ফ্লোরিডার এক অন্ধকার জঙ্গলের গভীরে, একটি পরিত্যক্ত বাড়ি আছে, যেটা কিনা একসময় অ্যাসাইলাম ছিলো । স্থানীয়রা বিশ্বাস করে যে এটি অভিশপ্ত, এখানে আগে যারা থাকতো তাদেরকে অতৃপ্ত আত্মারা মেরে ফেলেছে। কেউ এই ঘরের কাছে যাওয়ার সাহস করে না কারণ এর ভিতর থেকে আসে চিৎকার, আর কান্নার আওয়াজ। 

এক অমবস্যা রাতে, একদল দুঃসাহসী কিশোর-কিশোরী এখানে আসবে বলে ঠিক করে। এলাকাবাসীর না করা সত্ত্বেও সকলের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা সেই রহস্যময় বাড়িতে প্রবেশ করে। এরা হলো নোয়াহ, সাহসী এবং কৌতূহলী একজন। সেই দলের নেতৃত্ব দেয়। সাথে তার প্রেমিকা এলি এবং তাদের বন্ধু সারা এবং অ্যালেক্স।

তারা বাড়ির কাছাকাছি আসার সাথে সাথেই একটি অস্বস্তিকর শীতল বাতাস তাদের আঁকড়ে ধরে। একটা জং ধরা লোহার গেট খুলে গেল এবং তাদের মনে হয় কেউ একজন তাদেরকে ভিতরে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। 

একসময়ের বিশাল বাড়িটি এখন ক্ষয় হয়ে জনজীর্ণ অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নোয়াহর বন্ধুরা ভয় পেতে শুরু করে, কিন্তু তাদের কৌতূহল তাদের এগিয়ে যেতে বাধ্য করে। তারা বাড়িতে প্রবেশ করার সাথে সাথেই কেমন যেনো আশেপাশের বাতাস ঘন হয়ে উঠল। 

তাদের পদধ্বনি ধ্বনিত হল জনশূন্য করিডরে। ভাঙা আসবাবপত্র এবং ভাঙা কাঁচ মেঝেতে আবর্জনা এসবকিছু ফ্ল্যাশলাইটের আবছা আলোতে দেখা যায়। প্রতিটি পদক্ষেপে তাদের মনের কৌতূহল আরো দ্বিগুণ হতে লাগলো। হঠাৎ একটি ঘরে দেখতে পেল নানান ধরনের চিকিৎসার সরঞ্জাম আর দেয়ালে নানান বিকৃতির চিহ্ন। 

সারা তার হাত দিয়ে ওগুলোকে ধরে ধরে দেখতে থাকে। হঠাৎ তার কাঁধে একটি স্পর্শ অনুভব করার সাথে সাথ এলি চিৎকার করে ওঠে। তখনই আশেপাশে ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালিয়ে অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই দেখতে পায় না।

রুম থেকে বের হয়ে তারা কাউকে খুঁজে পাচ্ছে না। সবকিছু যেন গোলকধাঁধায় পরিণত হয়েছে।  তাদের মনে আতঙ্ক দানা বাঁধে, এবং তারা তাদের ফিরে যাওয়ার পথ খুঁজে বের করার জন্য পাগলপ্রায় হয়ে যায়। এলি কান্না শুরু করল। এর মধ্যেই আরেকটি রুমে শুধুমাত্র মৃত মানুষের হাড়গোড় পড়ে ছিলো। আশেপাশে আবছা মৃত-মানুষের চেহারাগুলি দেখে আর অদৃশ্য হয়ে যায়। 

এলির বুক ধড়ফড় করে, যেন একটা অদৃশ্য শক্তি তার পাজড়ে টান দিচ্ছে। এলির বন্ধুরা তাকে ডেকে যাচ্ছে, কিন্তু সে তার কানে শুনতে পায় ভুতুড়ে ফিসফিস। সবাই আতঙ্কিত হয়ে কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছেনা।

এসবের মধ্যে, তারা একটি জীর্ণ সিঁড়িতে হোঁচট খেয়ে নিচের দিকে পড়ে যায়। নিচে একদম অন্ধকার, বাতাস আরো ঠাণ্ডা এবং আশেপাশের দুর্গন্ধ আরো তীব্র হয়ে দাঁড়ায়। হঠাৎ এক অদ্ভুত শব্দে এলেক্স দেয়ালের ফ্লাশ লাইট জ্বালাতে ছায়ামূর্তি দেয়ালের মতো দেখা গেল। এটি অশুভ রূপ ধারণ করেছে। 

মিছরি ঘরটিতে তারা এসাইলামের পুরনো অনেক সরঞ্জাম আবিষ্কার করে। সাথে দেয়ালে চুরানো ছিল একটি বড় ছবি। ছবিতে এসাইলামের কর্মীদের চিত্রিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ডাঃ ন্যাথানিয়েল উইন্টার্স নামে একজন ব্যক্তি ছিলেন, যিনি রোগীদের উপর নিষ্ঠুর পরীক্ষা চালিয়েছিলেন বলে গুজব ছিল।

হঠাৎ একটি ছবিতে তাদের চোখ পরে এবং সাথে সাথে বাতাস আরো ঘন হয়ে উঠে। ডঃ উইন্টারস এর ছবি তার চোখ এবং তার বাঁকানো হাসিতে তাদের মেরুদণ্ডে কাঁপুনি দিয়ে ওঠে। তারা  পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু আত্মা কাছাকাছি আসার সাথে সাথে একটি অদৃশ্য শক্তি তাদের আটকে রাখে।

এলি এর খপ্পর থেকে মুক্ত হওয়ার উপায় খুঁজছে। এসে ছবি এনে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলল এবং সাথে সাথে ভুতের এসব কান্ড বন্ধ হয়ে গেল। ওই সময় তারা ছিঁড়ে দে উপরে উঠতে তাদের সব গোলকধাধা বন্ধ হয়ে যায়। এবং গেটের বাইরে ফিরে চলে যায়।

যে অভিশাপটি বাড়িটিকে ধরে রেখেছিল এখন তা ভেঙে গেছে, তারা আর কখনও ফিরে না আসার শপথ নিয়ে বন থেকে পালিয়ে গেছে। তবুও, তাদের মনের গভীরে, এই রাতে যে ভয়াবহতা অনুভব করে তা কখনই ভোলার মতো না।

 

আরো ব্লগ পরতে লিংকে ক্লিক করুন-

 

মারিয়া আফসা

ইন্টার্ন,

কন্টেন্ট রাইটিং ডিপার্টমেন্ট 

YSSE