স্কুল-কলেজের গন্ডি পেরিয়ে যখন একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখে তখন তার শুধু একাডেমিক জ্ঞান অর্জন করাই যথেষ্ট নয়, এর পাশাপাশি আরো নানা দক্ষতা অর্জন করা অত্যাবশ্যক। বর্তমান প্রতিযোগিতার এই যুগে আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শিখতে হবে ও জানতে হবে। জানার মাধ্যমেই শেখার আগ্রহ তৈরি হবে। একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি দক্ষতা আপনি করায়ত্ত করতে পারলে আপনি তুলনামূলকভাবে অন্যদের তুলনায় এগিয়ে থাকবেন। নিচে এরকম ৫টি দক্ষতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:

১। কম্পিউটার দক্ষতা

প্রযুক্তিনির্ভর এই যুগে কম্পিউটার ছাড়া যেনো চলেই না। কম্পিউটারের বেসিক স্কিলগুলো জানা থাকলে আপনি সহজেই প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করতে পারবেন পাশাপাশি চাকরির বাজারেও আপনাকে এগিয়ে রাখবে। ওয়ার্ড,এক্সেল,পাওয়ারপয়েন্টের কাজগুলো শিখে রাখতে পারেন। এছাড়াও  গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ শিখতে পারলে আপনি বিভিন্নভাবে উপকৃত হতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি ইনকামও করতে পারবেন।

২। ইংরেজিতে কথা বলা

আমরা অনেকেই অনেক সুন্দর করে ইংরেজিতে অনেক লিখতে পারি কিন্তু কথা বলার সময় দেখা যায় দুই লাইন বলার পরেই থেমে যাই। আপনাকে এই দুর্বলতাকে কাটিয়ে উঠতে হবে। ইংরেজি ভাষা শেখা ও জানার মাধ্যমে আপনি বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে সক্ষম হবেন। চাকরি কিংবা বাইরের দেশে যেতে আপনাকে ইংরেজিতে দক্ষ হতে হবে। আপনি এই দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে প্রতিদিন ২০মিনিট আয়নার সামনে গিয়ে আপনার ইচ্ছে মতো ইংরেজিতে কথা বলতে থাকুন। প্রথম দিকে জড়তা থাকবে তারপর৷ আস্তে আস্তে জড়তা কেটে যাবে। একটা সময় পর আপনি অনেক সহজভাবেই ইংরেজিতে কথা বলতে পারবেন। মনে রাখতে হবে প্রতিদিন খুব কম সময়ের জন্য হলেও আপনাকে প্রাকটিস করে যেতে হবে। এছাড়াও আপনি ইংরেজি পত্রিকাগুলো জোরে জোরে পড়তে পারেন এতেও অনেকটা জড়তা কাটবে একইসাথে আপনার ইংরেজি ভোকাব্যুলারি জ্ঞান সমৃদ্ধ হবে। আপনি প্রতিদিন অন্তত তিনটি ইংরেজি নতুন শব্দের অর্থ মুখস্থ করুন এতে করে আপনি নিজেই সময়ের পরিক্রমায় নিজের পরিবর্তন বুঝতে পারেবেন।

৩। যোগাযোগ দক্ষতা 

আপনি যে অবস্থানেই থাকুন না কেন আপনার মাঝে যোগাযোগের দক্ষতা থাকতে হবে। ভাষাগত দক্ষতা, ই-মেইল বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ সাধন, নিজেকে উপস্থাপন ইত্যাদি বিষয় মাথায় রাখতে হবে একাডেমিক লাইফের পাশাপাশি। যোগাযোগের ক্ষেত্রে নিজেকে আরও দক্ষ করে তুলতে টেড টকস: দ্য অফিশিয়াল টেড গাইড টু পাবলিক স্পিকিং বইটি পড়তে পারেন। মনে রাখবেন, বাংলা ও ইংরেজি, দুটো ভাষাতেই আপনাকে দক্ষ হতে হবে। এছাড়াও আপনি আপনার পছন্দের প্রফেশনের সাথে রিলেটেড মানুষদের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি লিংকডইন আইডি ব্যবহার করতে পারেন।

৪। ব্যক্তিগত দক্ষতা

আপনি একটি পরিস্থিতি কিভাবে কন্ট্রোল করছেন বা অন্যদের প্রতি কিরুপ আচরণ করছেন এসবের মাঝে আপনার ব্যক্তিত্ব প্রকাশ পায়। আপনি কেমন তা কেবল আপনাকেই খুঁজে বের করতে হবে। আপনার দুর্বলতাগুলো আপনাকেই খুঁজে বের করতে হবে। তারপর সেগুলো থেকে কিভাবে ওভারকাম করা যায় তা ভাবতে হবে ও চেষ্টা করতে হবে। ধরুন প্রেজেন্টেশন সবার সামনে দিতে গিয়ে আপনার মাঝে অনেক ভয় কাজ করে এবং এর ফলে আপনার মাঝে এক ধরনের জড়তা কাজ করে বা আপনার অল্পতেই রাগ হয় আর আপনি রিয়েক্ট করে ফেলেন। আপনি যেহেতু আপনার দুর্বল দিকটি উপলব্ধি করতে পারছেন সেহেতু এগুলো থেকে বের হওয়ার চেষ্টা আপনাকেই করতে হবে।

৫। শেখার আগ্রহ

একজন গণিতে প্রফেসর গণিত সম্পর্কে তার অনেক জ্ঞান থাকলেও সে কিন্তু বায়োলজি সম্পর্কে তেমন জ্ঞানী নয়। অর্থাৎ আপনি যে বিষয়ে পারদর্শী সে বিষয় 

অহংকারী মনোভাব করাটা বোকামি। নতুন নতুন বিষয়ে জানার আগ্রহের মাধ্যমে আপনি যেমন অনেক বিষয়ে জ্ঞান লাভ করতে পারবেন একইভাবে আপনার মাঝে শেখার আগ্রহ তৈরি হবে। শেখার আগ্রহটা না থাকলে আপনি জীবনে চলার পথে আপনি এগিয়ে যেতে পারবেন না। তাছাড়া আপনার মাঝে এই মনোভাবটা থাকতে হবে যে আপনার সিনিয়র বা জুনিয়রের থেকেও আপনার শেখা লাগতে পারে। আপনি আপনার ইন্টারেস্টেড সেক্টরগুলো সম্পর্কে জানতে শুরু করুন তারপর একসময় দেখবেন আপনি অন্যান্য বিষয়েও অনেককিছু জানতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

এরকম আরো বিভিন্ন দক্ষতা রয়েছে যেগুলো অর্জনের মাধ্যমে আপনি অন্যদের তুলনায় এগিয়ে থাকবেন। পাঠ্যপুস্তকনির্ভর জ্ঞানের পাশাপাশি আপনাকে আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে উপরের দক্ষতা অর্জনের জুড়ি নেই।

 

To read more blogs, click here

 

Writer

Luvna Akhter

Intern, Content Writing Department

YSSE