আজকাল চিকিৎসকরা চিনি যতটা সম্ভব এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। লবণও পরিমিতভাবে গ্রহণ করাটাই শ্রেয়। কিন্তু লবণ গ্রহণের পরিমাণ উচ্চরক্তমাত্রা থাকলে তবেই আমরা একটু সংযুত হয়। অধিক মাত্রায় লবণ, চিনি দুটোই গ্রহণ স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
এখন ইন্টারনেটের যুগে যেখানে একটু সার্চ করলেই নিমিষেই তথ্য পাওয়া যায় সেখানে সবাই পরামর্শকদাতা হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া এতো ভুল তথ্যও পাওয়া যায় যে ভুলটিকে সত্য মেনে আমরা নিজেদের ক্ষতি সাধন করি। লবণ না চিনি বেশি ক্ষতিকর এর সঠিক তথ্যটি এইবার জেনে নেওয়া যাক।
১. লবণ:
মাত্রাতিরিক্ত কিছুই কল্যাণকর হতে পারে না। লবণের ক্ষেত্রেও তাই। লবণে রয়েছে সোডিয়াম ক্লোরাইড যা উচ্চরক্তচাপ বৃদ্ধিতে কাজ করে। সুতরাং অত্যধিক পরিমাণে লবণ খেলে উচ্চরক্তচাপ বাড়বেই, বাড়বে। জেনে রাখা ভালো যে উচ্চরক্তচাপ হলো নীরব ঘাতক। উচ্চরক্তচাপের ছায়াতলে হার্ট, কিডনি ও ব্রেইনের ক্ষতি হয়ে থাকে।
২. চিনি:
চিনি বা মিষ্টি স্বাস্থ্যের সরাসরি ক্ষতি করে। চিনি জাতীয় খাবারগুলি হল রিফাইন কার্ব। তাই চিনি খাওয়ার পরই তাড়াতাড়ি করে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। আর এই কারণে হাই ব্লাড সুগারের মতো অসুখ আপনার শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। চিনিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি মজুত থাকে। আর এই বিপুল পরিমাণ ক্যালোরি কিন্তু দেহে গিয়ে ফ্যাটে রূপান্তরিত হয়ে যায়। সেই কারণেই চিনি বা মিষ্টিকে শত্রু ভাবে যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়।
তাহলে প্রশ্ন এখানো রয়ে যায় যে কোনটা বেশি ক্ষতিকর? চিকিৎসকেরা সাধারণত লবণ ও চিনি দুইয়ের থেকেই নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাই নির্দিষ্ট কাউকে অপরাধী করা যাবে না।
কম লবণ ব্যবহার করেও স্বাদ অক্ষুণ্ণ রাখতে এখন অনেকে লো সোডিয়াম লবণ ব্যবহার করছে। এইসব লবণে সোডিয়ামের মাত্রা অত্যন্ত কম পরিমাণে থাকে। তাই এই ধরনের লবণ গ্রহণে বাঁধা নেই তবে উচ্চরক্তচাপের রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এটি গ্রহণ করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) বলছেন, মানুষের দেহ ঠিকভাবে কাজ করার জন্য খুব কম পরিমাণ লবণ দরকার হয়। কিন্তু মানুষ প্রতিদিন সেই মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি লবণ গ্রহণ করছে।
সংস্থাটি বলছে, একজন মানুষের সব মিলিয়ে ২,৩০০ মিলিগ্রাম বা এক চা চামচের বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়। আপনি কি খুব মোটা ? আপনার ওজন হ্রাস করতে চান। তাহলে অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে স্বাস্থ্যবান রাখতে লবন একটি শ্রেষ্ঠ উপাদান হতে পারে। ওজন অতিরিক্ত হলে রোগ ব্যাধি বেশি হওয়ার সম্ভবনা থাকে। ওজন হ্রাস করা লবণের উপকারিতার এর মধ্যে অন্যতম।
তাছাড়া যাদের ব্লাড প্রেসার কম, তারা খাবার লবণ খেতে পারেন।
স্বাস্থ্য সচেতন মানুষজন এখন চিনির পরিবর্তে “সুগার ফ্রি ” ব্যবহারের মাত্রা বাড়িয়েছে।
সুগার ফ্রি গ্রহণ নিরাপদ ধরে নেওয়া হতো। বর্তমানে কয়েকটি গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে, নিয়মিত সুগার ফ্রি খেলে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়বে। তাই চিনির বদলে সুগার ফ্রি গ্রহণও ঝুঁকি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, একজন প্রাপ্ত বয়স্ক নারী দিনে ৬ চা চামচ এবং একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ দিনে ৯ চা চামচ চিনি খেতে পারেন। যারা নিয়মিত অতিরিক্ত চিনি খান তাদের মধ্যে উচ্চরক্তচাপ, ক্ষুধা মন্দা, ক্রোনিক ইনফ্ল্যামেশন, দাঁতের ক্ষয়, যকৃতের মেদসহ টাইপ টু ডায়েবেটিস, ক্যান্সার ও স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেশী থাকে। অন্যদিকে চিনি খাওয়া একেবারে বন্ধ করে দিলে ক্লান্তি, মাথাব্যথা, ব্রেইন ফগ এবং বিরক্তি, হরমোনাল ইমব্যালেন্স এমনকি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ডিস্ট্রেস এর মতো সমস্যাও হতে পারে।
To get more blogs like this, click here.
Writer,
Rumman Bente Razzaque
Intern,
Content writing Department,
YSSE