আপনি কি BCS প্রস্তুতি নিয়ে চিন্তায় আছেন? কোথা থেকে শুরু করবেন বুঝতে পারছেন না? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি শুধুই আপনার জন্য, আজকের আর্টিকেলটি হবে আপনার BCS প্রস্তুতির গাইডলাইন। 

বিসিএস ক্যাডার হতে হলে সর্বপ্রথম আপনাকে সঠিক প্রস্তুতি নিতে হবে, শূন্য থেকে শুরু করে সব বিষয়ে দক্ষতা অর্জনে আপনাকে সাহায্য করবে আজকের আর্টিকেলটি। বিসিএসে অথবা চাকরিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর,চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার কৌশল জেনে নিন।

১.লক্ষ্য নির্ধারণ করুন

আমরা যে কোনো কাজ করার আগে, আমাদের উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য নির্ধারণ করে নেই, আমরা কি করব, কোনটা করব না, সব আগে থেকেই আমরা ঠিক করে নেই। আমাদের স্বপ্ন যখন বিসিএস ক্যাডার হওয়া, সে অনুযায়ী আমাদের লক্ষ্য, আমাদের উদ্দেশ্য ঠিক করতে হবে। স্বপ্ন পূরনের উদ্দেশ্য নিজের লক্ষ্য স্থির রেখে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

২.ধৈর্যশীল ও পরিশ্রমী হতে হবে

কোনো কাজে সফল হতে হলে, প্রথম শর্ত হলো, ধৈর্য ধরে কাজ করা। ধৈর্য ও পরিশ্রম একজন মানুষকে সফলতার উচ্চ শিখরে পৌঁছে দিতে পারে। তাই আপনার স্বপ্নকে পূরন করার জন্য  আপনাকে ধৈর্য ধরে পড়তে হবে। কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। তাহলে আপনি আপনার স্বপ্ন পূরন করতে পারবেন।

৩.আত্মবিশ্বাসী হওয়া

নিজের মনে বিশ্বাস রাখতে হবে আপনি পারবেন, অবশ্যই আপনি পারবেন, অন্য ১০ জন পারলে আপনি কেন পারবেন না,  আপনাকেও পারতে হবে। মানুষ পারে না এমন কোনো কাজ নেই। এই বিশ্বাস নিয়ে আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে। মনে বিশ্বাস, বল থাকলে যে কোনো কাজে সফলতা অর্জন করা যায়। যে কোনো পরিস্থিতিতে নিজেকে সামলে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাবার জন্য প্রস্তুত রাখতে পারলেই আপনি একজন সফল মানুষ। 

৪. প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য টার্গেট নিন

২০০ নম্বরের  ২০০ নম্বরই যে আপনাকে পেতে হবে সেটা কিন্তু না। বিসিএস প্রিলি পাস করার জন্য আপনাকে ১৩০-১৪০ পাওয়ার মত টার্গেট নিয়ে পড়ুন। যে কোনো মানুষের পরামর্শ নিয়ে কাজ করবেন না, একটা বিষয় নিয়ে আগে গুগল রিসার্চ করুন, বিগত বছরে যারা ভালো একটা পজিশন এ রয়েছে তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিন।

৫. বিসিএস সিলেবাস সম্পর্কে ধারণা নিন

প্রথমেই আপনাকে যে কাজটি করতে হবে, বিসিএস সিলেবাসটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। বিগত বছরের প্রশ্ন গুলো ভালোভাবে রিসার্চ করে দেখুন,  যেটা পারেন সেটা আরও প্রাক্টিস করুন, আর যেটা পারবেন না, সেটা আরও ভালো করে বার বার প্রাক্টিস করুন। ভালোভাবে সব বিষয়গুলো গুছিয়ে নিন। 

৬. রুটিন তৈরি করুন  

অনেক সময় দেখা, অনেক ছাত্র-ছাত্রী সঠিক রুটিন অনুসরন করে না। যার ফলে তার ভালো প্রস্তুতিও হয়ে ওঠে না, একদিক দিয়ে পড়লে অন্যদিক দিয়ে সেটা ভুলে যায়। এক সময় সে হতাশ হয়ে পড়ে। তাই কোনো কাজ করার আগে অবশ্যই সুন্দর একটা রুটিন তৈরি করে নেওয়াটা আবশ্যক। 

৭. বোর্ড বইগুলো পড়ুন

বিসিএস পরীক্ষার জন্য আপনাকে যেটা করতে হবে, বোর্ড বই গুলো ভালোভাবে রিসার্চ করতে হবে। নবম-দশম শ্রেণীর বই পড়ুন। যেমনঃ উচ্চতর গনিত, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, সাধারণজ্ঞান, এবং বিজ্ঞান। বিসিএস প্রিলিমিনারি প্রস্তুতির জন্য এই বই গুলো পড়া হলে, ভালো একটা প্রকাশনীর বই কিনে পড়ুন।

৮. কনফিউশন প্রশ্ন গুলো আলাদা নোট করুন

পড়ার সময় আপনি দেখবেন, অনেক বিষয় নিয়েই আপনার মনের মধ্যে কনফিউশন তৈরি হচ্ছে,  যে বিষয়গুলো নিয়ে মনের মধ্যে কনফিউশন দেখা দিবে, সে বিষয়গুলো নোট করে রাখুন। এবং বিষয়গুলো ভালো করে বার বার পড়ুন। অনেক বার পড়ার ফলে, রিসার্চ করার ফলে, আশা করি কনফিউশন দূর হয়ে যাবে।

৯. স্পষ্ট উচ্চারণ শিখুন

যেটাই পড়েন, সেটা উচ্চারণ সুন্দর করে পড়ুন, কোনো জড়তা যেনো না থাকে। কথা বলার সময় কথার মাঝে জড়তা থাকলে,  সেটা শুনতে ভালো লাগে না। শুদ্ধ উচ্চারণ করুন, কথার মাঝে জরতা  কাটাতে বার বার পড়ুন।

১০. বার বার প্র্যাকটিস করুন 

গনিত, ইংরেজি প্রতিদিন বেশি বেশি প্রাকটিস করুন। প্রতিদিনের রুটিন এ ইংরেজি, গনিত বিষয় গুলো রাখুন। বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান, সকল বিষয়গুলো ভালোভাবে বার বার প্রাকটিস করুন। বার বার প্র্যাকটিস করলে, আপনার সব চাকরির প্রস্তুতি অনেক বেশি ভালো হবে।

১১. প্রতিদিন কম বেশি সংবাদপত্র পড়ুন

প্রতিদিন কম বেশি সংবাদপত্র পড়ুন। দেশি-বিদেশি সংবাদপত্র পড়ুন,  দেশি-বিদেশি আলোচিত বিষয় গুলো জানুন, লাইফ স্টোরি  বা অনান্য ঘটনা, যা আপনার জ্ঞান বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে। প্রতিদিন কম পক্ষে একটি ইংরেজি, একটি বাংলা পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করুন।

যেমন, প্রথম আলো, দ্যা ডেইলি স্টার, ইত্যাদি পত্রিকা পড়তে পারেন। প্রতিদিন পেপার এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ গুলো পড়ুন, এবং নোট করে রাখুন। যা আপনার জন্য প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য প্লাস পয়েন্ট হিসাবে কাজ করবে।

১২. একটি রিভিশন চক্র তৈরি করুন

আপনি সারাদিন পড়লেন, কিন্তু কিছু মনে রাখতে পারলেন না, তাহলে কিন্তু আপনার পড়ে কোনোই উপকার এ আসবে না। আপনি যদি ভেবে থাকেন ১৪/১৫ ঘন্টা পড়লেই আপনি পারবেন সেটা কিন্তু না, সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কতটা আপনি মনে রাখতে পারবেন, কতটা আপনি ধরে রাখতে পারবেন, সেটাই সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। 

তাই বার বার রিভিশন করুন, কতটা মনে আছে, কি নেই, বার বার রিভিশন করুন। যেকোনো পড়া একবার পড়ার পর আবার ১ ঘন্টা পর মনে করার চেষ্টা করুন। মনে না আসলে আবার পড়ুন।এভাবেই কন্টিনিউস করতে থাকুন।

১৩. গ্রুপ স্টাডি

আপনি চাইলে গ্রুপ স্টাডি করতে পারেন, সবার সাথে আলোচনা করে, সমস্যার সমাধান করতে পারেন,  একে অন্যের থেকে অনুপ্রাণিত হতে পারেন।তাহলে পড়ায় মন বসবে,  মনের ভিতর প্রতিযোগিতা মূলক মনোভাব আসবে, পড়ায় মন বসবে।

১৪. বিসিএস মডেল টেস্ট দিন

আপনার চুড়ান্ত প্রস্তুতি যাচাই করার জন্য, মডেল টেস্ট এর কোনো বিকল্প নেই। তাই আপনাকে অনলাইন বা অফলাইনে এ যেকোনো জায়গায় বার বার মডেল টেস্ট এ অংশগ্রহন করুন। 

তাহলে আপনার কনফিডেন্স বাড়বে, আপনি কি পারেন, কি পারেন না, সেটা সহজেই বুঝতে পারবেন। এছাড়াও প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট আসবে, যা আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 

সবশেষে, বিসিএস পরীক্ষা হলো সব মানসিক খেলা। এখানে টিকে থাকতে হলে কৌশল খাটিয়ে কাজ করতে হবে। একটা বিষয় মনে রাখবেন, বিসিএস প্রস্তুতি আপনার ভালো হলে, অনান্য জব প্রস্তুতি ও আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে।

একটা বিষয় সবসময় মনে রাখবেন, জীবনে সফল হতে হলে পরিশ্রম এর কোনো বিকল্প নেই। আপনি যতই মেধাবী হন না কেন, যদি পরিশ্রম না করেন, তাহলে কখনোই সফল হতে পারবেন না। পরিশ্রম ও অধ্যবসায় থাকলে আপনি সফল হবেন।

 

 

লেখা: সাথী

Intern, Content Writing Department  

YSSE

keywords: BCS, Public Exam, বিসিএস, বিসিএস পরীক্ষা, প্রিলিমিনারি পরীক্ষা, বিসিএস প্রিলি।