সমাজ, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে নারীদের অবদান রয়েছে। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীতে এসেও আমরা দেখতে পাই কাজের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ বৈষম্য করা হয়। যা একটি দেশের, একটি উন্নত সমাজের অগ্রগতির পথে বাধা হতে পারে। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর মতে , বিশ্বে প্রতি ৫ জন নারীর মধ্য ১ জন নারী মানসিক সমস্যায় ভুগে থাকেন। আবার, পুরুষদের তুলনায় নারীরা মানসিক অবসাদে বেশি ভোগেন৷ 

নারীদের এই মানসিক চাপ তাদের কাজের ক্ষেত্রে অনেক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। কিন্তু  নারীদের মানসিক সমস্যার দিকগুলো  সমাজ এড়িয়ে চলে। তাই সমস্যাগুলো নারীদের কর্মক্ষেত্রে ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে।

বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশে এখনো অমানুষিক নারী নির্যাতনের অনেক ঘটনা দেখতে পাই। নারী হচ্ছে আমাদের মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক। সুতরাং এই অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে অন্ধকারে রেখে সমাজ উন্নয়ন কখনও সম্ভব না। 

নারী দিবস আসলেই আমরা সভা-সমাবেশে,লেখালেখিতে নারী স্বাধীনতার কথা বলে থাকি। কিন্তু তা বাস্তবায়নের জন্য কোনো বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়না।

এই ক্ষেত্রে সমাজ, দেশ এবং সরকারকে এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন হতে হবে। মনে রাখতে হবে, নারীর প্রথম পরিচয় সে একজন মানুষ। 

এরকম আরও ব্লগ পড়তে ক্লিক করুন

লেখিকা 

নুপুর আক্তার 

ইন্টার্ন, কন্টেন্ট রাইটিং ডিপার্টমেন্ট

YSSE