বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্ব থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য যুক্তরাজ্যে গমন করে।  যুক্তরাজ্যে ছাত্রদের পড়তে যাবার অন্যতম কারণ হলো মান সম্মত পড়াশোনা এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইড প্রদানকৃত ডিগ্রীগুলোর গ্রহণযোগ্যতা। এখানে ক্যামব্রিজ ,অক্সফোর্ড, ইউসিএল এর মত টপ র‍্যাঙ্ক ইউনিভার্সিটিগুলো অবস্থিত। বিখ্যাত এইসব ইউনিভার্সিটি সহ অন্যান্য জনপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সুযোগ পেতে একজন ছাত্রকে অবশ্যই একটি দীর্ঘ এবং সুশৃংখল প্রসেসের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আসুন এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু ধারণা নেয়া যাকঃ

 

প্রথমে ইউনিভার্সিটিতে এডমিশন নেওয়ার জন্য একজন শিক্ষার্থীকে অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন সম্পন্ন করতে হবে। অনলাইন এপ্লিকেশন সম্পন্ন করার জন্য ইউনিভার্সিটির ভেদে এবং সাবজেক্ট অনুযায়ী রিকোয়ারমেন্ট ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে তবে সব ইউনিভার্সিটি একটি হলস্টিক প্রসেস ফলো করবে।  অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন সম্পন্ন করার জন্য নিচের ডকুমেন্টগুলো সাবমিট করার প্রয়োজন হবে। 

 

১.  বৈধ পাসপোর্ট : পাসপোর্ট এর মেয়াদ অবশ্যই পড়াশোনা শেষ করা পর্যন্ত থাকতে হবে

২. অফিসিয়াল উচ্চমাধ্যমিক এবং গ্রাজুয়েশন সার্টিফিকেট

৩. লেটার অফ রিকমেন্ডেশন : এই ডকুমেন্ট শিক্ষার্থীর একাডেমিক চারিত্রিক এবং ভবিষ্যতে উন্নতি লাভের সম্ভাবনা সম্পর্কে তথ্য প্রদান করা হয় যেটি মূলত ওই শিক্ষার্থী  এর শিক্ষক অথবা তার মেন্টর  প্রদান করে থাকে।  

৪. স্টেটমেন্ট অফ পারপাস (এসওপি) : এই ডকুমেন্টটি হল ভর্তি প্রক্রিয়া সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি একজন ছাত্রের একাডেমিক এবং সহ-শিক্ষা কার্যক্রম। তার অর্জন সম্পর্কে স্পষ্ট বিস্তারিত ধারণা প্রদান করে।  একই সাথে শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা,  এই ইউনিভার্সিটি কেন সিলেট করেছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার প্রত্যাশা সম্পর্কে লেখা থাকে।  একজন শিক্ষার্থীকে অবশ্যই তার এসওপি ইউনিভার্সিটি অনুযায়ী আলাদা আলাদা ভাবে লেখার প্রয়োজন হয়।

৫. উকেভিআই আইইএলটিএস (UKVI IELTS) : এই স্ট্যান্ডার্ডডাইজ টেস্ট এর স্কোর রিকোয়ারমেন্ট ইউনিভার্সিটি ভেদে আলাদা হয়ে থাকে। সাধারণত ইউনিভার্সিটিগুলো ৬ থেকে ৭.৫ স্কোর চেয়ে থাকে। 

৬. সিভি (CV) : এই ডকুমেন্টটি সংক্ষেপে পার্সোনাল ইনফরমেশন, একাডেমিক তথ্য, ওয়ার্ক এক্সপেরিয়েন্স, রিসার্চ (যদি থাকে), ভলান্টিয়ার কার্যক্রম, অ্যাওয়ার্ড অর্জন, দক্ষতা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়ের উল্লেখ থাকে। এটি সাধারণত ১ থেকে ২ পেইজের ভিতর লিখতে হয়। 

৭. সহশিক্ষায় কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সার্টিফিকেট এবং ওয়ার্ড এক্সপেরিয়েন্স লেটার, এসব ডকুমেন্টের উপর ভিত্তি করে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভর্তি করে থাকে।  একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তির অফার লেটার পাবার পর তাকে যুক্তরাজ্যের এম্বাসিতে টায়ার ফোর অর্থাৎ স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়।  এই ভিসা পাওয়ার জন্য নিচে ডকুমেন্টগুলো প্রদান করে অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন পূরণ করতে হবে। 

 

১. একটি বৈধ পাসপোর্ট এর চাহিত তথ্য প্রদান করতে হবে। 

২. পাসপোর্ট সাইজের ছাত্রেরফটোগ্রাফ অথবা ছবি প্রদান করতে হবে। 

৩. ইউনিভার্সিটি থেকে পাওয়া অফার লেটার অথবা এক্সেপটেন্স অফ স্টাডিস দিতে হবে। 

৪.উকেভিআই আইইএলটিএস (UKVI IELTS) রেজাল্টের কপি। 

৫. হেলথ ইন্সুরেন্সের প্রমাণপত্র। 

৬. ব্যাংক স্টেটমেন্ট যেখানে দেখাতে হবে লিভিং, ফুড, ট্রান্সপোর্টেশন এবং পড়ার জন্য পর্যাপ্ত অর্থের যোগান রয়েছে। 

৭. টিউবারকিউলোসিস স্ক্রিনিং টেস্ট রেজাল্ট এর কপি–এটি বাধ্যতামূলক দক্ষিণ এশিয়া শিক্ষার্থীদের জন্য। 

 

এসব ডকুমেন্ট সাবমিট করে একটি নির্দিষ্ট ভিসা ফি প্রদান করে অ্যাপ্লিকেশনটি সম্পন্ন করতে হবে। এরপর বায়োমেট্রিক দেওয়ার জন্য ইউকেভিআই থেকে সঠিক এপ্লিকেন্ট কে অনুরোধ করা হয়।  বায়োমেট্রিক সম্পন্ন করার পর একজন স্টুডেন্টকে সাধারণত থ্রি-ওয়ার্কিং সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হয় ভিসা সহ পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য। ভিসা সহ পাসপোর্ট পাওয়ার পর ওই শিক্ষার্থী তার কাঙ্খিত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য যুক্তরাজ্য গমন করার সুযোগ পান। 

 

এমন আরও ব্লগ পড়তে চাইলে এখানে  ক্লিক করুন

 

আবদুল্লাহ জামান

 ইন্টার্ন , কনটেন্ট রাইটিং ডিপার্টমেন্ট

ইয়ুথ স্কুল ফর সোশ্যাল এন্টারপ্রেনার্স (YSSE)