আচ্ছা! আমাদের যখন কেও জিজ্ঞেস করে,“বড় হয়ে কি হবা?” আমরা হয়ত খুব সহজ উত্তর দেই,ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার, অথবা সমাজে গর্ব করে বলা যায় এমনকিছু! কিন্তু আমরা কি সত্যিই সবসময়ই ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই? 

আমাদের হয়তো ভাল লাগে কবিতা লিখতে, অথবা ভাল লাগে হলুদ পাঞ্জাবি পড়ে হিমু সাজতে!  কেমিস্ট্রি ক্লাসের বিক্রিয়া হয়ত আমি বলতে পারি না! কিন্তু একের পর এক গানের লাইন গুলো ঠিকি মনে রাখতে পারি। পরীক্ষায় হয়ত টেনেটুনে পাশ করি,কিন্তু খেলার মাঠে নামলেই সেঞ্চুরি করি! 

 

কিন্তু এসব কি আমাদের বাবা মা অথবা সমাজের  কাছে কোন মুল্য পায়? হয়ত পায় কিন্তু সেটা অনেকটা আমাবস্যার চাঁদ এর মতন দুর্লভ। বাবা মা তাদের চোখ দিয়ে যা দেখেন আমাদের তরুন চোখ  তা দেখে না। তারা আমাদের জীবনটাকে সুন্দর দেখতে চান,সমাজে আমাদের প্রতিষ্ঠিত দেখতে চান।

কিন্তু আমরা আমাদের সপ্ন পূরনে বিভোর হয়ে থাকি, আর তাতেই খুজে পাই প্রকৃত সুখ।এমন সময়ে হয়ত আমাদের পাশে দাঁড়ায় আমাদের কোন বড় ভাইবোন,অথবা কোন বন্ধু!যারা  আমাদের সপ্ন পূরনে পাশে থেকে আমাদের সাহায্য করেন। সাহায্য করেন নিজের স্বপ্ন নিয়ে বাচতে। 

 

আর আমাদের এই সপ্নপূরন আর বাবা মায়ের শত বারণ টিভি বা মোবাইলের পর্দায় দেখতে চাইলে আপনাকে দেখতে হবে “জেনারেশন আমি” মুভিটি। এটা আমার জেনারেশন নয়। বরং আমাদের জেনারেশনের গল্প। চলুন না! “জেনারেশন আমি”র গল্পে আমাদের গল্পটা খুজে আসি! 

 

ঘটনা প্রবাহঃ

গল্পের প্রধান চরিত্র, মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে অপু। মুভির শুরু থেকেই অপুকে বাবামায়ের কড়া শাসনের মধ্যে থাকতে দেখা যায়। অপুর মা অপুকে পড়াশোনার ব্যাপারে খুব শাসন করেন, এদিকে অপুর ইচ্ছে সং রাইটার হওয়ার।

এরই মধ্যে অপুর বাসায় আসে অপুর এক চাচাতো বোন। ব্যস্ত বাবা-মার একমাত্র সন্তান দুর্গা। ক্লিনিকাল ডিপ্রেশনে ভুগতে থাকা দুর্গাকে ডাক্তার দেখানোর জন্য মূলত চাচার বাসায় পাঠানো হয়। দুর্গা এসে অপুর উপর তার মা-বাবার অতিরিক্ত শাসন দেখে খুব অবাক হয়। 

এরপর দুর্গা জানতে পারে অপু খুব ভালো গান লেখে, একটা গানের কম্পিটিশনে সে গান গাইতে চায়। কিন্ত ভয়ের কারনে সে বাবার কাছে বলতে পারছে না। কারন অপুর বাবা-মা চান না পড়ালেখার পাশাপাশি অপু গান করে অযথা সময় নষ্ট করুক। 

ঠিক এই সময়ে অপুর পাশে এসে দাঁড়ায় ওর দিদি দুর্গা। লুকিয়ে অপুকে একটা গিটার কিনে দেন। অপুকে গানের কম্পিটিশনে গান গাওয়ার সাহস জোগান। তবে এরই মধ্যে ঘটে যায় একটি দূর্ঘটনা,সেটা আজকে আর বলবো না! তারপর কি হয়েছিল? অপু কি পেরেছিল গান গাইতে? এসব কিছু জানতে চাইলে আপনি দেখে নিতে পারেন “জেনারেশন আমি” ছবিটি। 

 

আসলে একটা ছবি কখনো কখনো অনেক অনেক গল্প বলে, এই ছবিটিও ঠিক তেমনি! একদিকে আপনি দেখবেন বাবা-মায়ের অতিরিক্ত শাসন, অপুর স্বপ্নপূরনে বাধা।  অন্যদিকে দেখবেন বাবামায়ের ঠিক সময়ের অভাবে একাকিত্বে ভুগতে ভুগতে ডিপ্রেশনে চলে যাওয়া দুর্গা। এদিকে মধ্যবিত্ত পরিবারের টানাপোড়ন গুলো তো আছেই। ছবির ছোটখাটো বিষয়গুলো মাঝেমধ্যে আপনাকে আপনার ছোটবেলার কথা মনে করিয়ে দিবে। কখনো কখনো নিজেকে স্ক্রিনে আবিষ্কার করার সুযোগ করে দিবে। 

আমি বলছি না এটা একটা শিক্ষামূলক ছবি। তবে এসব ছবি মাঝেমধ্যে আপনার স্বপ্নপূরনে সমাজ বা সামাজিক ব্যবস্থা যে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তা কাটিয়ে উঠে স্বপ্নপূরনে অনঢ় হয়ে উঠতে আপনাকে সাহায্য করবে। 

 

অভিনয়: ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়, শৌরসেনী মৈত্র, লিলি চক্রবর্তী, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, অপরাজিতা আঢ্য

ছবিটি পরিচালনা করেছেন: মৈনাক ভৌমিক। 

গল্প লিখেছেন: রোহিনি ঘোষ।

আইএমডিবি রেটিংঃ ৭.০৬

 

এমন মুভি যখন দেখতে বসি, মনে হয় চারকোনা স্ক্রিনে  আমাদের জীবন টাকেই ওপাশ থেকে দেখছি। 

ওহ! ছবির একটা ডায়লগ আমার খুব ভাল লেগেছে,লেখা শেষ করার আগে ডায়লগ টি আপনার সাথে শেয়ার না করে পারছি না!  

ফেসবুক ইন্সটাগ্রামে আমরা হবু গার্লফ্রেন্ড খুজে বেড়াই না!  বরং এই পৃথিবীটাকে খুজি!

 

এমন আরো রিভিউ পড়তে চাইলে ক্লিক করুন

 

লেখক :

আব্দুল্লাহ আর রাফী

ইন্টার্ন,

কন্টেন্ট রাইটিং ডিপার্টমেন্ট,

YSSE 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *