আমরা যারা বিভিন্ন অর্গানাইজেশনের সাথে যুক্ত আছি তারা প্রায়শই একটা প্রশ্ন পাই যে, এসব করে লাভটা কি? আমরা কি কোনো অর্থকড়ি পাই? এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে YSSE-র সাথে আজ যুক্ত হয়েছেন TAAN-RAAT Group Bangladesh এর প্রতিষ্ঠাতা তানজীম রাব্বি। তারা এমন একটা প্লাটফর্ম তৈরি করতে চান যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারবে। তাদের যে কোন প্রকারের সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী শক্তির মাধ্যমে এই সংগঠন থেকে সামান্য কিছু হলেও যেন উপার্জন করতে পারে, এরকম একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করাই তাদের মূল লক্ষ্য। তাদের সুদীর্ঘ যাত্রার গল্প শুনবো তার মুখ থেকেই। চলুন শুরু করা যাক।
- প্রথমেই আপনার পরিচয় এবং আপনি কোন সংগঠনের সাথে যুক্ত আছেন সেটার ব্যাপারে জেনে নিতে চাই।
আমি তানজিমে রাব্বি। পড়াশোনা করছি দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ, দ্বিতীয় বর্ষের চতুর্থ সেমিস্টারে। আমি ২০১৪ থেকেই এক্সট্রাকারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিস এর সাথে যুক্ত আছি। বেশ কয়েকটি অর্গানাইজেশনের সাথে যুক্ত ছিলাম। এর মধ্যে BIDS এর কথা উল্লেখযোগ্য, যেখানে ২০১৭–২০ সাল পর্যন্ত কাজ করেছি। ১২ই সেপ্টেম্বর ২০১৯ এ TAAN-RAAT Group Bangladesh এর যাত্রা শুরু হয় আমার এবং আমার পার্টনার ইসরাত জাহানের হাত ধরে। ডিরেক্টর হিসেবে আমরা দায়িত্ব পালন করছি প্রায় চার বছর ধরে। এর মাঝে আমাদের সাথে কো–ফাউন্ডার হিসেবে ফয়সাল আহমেদ যুক্ত হন। সামগ্রিক কার্যক্রম আমরা তিনজন পরিচালনা করে থাকি।
- তান–রাত গ্রুপের প্রধান প্রধান ইভেন্ট গুলো কি কি?
আমরা বাৎসরিক প্ল্যান করি। আমাদের পাঁচটি সিগনেচার ইভেন্ট আছে যার মধ্যে প্রথম হল বাংলা উৎসব যেটি প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে আয়োজন করা হয়। যেহেতু বাংলা ভাষা নিয়ে সারা বছর খুব বেশি কাজ করার সুযোগ থাকে না তাই এই সময়টাতে আমরা বাংলা ভাষা কেন্দ্রীক বিভিন্ন প্রতিযোগিতা যেমন, বাংলা কবিতা আবৃতি, বাংলা গানের প্রতিযোগিতা, নাচ, অভিনয় ও শহীদ দিবস কেন্দ্রীক চিত্রাংকন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকি। বাংলা ভাষা এবং বাংলা সাহিত্য কে সবার মাঝে ফুটিয়ে তোলার জন্য আমাদের এই প্রয়াস।
রমজান ও ইদকে কেন্দ্র করে আমরা প্রজেক্ট হিউম্যানিটি আয়োজন করে থাকি। আমরা মেম্বাররা টাকা দিই, বাজার করা হয় এবং যতদিন পারা যায় লোকজনকে সেহেরী ও ইফতার করানোর চেষ্টা করি। অন্যান্য অর্গানাইজেশন মতো জামাকাপড় না দিয়ে আমরা চেষ্টা করি একটি প্যাকেজ সিস্টেম করে ঈদের জন্য যে বাজার প্রয়োজন; যেমন আধা কেজি গরুর মাংস সেমাই চাল ইত্যাদি সরবরাহ করতে। আমরা ঈদের আগের দিন অর্থাৎ চাঁদরাতে একটা মেহেদী ফ্যাসিভালের আয়োজন করি যেখানে গরিব দুঃখী অসহায় মানুষ থেকে শুরু করে সব ধরনের মানুষকে আমরা ফ্রিতে মেহেদি পরিয়ে দেই। ঈদ আনন্দ কে ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য প্রজেক্ট হিউমিনিটের আন্ডারে এই ফ্যানগুলো আয়োজন করা হয়।
ওয়াল্ড টিচার ডে কে কেন্দ্র করে আমরা ক্রিয়েটিভ চ্যালেঞ্জের আয়োজন করে থাকি। সাইন্স ফেয়ার হিসেবে পরিচিতি পেলেও এখানে বিজনেস এবং আর্টসের স্টুডেন্টদের জন্য কম্পিটিশন থাকে। বিজ্ঞান, ব্যবসা ও মানবিকের প্রায় সকল সাবজেক্ট নিয়েই অলিম্পায়ার্ডার আয়োজন করা হয় এবং একটি ওপেন স্টেজ থাকে যেখানে যে কেউ চাইলেই যে কোন পারফরম্যান্স দেখাতে পারে। এরপর আমাদের একটি ইয়ুথ সামিট থাকে, যেখানে আমাদের লক্ষ্য থাকে বিভিন্ন ইন্টারনেশনাল গেস্ট ইনভাইট করে আন্তর্জাতিক মানের একটি আয়োজন করা। ২০২১ সালে ৪০টি দেশ থেকে ১২০০জন পার্টিসিপেট এবং ২০২২ সালে ৬৫টি দেশ থেকে ২৫০০জন পার্টিসিপেট অনলাইনে অংশগ্রহণ করে। পাশাপাশি ৪০টি দেশের প্রায় ১০০জন অতিথি ছিলেন। সর্বশেষ, এ বছর এটি জুনের ১৭ তারিখে অফলাইনে আয়োজন করা হয়েছিলো, যেখানে ১০০০ জন অতিথি এবং পার্টিসিপেট ছিলেন। এর পাশাপাশি আমরা ফেসবুকে বিভিন্ন খ্যাতনামা মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়ে থাকি, তাদের জীবনে চড়াই–উতরাই ইত্যাদি সম্পর্কে আমরা প্রশ্ন উত্তর করে থাকি। এছাড়াও ফেসবুকে নিয়মিত শিক্ষামূলক পোস্ট করা হয়ে থাকে।
- তান–রাত গ্রুপ এর মত একটা অরগানাইজেশন শুরু করার পেছনের গল্পটা জানতে চাচ্ছি।
আমি ২০১৫–১৬ থেকেই কো–কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিজ এর সাথে যুক্ত আছি। তখন থেকেই আমাকে অনেক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হতো যে, আল্টিমেটলি উপকার বা লাভ টা কি? তো এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এবং মূলত আমাদের নিজেদের ভবিষ্যৎকে আরো উজ্জ্বল করার জন্য, আমরা খুঁজছিলাম আসলে আমাদের যেসব স্কিলস ও অভিজ্ঞতা আছে সেগুলোর মাধ্যমে কোনভাবে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব কিনা।
তো আমরা দেখলাম, এটা বাংলাদেশে এভেলেবেল না। কিন্তু আমাদের মত অনেক ক্রিয়েটিভ স্টুডেন্ট আছে বাংলাদেশে ; তাদের জন্য আমরা কেন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছি না! যেহেতু নাই, সেহুতু আমরাই শুরু করি। আমাদের অভিজ্ঞতা ছিল, স্কিলস, একাডেমিক এচিভমেন্ট এবং কিছু নেটওয়ার্কিং ছিল ; সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে আমরা তান–রাত গ্রুপের কার্যক্রম শুরু করি, যেন আমাদের মত কাউকে এসব প্রশ্নের মুখোমুখি হতে না হয়।
তো এটা নিয়ে যখন কাজ শুরু করি তখন দেখে যায় আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও দক্ষতার অভাব রয়েছে। এরপর থেকেই আমরা স্কিল ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করা শুরু করি। স্কিলস নিয়ে আমরা কাজ করতে থাকব ২০৩০ সাল পর্যন্ত, আর এর মধ্যেই আমাদের প্ল্যাটফর্মকে একটি পরিপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।
- Taan raat group এর অনেকগুলো ডিপার্টমেন্ট আছে। সেগুলো কিভাবে কাজ করে এবং এসব নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?
আমাদের ইতিমধ্যে ৭–৮ টি ডিপার্টমেন্ট আছে। আমরা কম্পিটিশন ভিত্তিক কাজ করি, আইটি ডিপার্টমেন্ট আছে এছাড়া কোভিডের মধ্যে আমরা শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করেছি। আমাদের একটি পেইজ আছে, যেখানে আমাদের whatsapp নাম্বার দেওয়া আছে। কোন শিক্ষার্থী যদি মনে করে যে, তার মানসিক সাপোর্ট দরকার তাহলে সে আমাদেরকে মেসেজ করতে পারে। আমাদের সাথে দু‘জন সাইকোলজিস্ট আছেন, আমরা তাদের সাথে যোগাযোগ করে সময় নির্ধারণ করি, তারপরে সাইকোলজিস্ট তাদের সাথে সরাসরি কথা বলেন ; ফোনে অথবা হোয়াটসঅ্যাপে। সমাধান হয়ে গেলে ভালো আর বেশি জটিল মনে হলে তাদেরকে তারা চেম্বারে ডেকে কথা বলেন। এই সেবাটি আমরা সম্পূর্ণ ফ্রি তে প্রদান করেছিলাম কোভিডের সময়ে এবং যথেষ্ট সাড়া পেয়েছিলাম।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বলতে, আমাদের ডিপার্টমেন্ট অনেকগুলোই চালু আছে এবং কিছু সাময়িক স্থগিত আছে, লোকেবলের অভাবে পরিপূর্ণ ব্যবস্থাপনাটা হচ্ছে না। তো খুব শীঘ্রই সেগুলো রিস্টার্ট হবে।
- এরকম বিশাল কর্মযজ্ঞে টাকা–পয়সা তো একটা বড় ব্যাপার, তো ফান্ড ম্যানেজমেন্ট কিভাবে হয়ে থাকে? এ ব্যাপারে আপনার ব্যক্তিগত নেটওয়ার্ক কত বড়?
ফান্ড ম্যানেজমেন্ট বলতে, প্রথম আড়াই থেকে তিন বছর ফান্ড ম্যানেজ করা খুবই কঠিন ছিল। একদমই পাওয়া যেত না। নিজের পকেট থেকে এবং মেম্বারদের কাছ থেকে পাওয়া মান্থলি ফি ইত্যাদি জোড়াতালি দিয়ে খরচ চালাতে হতো। তারপর যখন একটু নেটওয়ার্কিং বাড়লো, পরিচিতি পেলাম তখন আসলে স্পন্সর কোম্পানিগুলো একটু দাম দেয়া শুরু করলো। এখন আলহামদুলিল্লাহ স্পন্সর পাওয়া যায়। আমাদের ইভেন্ট ভিত্তিক টিম থাকে– স্পন্সরদের সাথে কথা বলার জন্য। তারাই সম্পূর্ণ ব্যবস্থাপনা সামলায় এবং সবার শেষে আমি ফাইনাল কথাটা বলি।
প্রথম থেকে আমাদের মূল চেষ্টা ছিল নিজেদের কোয়ালিটি এবং নেটওয়ার্কিং বানানো। আলহামদুলিল্লাহ কাজ করতে গিয়ে অনেক উচ্চপদস্থ মানুষের সাথে আমাদের পরিচয় ও কাজ করার সুযোগ হয়। তাদের সাথে কথা বলে আমরা আমাদের এডভাইজিং এবং মেন্টর কমিটিতে তাদের যুক্ত করার সুযোগ পেয়েছি। তাদের মধ্যে পারটেক্সের সিইও এবং পেন্টাগনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আছেন। তারা বেশ সাপর্টিভ। গত ক্রিয়েটিভ চ্যালেঞ্জে ঢাকা–১৮ আসনের এমপি ছিলেন আমাদের প্রধান অতিথি হিসেবে। আমাদের যে কোন অনুষ্ঠানে গেস্ট কোয়ালিটি আলহামদুলিল্লাহ সেরা হয়। আমাদের এখন যথেষ্ট ভালো নেটওয়ার্কিং আছে।
- কোন কোন দক্ষতা অর্জন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ আপনার কাজটিতে?
একটা হচ্ছে নেটওয়ার্কিং স্কিল যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর সাথে একটা জিনিস যুক্ত করতে হয় যে কারো সাথে একবার যোগাযোগ হলে তার সাথে কমিউনিকেশনটা কন্টিনিউ করা খুবই জরুরী। আরেকটা হচ্ছে রিপ্রেজেন্টিং স্কিল ; কোন কিছুকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারা জানতে হবে। যার মধ্যে ডকুমেন্টেশন প্রেজেন্টেশন ইত্যাদি চলে আসে। যেহেতু এখন ডিজিটাল যুগ তাই ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ। ই–মেইল, লিংকডিন ও ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপ এসব ছাড়া বর্তমানে নেটওয়ার্ক বাড়ানো সম্ভব নয়। মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য ডিজিটাল স্কিলগুলো অর্জন করা খুবই দরকার। এরপর আসে ধৈর্য্য এছাড়াও টিম ওয়ার্কের মেন্টালিটি থাকতে হবে। নাহলে কখনোই একটি অর্গানাইজেশনে কাজ করা সম্ভব নয়। আমরা মূলত একটি পরিবারের মত কাজ করে থাকি। এরপর যেটা দরকার সেটা হচ্ছে সুন্দর পরিকল্পনা ও নেতৃত্ব প্রদানের সক্ষমতা।
- পড়াশোনার পাশাপাশি অর্গানাইজেশনের এত কাজ কিভাবে সামলান? ক্যারিয়ার হিসেবে আপনার পছন্দ কোনটি?
প্রেসার সামলাতে হয়, ব্যালেন্স করে চলা লাগে। অগ্রাধিকার কে কোনটাকে দিচ্ছে এটা একটা বড় ব্যাপার। কে কোন লাইনে ক্যারিয়ার গড়তে চায় সেটা জরুরী। পড়াশোনা করে কেউ ক্যারিয়ার গড়তে চায়, তাহলে তাকে সেই বিষয়ে ফোকাস দিতেই হবে। আর কেউ যদি আমাদের মতো থাকে, যে প্ল্যাটফর্ম নিয়ে কাজ করছি, ওই প্ল্যাটফর্ম নিয়েই ক্যারিয়ার গড়বো, তাহলে তার অগ্রাধিকার অর্গানাইজেশন হওয়া উচিত, পাশাপাশি পড়াশোনা ব্যালেন্স করে চলতে হয়। আমার এইক্ষেত্রে অর্গানাইজেশন ভিত্তিক ক্যারিয়ার গড়ার চিন্তাভাবনা আছে।
- কোন বিষয়গুলো চ্যালেঞ্জিং এবং সেগুলোকে আপনারা কিভাবে সামলান? সাংগঠনিক স্থিতি বজায় রাখার জন্য কোন বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ?
দুঃখজনক হলেও সত্যি, এমন সময় আসে যে আমি নিয়মিত স্পন্সর পাচ্ছি ; হুট করে স্পন্সর আসা বন্ধ হয়ে যায়! টাইমিং না মিলায় বা অন্য কোনো ভালো প্রোগ্রাম থাকায় কয়েকটি কোম্পানি একসাথে স্পন্সরশিপের জন্য অনাগ্রহ দেখায়। ফান্ডিং রেডি করাটা একটা চ্যালেঞ্জ। তারপরে ফ্যানবেইজ বা পার্টিসিপেটদের অগ্রাধিকার দিতে হয়। এটা সবসময় নিশ্চিত করতে হয় যে তারা যেন কোন ভাবে অসন্তুষ্ট না হন। এছাড়াও প্রতিবন্ধকতা থাকে— সমালোচনা হয়, হবে। অনেকে অনেক কথা বলে থাকে। তবে আপনাকে কাজ করে যেতে হবে। এছাড়াও যদি আপনার কাছে লিগ্যাল কাগজপত্র ও ব্যাংক একাউন্ট না থাকে এবং কোন ইভেন্ট করার আগে যদি পুলিশের পারমিশন না নেওয়া হয়। কোন অনুষ্ঠান যদি পুলিশি বাধার সম্মুখে পড়ে তাহলে অর্গানাইজেশনের রিপুটেশন চরমভাবে হেও প্রতিপন্ন হয়।
আরেকটা বিষয় হচ্ছে, যারা আমাদের হয়ে কাজ করছেন-— সেসব মেম্বাররা কখনো কোনো পারিশ্রমিক পান না। তো সেদিক থেকে তাদেরকে সবসময়ই উজ্জীবিত রাখতে হয়। কারণ তারাই আমাদের মূলধন। তাদের জন্য যে কোন কাজ আমরা সম্পন্ন করতে পারি। একাকি কোন কাজ করা সম্ভব নয়। যারা কাজ করছেন আমাদের খেয়াল রাখতে হবে তারা যেন তাদের যোগ্য সম্মানটুকু পান, তাদের সাথে যেন ভালো ব্যবহার করা হয়। একটা জিনিস মনে রাখতে হবে এখানে কেউ বস না। বস রিলেটেড কোন মেন্টালিটি যেন কোনো অর্গানাইজেশনে না আসে। এ বিষয়গুলো সাংগঠনিকভাবে স্থিতিশীল হওয়ার জন্য খুবই জরুরী।
- এই দীর্ঘ জার্নিতে সবসময় পাশে পেয়েছেন কাদের?
আমার পার্টনার। এরপর আমাদের মেম্বার্স, এক্সিকিউটিভ বোর্ড মেম্বারস, এডভাইজরস ও মেন্টরস। তারা যথেষ্ট সাপোর্ট করে এবং ইনস্পিরেশন দেয়। সব সময় বুষ্ট আপ করে যে কিভাবে কি করা যায়। অনেক ব্যস্ত মানুষ তারা, তারপরও যথেষ্ট সময় দেন।
- আপনার কিছু ভালো লাগার মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করুন।
আসলে এরকম ভালো লাগার মুহূর্ত তো অনেকই আছে। স্পেশালি যখন খুবই বিখ্যাত কোন মানুষ— যাদেরকে আমরা আইডল মানি এরকম কেউ আমাদের অনুষ্ঠানের অতিথি হিসেবে এসেছেন, আমাদের সাথে কমিউনিকেট করছেন এরকম মুহূর্তগুলো ভাল লাগার মত। প্রথমদিকে অনেক স্ট্রাগল গেছে। তো দীর্ঘ স্ট্রাগলের পরে, সাম্প্রতিক সময়ে দুইটা কোম্পানি আমাদের লং টার্ম স্পন্সর হওয়ার জন্য প্রপোজাল দিয়েছে। এরকম রিভার্স প্রপোজাল যখন আসে তখন আসলে খুবই ভালো লাগে। তারপর যখন দেখি আমরা একটি অর্গানাইজেশন হিসেবে গ্রো করছি, আমাদের টিমের মেম্বাররা নিজের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে কাজ করছেন— ওই টিম ওয়ার্কটা অনেক বেশি মানসিক শান্তি দেয়।
- আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে নিজের প্রতিষ্ঠান কে কোথায় দেখতে চান এবং আপনাদের সর্বশেষ লক্ষ্যটা কেমন?
চার–পাঁচ বছরের প্ল্যানিংয়ে আমাদের যে ধারাটা চলে আসছে সেটাকে চলমান রাখাই প্ল্যান। আস্তে আস্তে উত্তরা কেন্দ্রিক এনভায়রনমেন্টের বাইরে গিয়ে সম্পূর্ণ ঢাকা কেন্দ্রিক ও ঢাকার বাইরে কাজ করার ইচ্ছা আছে। প্রায় ৭০টি ক্যাম্পাসে আমাদের ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর আছেন। নেটওয়ার্কিং আরেকটু বুস্ট করতে হবে। এখন যে কম্পিটিশন গুলো আমরা ন্যাশনালি করতেছি সেগুলো ডিভিশন ভিত্তিক নিয়ে এরপরে ন্যাশনাল পর্যায়ে ফাইনাল কম্পিটিশনটা করা। স্টেপ বাই স্টেপ উন্নতি করতে চাই।
আলটিমেটলি আমরা সেখানে পৌঁছাতে চাই যে, বাংলাদেশের প্রত্যেকটি এডুকেশনাল ইনিস্টিটিউশনে আমাদের রিপ্রেজেন্টেটিভ থাকবে। প্রতিটা ইন্সটিটিউশন থেকে কেউ না কেউ যেন আমাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে ইনকাম করতে পারে যেটা আমাদের অর্গানাইজেশনের মূল লক্ষ্য। এবং বাংলাদেশের কর্পোরেট সেক্টরে যে কয়টি কর্পোরেট ফার্ম আছে সবার সাথে আমাদের একটি অফিশিয়াল কলাবরেশন থাকবে। ইনশাল্লাহ।
- আপনার কাজ নিয়ে আপনাকে একটি স্লোগান দিতে বললে সেটি কি হবে?
❝জীবনের ব্যর্থতাগুলোকে তোমার স্বপ্ন পূরণের পথে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করো❞
- সবশেষে আপনার মতোই যারা কাজ করছে তাদের এবং পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।
কাজ করে যান আরো কাজ করেন। ইম্প্যাক্টফুল কিছু করার চেষ্টা করুন। গদবাঁধা নিয়ম থেকে বের হয়ে আসুন। ইনোভেটিভ কোন কিছু করার চেষ্টা করুন। যে যেটাই করছে সবাইকে সাপোর্ট করুন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
ফেসবুক : Tanjim Rabby, TAAN-RAAT Group
ইউটিউব : TAAN_RAAT Group Bangladesh
ই–মেইল : info.taanraatfamily@gmail.com
এরকম আরো ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন।
লেখক,
মোঃ রাকিব রায়হান
ইন্টার্ণ, কনটেন্ট রাইটিং ডিপার্টমেন্ট,
YSSE.