আপনি কি নতুন আবিষ্কারের কথা শুনেছেন যা জাপানের বিজ্ঞানীরা করেছেন, খুজে বের করেছেন ৭২ মিলিয়ন বছর পুরোনো দানবের সন্ধান। চলুন সম্পূর্ণ আবিষ্কার সম্পর্কেই জেনে নেই….

ব্লু ড্রাগন নামটা শুনেই মনে হচ্ছে নীল কোনো ড্রাগনের কথা বলা হবে।  আসলেই নীল ড্রাগন নিয়েই কথা হবে। ড্রাগন শব্দটার সাথে আমরা আগে থেকেই পরিচিত তার সাথে নতুন করে যুক্ত হলো ব্লু যা একটি সামুদ্রিক প্রাণী এবং এই প্রাণীটির সাথে অতীত আর বর্তমান কোনো প্রাণীরই মিল নেই।

এই দূর্লভ সামুদ্রিক প্রাণীটির আবাসস্থল ছিলো প্রাচীন প্রশান্ত মহাসাগরে। এই প্রাণীটির ধ্বংসাবশেষ খুজে বের করেন জাপানের বিজ্ঞানীরা। তারা মনে করেন এই ধ্বংসাবশেষটি জাপান ও উত্তর পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থানকারী মেসাসরের জীবাশ্মের সাথে মিল রয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে এটি প্রায় ৭২ মিলিয়ন পুরোনো সামুদ্রিক প্রাণীর জীবাশ্ম।

এই ভিন্নধর্মী জীবাশ্মটি হোনশু দ্বীপের ওয়াকায়ামা প্রিফেকচারের আরিদাগাওয়া নদীর তীরে পাওয়া গেছে।  এটি মেসাসর প্রজাতির সাথে মিল রয়েছে যেই প্রজাতিটি ছিল বায়ু নিশ্বাস গ্রহণকারী জলজ সরীসৃপ প্রাণী এবং আরো ছিল ক্রিটেসিয়াস যুগের শীর্ষ শিকারী। ক্রিটেসিয়াস এর যুগ ছিল প্রায় ১৪৫ থকে ৬৬ মিলিয়ন বছর আগে।

ব্লু ড্রাগনের গাঠনিক বৈশিষ্ট্য গুলোর মধ্যে কিছুটা ড্রাগনের বৈশিষ্ট্য থাকলেও কিছু ভিন্নতাও আছে। এই প্রাণীটির একটি ডলফিনের মতো ধড় রয়েছে, রয়েছে চারটি প্যাডেলের মতো ফ্লিপার। এই চারটি ফ্লিপারের মধ্যে দুইটি সামনে এবং দুইটি পিছনে অবস্থিত। সামনের ফ্লিপার থেকে পিছনের ফ্লিপার গুলো অপেক্ষাকৃত বড় যা জলজ বা স্থলজ কোনো প্রাণীর বৈশিষ্ট্যের সাথেই মিল সম্পন্ন না। আরো রয়েছে একটি অ্যালিগেটর আকৃতির থুতু ও একটি লেজ। ডোলসাল পাখনা টি বাক নিতে সাহায্য করে থাকে।

স্বাভাবিক ভাবে যেকোনো জলজ প্রাণীর সামনের ফ্লিপার দুইটি বড় থাকে এবং সাঁতারের বিপরীতে এই স্টিয়ারিং গুলো কাজ করে থাকে। মেসাসরের জীবাশ্মের সাথে ব্লু ড্রাগনের জীবাশ্মের আরেকটি অমিল রয়েছে তা হলো একটি পৃষ্টীয় পাখনা যা হাঙ্গর বা ডলফিনের থাকে কিন্তু মেসাসরের থাকে না।

সাম্প্রতিক গবেষণায় জার্নাল অফ সিস্টেম্যাটিক প্যালিওন্টোলজি পত্রিকায় গবেষকরা তাদের গবেষণায়  ব্লু ড্রাগনের নামকরণ করেন মেগাপ্টেরিজিয়াস ওয়াকায়ামেনসিস নামে। এখানে মেগাপ্টেরিজিয়াস এর অর্থ হলো বড় ডানাওয়ালা যা এর পিছনের দুইটি বড় ফ্লিপারকে প্রকাশ করে। এছাড়াও গবেষকরা এর ডাকনাম ওয়াকায়ামা সোরিউ রাখে যার অর্থ হলো নীল রঙ্গের জলজ ড্রাগন।

গবেষণার প্রধান লেখক এবং সিনসিনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মেরুদণ্ডী জীবাশ্মবিদ তাকুয়া কোনিশি এই আবিষ্কারে তার বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, “আমি ভেবেছিলাম যে তাদের [মোসাসরদের] বেশ ভালোভাবে চিনতাম। এরকম কিছু এর আগে আমি কখনো দেখিনি”

এরকম আরো ব্লগ পড়তে ক্লিক করুন

মৌসুমী আক্তার রিতু

ইন্টার্ন 

কন্টেন্ট রাইটিং ডিপার্টমেন্ট 

YSSE