একজন উদ্যমী তরুণ উদ্যোক্তার গল্প, যিনি রঙ আর সৃষ্টিশীলতাকে হাতিয়ার করে গড়ে তুলেছেন “অরুণা”—একটি স্বপ্ন, একটি পরিচয়! তার এই যাত্রা, চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে এগিয়ে যাওয়ার গল্প এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানুন বিস্তারিত!
YSSE: আপনার সম্পর্কে কিছু বলুন।(নাম, পড়াশোনা, বর্তমানে কী করছেন,আপনার বেড়ে ওঠা ইত্যাদি)
Sadia Nusrat Mim: আমি সাদিয়া নুসরাত মিম। বর্তমানে পড়াশুনা করছি হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে, দিনাজুপর। আমার সাবজেক্ট হলো B.Sc. in Food & Process Engineering. আমার জন্মস্থান জামালপুর , তবে আমি বড় হয়েছি চট্টগ্রাম এ। বর্তমানে ফ্যামিলিসহ ঢাকায় থাকি।
YSSE: আপনার “অরুণা” পেজ সম্পর্কে কিছু বলুন। যেমন- অরুণা নাম দেয়ার কারণ কী? এবং কী বিষয় নিয়ে কাজ করেন?
Sadia Nusrat Mim:আমার ফেইসবুক পেজ এর নাম হলো অরুণা। আমি সাধারণত ক্রাফটিং এর বিষয় নিয়ে কাজ করে থাকি। যেমন এখানে বিভিন্ন হ্যান্ডিক্রাফট এর জিনিসপত্র আমি তৈরি করে থাকি। টোট ব্যাগ পেইন্টিং করা , ড্রেস পেইন্টিং, জুয়েলারি বানানোসহ অন্যান্য পেইন্টিং এর কাজ করে থাকি আমি সাধরণত। আমার প্রধান কাজ হচ্ছে জুয়েলারি বানানো। কাঠের গয়না,কাপড়ের গয়না, এন্টিক, মেটাল এই ধরনের গয়নাগুলো আমি তৈরি করে থাকি। সাধারণ একটা কাঠকে রঙের মাধ্যমে বিভিন্ন নকশায় ফুটিয়ে তুলি কিংবা কাপড় দিয়ে চুড়ি থেকে শুরু করে রিং,গলার নেকপিস আরও অন্যান্য গয়না বানিয়ে থাকি। স্বল্প মূল্যের এসব নান্দনিক পণ্যগুলো গ্রাহকদের কাছে বেশ গ্রহণযোগ্য এবং পছন্দের। অরুণা শব্দটি দিয়ে সাধারণত ভোরবেলা বুঝায় বা উদীয়মান সূর্যের রং বর্ণনা করে। আমার কাজে রং জিনিসটাই প্রাধান্য পেয়ে থাকে বেশি। তাই আমি যখন আমার পেজ এর জন্য কিছু ইউনিক নাম খুজছিলাম, তখন আমার কাছে অরুণা নামটাই বেস্ট মনে হয়েছিলো।
YSSE: আপনি “অরুণা” শুরু করেছিলেন কবে? আপনার এই উদ্যোগে আসার মূল কারণ কী ছিল? কীভাবে এই উদ্যোগটি দাঁড় করালেন বা পেছনের গল্পটা যদি বলেন ?
Sadia Nusrat Mim: আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার এক দুই মাস পরেই করোনা মহামারী শুরু হয়। আর এই মহামারী প্রায় দুই বছর এর মত ছিল। ওই সময় অনেকেই কিছু না কিছু করছিলো। তখন আমার মাথায় আইডিয়া আসে সময়টা নষ্ট না করে যদি নতুন কিছু করা যায়। তখন বিভিন্ন জায়গা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে, ইন্টারেন্টের সহয়তায়,আমার পেইন্টিং এবং নিজের কিছু আইডিয়ার সংমিশ্রণে আমি নতুন কিছু ভাবি যেন আমার আমার কাজগুলো মানুষের সামনে প্রেজেন্ট করতে পারি সাথে সময়টাও দারুন কাটে।যদিও আমার এই কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না । অনলাইনের একটি পেইজ থেকে প্রথম ম্যাটারিয়ালস কিনে অল্প পরিসরে কাজ করা শুরু করি এবং মানুষ থেকে অনেক ভালো রেস্পন্স পাই। এভাবেই আমি অল্প অল্প করে আমি আমার উদ্যোগটা তা বড় করি।
YSSE: “অরুণা” ছাড়াও আপনি কি অন্য কোনো উদ্যোগের সাথে যুক্ত আছেন?
Sadia Nusrat Mim: করোনার সময় আমি অরুণার পাশাপাশি একুরিয়াম ফিশ কিপিং করতাম । বিভিন্ন প্রজাতির ফিশ ব্রিডিং করতাম এবং সেগুলো সেল করেছি। এইটাও আমার শখের কাজ ছিল অরুণার পাশাপাশি। কিন্তু বর্তমানে বাসার বাইরে থাকা,একাডেমিক প্রেশারে ওই জায়গায় আমি আর সেভাবে সময় দিতে পারি না। তাই বর্তমানে আমি শুধু অরুণার সাথেই সংযুক্ত আছি।
YSSE: কোন কোন দক্ষতা অর্জন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ আপনার কাজটিতে?
Sadia Nusrat Mim: আমার কাজ তো হ্যান্ডক্রাফট রিলেটেড। এইখানে হাতের কাজের সমস্ত জিনিস আমরা তৈরি করে থাকি, যেমন পেইন্টিং থেকে শুরু করে সেলাইয়ের কাজগুলোও আমরা করে থাকি। সেক্ষেত্রে সবার আগে আমাদের পেইন্টিং সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। পেইন্টিং কিভাবে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করে রাখা যায় সে জিনিসটাও অবশ্যই জানা থাকা দরকার। পণ্য এবং সেবা সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা প্রয়োজন । এর পাশাপাশি ফেইসবুক পেজ চালানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। সঠিক ভাবে পণ্যের বিবরণ দেয়া এবং পণ্যের ফটোগ্রাফি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। পেজ এর নিজস্ব লোগো থাকাটাও জরুরি যেন অন্য কেউ আমাদের পণ্য নিজেদের প্রমোশন এর জন্য ব্যবহার করতে না পারে।
YSSE: আপনার অনুপ্রেরণা কারা বা কী ছিল?
Sadia Nusrat Mim: করোনার সময় বেশিরভাগ সময়ই ফোন স্ক্রল করা হতো, তখন আমি এই ধরনের কাজ সম্পর্কে দেখি। এই হ্যান্ডিক্রাফট এর বিষয়গুলা বাংলাদেশে তখনও এতোটা জনপ্রিয় ছিল না কিন্তু ভারতে এইটা বেশ জনপ্রিয়।তখন মাথায় আসলো আমাদের দেশেও এটা কি করে জনপ্রিয় করা যায়। আর ছোট থেকেই কোনো জিনিস কিভাবে তৈরি হয় সেটা নিয়ে অনেক আগ্রহ কাজ করতো আমার।অনলাইন প্লাটফর্ম থেকেই আমি মূলত আমার অনুপ্রেরণাটা পাই। আবার ওই সময় দেখি যে আমাদের দেশেও অনেকেই এই কাজ শুরু করেছে।সবার কাজ গুলো দেখে এবং নিজের ধারণা থেকে আমি অনুপ্রেরণা পাই। এর পাশাপাশি আমার ফ্যামিলি এবং ফ্রেন্ডরাও এই ব্যাপারে অনেক হেল্পফুল ছিলেন। তাদের সাপোর্ট পেয়েই আমি আমার কাজটা শুরু করি।
সাক্ষাৎকারের ২য় পর্বে আমাদের অতিথির বাকি গল্প সম্পর্কে জানতে পারবেন। এবং আরো কিছু প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে অতিথির অভিজ্ঞতা সম্পর্কে এবং তার কাজ জানতে পারবেন। পরবর্তী পর্ব মিস করবেন না।
ধন্যবাদ সবাইকে।
ফেসবুকপেজ: https://www.facebook.com/profile.php?id=100063747153171
To read more blogs like this, Click here
Writer
Samsul Alam Roni
Intern, Content Writing Department,
YSSE