আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে গবেষণা পত্র প্রকাশ করার মত ঘটনা খুব সচরাচর দেখা যায় না। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরাই প্রথম গবেষণা পত্র লেখার সুযোগ পায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষে থিসিস করার সময়ে। তবে সেসব গবেষণা পত্র প্রকাশিত হওয়াটা বেশ মুশকিল হয়ে যায় বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে। তবে যদি দলবদ্ধভাবে দক্ষ ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কিছু মানুষকে নিয়ে গবেষণার কাজ করা হয়ে থাকে, তাহলেই শিক্ষার্থীরা গবেষণা পত্র প্রকাশ করতে পেরেছে এমন বেশ নজির আছে।
তবে কেনই বা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে গবেষণাপত্র প্রকাশ করা লাগবে? এর দরকারই বা কি?
আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক যে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে গবেষণাপত্র প্রকাশের গুরুত্বটা কোথায়-
লেখনী ও গবেষণার দক্ষতা:
গবেষণা পত্র তৈরী করার একটা বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে লেখালেখি এবং তথ্য সংগ্রহের কাজ।
একটা গবেষণা পত্র তৈরী করার জন্য প্রথমে করতে হয় তথ্য সংগ্রহ বা ডেটা কালেকশন। তথ্য সংগ্রহ করা হয় মূলত বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নমালার মাধ্যমে এবং বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করে ইন্টারপ্রিট করা হয়। ডেটা কালেকশন ও ইন্টারপ্রিটাশনের পরই আসে গবেষণা পত্র লেখা এবং একটি গবেষণা পত্র লেখার কাজ বেশ সময়সাপেক্ষ ও জটিল। আর, একজন শিক্ষার্থী যখন এইসব প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায় তখনই লেখালেখি ও গবেষণার দক্ষতা বেশ শাণিত হয়ে যায়।
অভিজ্ঞতা:
ছাত্রজীবনে গবেষণা পত্র প্রকাশের একটি বড় উপকারিতা হলো অভিজ্ঞতা অর্জন। কোনো শিক্ষার্থী যদি তার ক্যারিয়ার পথ হিসেবে গবেষণা কে বেছে নিতে চায় কিংবা এমন কেউ যে গবেষণা কে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে চায় না, উভয়েরই প্রাথমিক গবেষণার দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। কারণ, আজকের যুগে যে কোনো চাকরি বা ব্যবসার প্রবেশ করতে গেলে নূন্যতম রিসার্চ স্কিল থাকাটা পূর্বশর্ত।
তাই, কোনো শিক্ষার্থী যে ক্যারিয়ারই বেছে নিক না কেন, তার যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব থাকাকালে গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়, তাহলে সেটা তার সিভিতে হয়ে উঠে এক অন্যতম সংযোজন। আর এই অভিজ্ঞতাই করে দেয় বিভিন্ন চাকরি, স্কলারশিপ, কিংবা অন্যান্য এক্ট্রাকারিকুলার এক্টিভিটিতে ঢুকার সুগম পথ।
নেটওয়ার্কিং:
গবেষণা পত্র প্রকাশ শিক্ষার্থীদের করে দেয় নিত্যনতুন নেটওয়ার্কিং করার সুযোগ। একটি গবেষণা পত্র প্রকাশের জন্য শিক্ষার্থীকে তার একাধিক সুপারভাইজার, কো-অথর (যারা কিনা তার সহপাঠী হতেও পারে) এবং পিয়ার রিভিউয়ারদের নির্বাচন করতে হয়। সেজন্য শিক্ষার্থীদের নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের সাথে যোগাযোগ করতে হয় এবং তাদের কে গবেষনার কাজের জন্য সফলভাবে এপ্রোচ করতে হয়।
আর যোগাযোগের ফলে শিক্ষার্থীদের তৈরী হয় কানেকশন। এই ফলে শিক্ষার্থীরা শিখতে পারে ইফেক্টিভ কমিউনিকেশন স্কিল এবং যাদের সাথে কানেকশন তৈরি হয় প্রয়োজনের সময় ছাত্ররা তাদের থেকে পেতে পারে রিকমেন্ডেনশন যা কিনা তাদের জন্য একটি বড় প্লাস পয়েন্ট।
নেতৃত্বের গুণাবলী:
গবেষণা পত্র লেখার জন্য একটি টিম দরকার পড়ে আর সেই টিমকে দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রয়োজন একজন দক্ষ নেতা। ছাত্র জীবনে গবেষণা টিমেও একজন নেতা দরকার যাতে করে টিম কে লিড করে গবেষণার কাজ সফল ও সুষ্ঠু ভাবে সম্পাদনা করা যায় এবং শুধু নেতা নয়, টিমের অন্যান্য সদস্যদের মাঝেও নেতৃত্বের গুণাবলি প্রয়োজন যাতে করে টিমের সবাই নেতৃত্বকে মেনে চলার গুরুত্ব কে অনুধাবন করতে পারে। তাই, ছাত্রজীবনে গবেষণার অভিজ্ঞতা যাদের থাকে, তাদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলী বিকশিত হয় যা কিনা ক্যারিয়ারে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অন্যতম পাথেয়।
আরও পড়তে ক্লিক করুন নিচের লিঙ্কে-
নুজহাত মারিয়াম
কন্টেন্ট রাইটিং ইন্টার্ন
ইয়ুথ স্কুল অব সোশ্যাল অন্ট্রেপ্রেনরস